রাজনীতি

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া কি

বন্ধুরা আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকে আমরা জানব ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা কিভাবে নির্বাচন করা হয়। কিভাবেই বা এই ধর্মীয় নেতা বিশ্বের মধ্যে তার প্রভাব কে টিকিয়ে রাখে।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা কে

ইরান বিশ্বের মধ্যে একমাত্র দেশ যাদের উপর আমেরিকা অনেক বেশি নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও তাদের নিজ প্রতিভায় বিশ্বের মধ্যে নিত্যনতুন সামরিক জান আবিষ্কার করে চলছেন। এমন কি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধেও তারা রাশিয়াকে সাহেদ ড্রোন দিয়ে সহায়তা করছে। ইরান তাদের একটা মূলনীতিকে বিশ্বাস করে সেটা হলো “”ধর্ম সবার উপরে”” এবং অন্যের উপর অন্যায় ও নির্যাতন তারা কখনো বরদাস্ত করে না। তাই তাদের সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা প্রত্যক্ষ করে থাকে। আর এই ধর্মীয় নেতাকে নিয়েই আজকে আমরা আলোচনা করব এই পোস্টটিতে। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নির্বাচন করা হয়।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল-খামিনি। বর্তমানে তার বয়স ৮৪ বছর। ২০১৬ সালে পঞ্চম মেয়াদে দায়িত্ব নেন তিনি। ২০২৪ সাল পর্যন্ত সর্বোচ্চ নেতার পদে থাকবেন। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত অন্য কেউ সে পদে আসীন হতে পারবেন না। তিনি যদি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবা তার অনুপস্থিতিতে কে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার দায়িত্ব নেবেন?

প্রথমে তিন সদস্যের একটি পরিষদ তার কাজ করবে।যেখানে আছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট, বিচার বিভাগের প্রধান ও গার্ডিয়ান কাউন্সিলের একজন ধর্মতান্ত্রিক। ৮৮ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের ইসলামী বেক্তা যতদিন তাদের উত্তরসূরী নির্বাচন না করছেন ততদিন এই পরিশোধ দায়িত্ব পালন করে যাবে। বিশেষজ্ঞ পরিষদ ৮ বছরের জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তবে তার আগে গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমোদন পেতে হয় তাদের।

সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার যোগ্যতা কি

ইরানের সংবিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ নেতা হতে হবে একজন আয়াতুল্লাহ কে। একজন শীর্ষ ধর্মীয় নেতাকে আয়াতুল্লাহ বলা হয়। তবে আলী খামিনিকে যখন সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করা হয়েছিল তিনি তখন আয়াতুল্লাহ ছিলেন না। তিনি যাতে এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন তাই আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছিল।

 নেতা নির্বাচনে কোন বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়

১/ যেসব দেশের সাথে ইরানের বিরোধ রয়েছে সেসব দেশের প্রতি সম্ভাব্য নেতার দৃষ্টিভঙ্গি।

২/  ইসলামিক বিপ্লবের ফলে ইরানের রাষ্ট্র পরিচালনার যেসব নীতি গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলো বোহাল রাখতে সম্ভাব্য নেতা কতটুকু আগ্রহী। এই দুটি বিষয়কেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া।

কে হতে পারেন পরবর্তী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা

আলোচনায় রয়েছে তিনটা নাম ইবরাহীম রইছি, গোলাম হোসেন এহেজেমি ও সাদেক আমলি নারীজামী।

 ১/ ইব্রাহিম রইছি ইরানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট। ২০২১ সাল থেকে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বর্তমান নেতা খামিনির ছাত্র। তিনি যে ইরানের পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হতে আগ্রহী এমন আলোচনা বা গুজব তিনি কখনো নাকোচ করেননি। তার বহু কার্যকলাপ এবং পদক্ষেপ থেকে মনে হয় তাকে এই পদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে।

২/ ইরানের রাজনীতিতে প্রভাবশালী গোলাম হোসেন এহেজেমি ইরানের বিচার বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থার দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন তিনি। তার বর্তমান বয়স ৬৭ বছর। সাবেক ইরানি প্রেসিডেন্ট আহাম্মদীদের সময় তিনি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২১ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামিনি তাকে ইরানের প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ দেন।

৩/ ইরানের রাজনীতিতে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব সাদেক আমলি নারীজামী। তার বাবা ছিলেন ইরানের অন্যতম শীর্ষ ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ। আর তার ভাই ইরানের আইনসভায় স্পিকারে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বহু বছর ইরানের বিচার বিভাগে কর্মরত থাকায় বেশ অভিজ্ঞতার সঞ্চয় করেছেন। অনেকের দৃষ্টিতে তিনিও খামিনির উত্তরসূরী দৌড়ে রয়েছেন।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।