এবারের শীতের প্রভাব কেমন হবে! এবারের শীত শুরু হওয়ার পর পরেই আবহাওয়াবিদরা শীতের তীব্রতা নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছে। যেখানে বলা হয়েছে এবারের শীত অন্যান্য বছর গুলোর তুলনায় অনেক বেশি হতে পারে।
এবারের শীতের প্রভাব কেমন হবে- যা ইতোমধ্যেই আমরা লক্ষ্য করতে পারছি। এর একটি মূল কারণ হচ্ছে এল নিনো। এল নিনো সাধারণত ৫ থেকে ৭ বছর পর পর হয়ে থাকে।
যেখানে গরমের সময় অনেক বেশি গরম এবং শীতের সময় অনেক বেশি শীতের প্রখরতা লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ মল্লিক জানিয়েছেন এবারের শীতের প্রভাব উত্তরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে। যা ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে শুরু হবে। বাংলাদেশে শীতকাল মূলত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস প্রজন্ত হয়ে থাকে।
আর এই সময়টিতে সবচেয়ে বেশি শীতের প্রখরতা দেখা যায়। যা খেটে খাওয়া মানুষদেরকে দুর্ভোগের মুখে পতিত করে। আজকে আমরা এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো বাংলাদেশে এবারের শীতের প্রভাব কেমন হবে, শৈত্যপ্রবাহ কাকে বলে, শীতের সময় করণীয় সহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে। যা আপনাদের জানা থাকলে আগাম পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনেক সহায়তা করতে পারে। তাহলে চলুন শুরু করি,
বাংলাদেশের শীতের প্রভাব কেমন হবে
বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। যেখানে শীতকাল একটি অন্যতম ঋতু। এই ঋতুতে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়ে। এমনকি কোনো কোনো সময়ে মানুষজন প্রচন্ড শীতের কারণে ঘর থেকে বের হতে পারে না। ফলে জনজীবনে নেমে আসে দুর্যোগ। বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে এবারের শীতে বাংলাদেশে কিরকম প্রভাব পড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছে এবারে সারা বাংলাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেহেতু ২৪ ডিগ্রি সেলসের তাপমাত্রা হচ্ছে স্বাভাবিক তাপমাত্রা। তাই বুঝাই যাচ্ছে এবারের শীত এক ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে।
বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে এর প্রভাব থাকবে অনেক বেশি। কেননা উত্তরাঞ্চল হিমালয় সংলগ্ন হওয়ার কারণে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এই অঞ্চলে শীত আগাম আসবে। পাশাপাশি জনজীবনে শীতের প্রভাব দেখা যাবে।
শৈত্যপ্রবাহ কি
আপনার প্রায়ই শুনে থাকবেন শীতকালীন আবহাওয়া বার্তা গুলোতে বলা হয়ে থাকে শৈত্যপ্রবাহের কথা। মূলত শৈত্যপ্রবাহ শীতকাল চলাকালীন সময়ে দুই থেকে তিনবার বা চারবার হয়ে থাকে।
শৈত্যপ্রবাহ মূলত যখন তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অবস্থান করে এবং এই তাপমাত্রা কয়েক দিন যাবত বিরাজমান থাকে তখন তাকে শৈত্যপ্রবাহ বলে। এই শৈত্যপ্রবাহের চার প্রকার ধরন রয়েছে। নিচে প্রকারভেদ গুলো দেওয়া হলো।এবারের শীতের প্রভাব কেমন হবে
মৃদু –> ৮ – ১০ ডিগ্রি
মাঝারি –> ৬-৮ ডিগ্রি
তীব্র –> ৪-৬ ডিগ্রি
অতি তীব্র –> ৪ ডিগ্রির নিচে
এবারের শীতের প্রভাব কেমন হবে- এখন বেশিরভাগ সময়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায় এবং অতীত তীব্র শৈত্যপ্রবাহ খুব কম চোখে পড়ে বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিদ মল্লিক।
শীতের সময় করণীয়
শীতের সময় আমাদের যেসব করণীয় রয়েছে তা হলো,
১/ শীতে বয়স্ক এবং শিশুদের অনেক বেশি কষ্ট হয়ে থাকে। কেননা এই সময়টাতে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং প্রকৃতিতে ধুলোবালি বেড়ে যায়। এর মূল কারণ এই সময়টায় কোন বৃষ্টিপাত না হয়া। তাই শীতের সময় বয়স্ক এবং শিশুদের এক্সট্রা যত্ন নিতে হবে।
২/ আমরা অনেকেই রয়েছি জীবিকার থাকিতে সারাদিন বাইরে থাকতে হয়। শীতের সময়ে যারা সারাদিন বাইরে অবস্থান করে তারা যেন অবশ্যই অনেক মোটা পোশাক পরিধান করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৩/ শীতের সময় একটি কমন সমস্যা দেখা যায় আর তা হল গলা ব্যথা। তাই গলা ব্যথা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রতিদিন গরম পানি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। আর যদি সম্ভব হয় সপ্তাহে অন্তত তিন দিন গোসল দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪/ শীতের সময় খেজুরের রস সকলের কাছে অনেক পছন্দের একটি পানীয়। তাই খেজুরের রস খাওয়ার সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে যেন খেজুরের রসে পাখি বা বাদুরের মুখের লালা না পড়ে। অন্যথায় বাট ফ্লুর মত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে।
৬/ আমরা যারা বাইকাররা রয়েছি তারা শীতকালীন সময়ে বাইরে বের না হওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। কেননা এই সময়ে প্রকৃতিতে কুয়াশা থাকার কারণে চারপাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।