এশিয়া কাপের সেরা রেকর্ড! এশিয়া কাপ ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু হয়ে এখন প্রযন্ত ১৫ টি আসোর অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই টুর্নামেন্টে মোট ১০টি দল অংশগ্রহণ করেছে।
যেখানে সবচেয়ে বেশি বার কাপ জিতেছে ভারত এরপরে রয়েছে শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তান রয়েছে তৃতীয় স্থানে। আজকে আমরা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো এশিয়া কাপের সকল রেকর্ড সম্পর্কে। তাহলে বন্ধুরা চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই এশিয়া কাপের আদ্যোপান্ত।
এশিয়া কাপের সফল দল
এশিয়া কাপে এখন প্রযন্ত সফল দল ভারত। তারা সবচেয়ে বেশি ৭ বার এশিয়া কাপ শিরোপা জিতেছে। আর এখন প্রযন্ত সেই কৃতিত্ব ধরে রেখেছে। যদিও ৩৯ বছরের ইতিহাসে ভারত দুইবার এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ করেনি এরপরও তারা শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ধরে রেখেছে। অপরদিকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। কেননা শ্রীলংকা এখন প্রযন্ত এশিয়া কাপের সকল আসরে অংশগ্রহণ করেছে। তারা এখন প্রযন্ত জিতেছে মোট ৬টি ট্রফি। সর্বশেষ ২০২২ সালে পাকিস্তানকে হারিয়ে ষষ্ঠ বারের মত এশিয়া কাপের ট্রফি ঘরে নেয় শ্রীলঙ্কা। এরপরের স্থানটি রয়েছে পাকিস্তানের তারা এখন প্রযন্ত দুইবার এশিয়া কাপ জিতেছে।
আর সবচেয়ে বড় দুঃখের বিষয় বাংলাদেশ এখন প্রযন্ত পাঁচবার এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হলেও একবারও নিতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু সাফল্য রয়েছে দুইবার তারা এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছিল। আর সর্বশেষ আফগানিস্থান এশিয়া কাপে বরাবরই তাদের সাফল্য দেখিয়ে আসছে। আর এবারই প্রথম এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ করছে নেপাল। যা নেপালের ক্রিকেট ইতিহাসে এক বিরল কৃতিত্ব।
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি দলিয় রান
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি দলিও রান পাকিস্তানের। ২০১০ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে পাকিস্তান তুলে নিয়েছিল ৩৮৫ রান। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে এটাই পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সংগ্রহ সাথে সাথে এশিয়া কাপের সবচেয়ে বেশি দলিও রানের তকমা পেয়ে যায়। রানের এই পাহার দেখে বাংলাদেশের ব্যাটারা জেতার কোনো চেষ্টাই করেনি। ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৫ উইকেটে ২৪৬ রান ফলে পাকিস্তান ম্যাচটি জিতে ১৩৯ রানের বিশাল ব্যবধানে।
কিন্তু টি-টোয়েন্টি ফরমেট এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটি রয়েছে ওমানের কাছে। হংকং সাথে এশিয়া কাপের কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ১৮০ রান করে বসে দলটি ।
এশিয়া কাপে সবচেয়ে কম দলিয় রান
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড যেমন ধরে রেখেছে পাকিস্তান ওমান তেমনি সবচেয়ে কম রানের রেকর্ড ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। ২০০০ সালে অনুষ্ঠিত একটি ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ মাত্র ৮৭ রানে গুটিয়ে যায়। অবশ্য ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান কে নির্মমভাবে হারিয়েছিল বাংলাদেশ ২০০০ সালে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে সবচেয়ে কম রানে অল আউট করে তারই প্রতিশোধ নেয় পাকিস্তান।
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত রান
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত রান রয়েছে শ্রীলংকার প্লেয়ার সানা জয়সুরিয়ার। এশিয়া কাপে ২৫ টি ম্যাচ খেলে ৫৩ দশমিক ০৪ গড়ে করেছেন ১২২০ রান। সেইসাথে এশিয়া কাপের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি রয়েছে এই কিংবদন্তী প্লেয়ারের।
মোট 6 টি সেঞ্চুরি সহ হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তিনটি। এশিয়া কাপের সর্বোচ্চ রানের লিস্টে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আরেক শ্রীলঙ্কান সুপারস্টার সাঙ্গাকারা। ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল প্রযন্ত মোট ২৪টি ম্যাচে ব্যাট হাতে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে এ বেটার। সেইসাথে তুলে নিয়েছেন এশিয়া কাপের ব্যক্তিগত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৭৫ রান। এশিয়া কাপে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরির দিক দিয়ে কুমার সাঙ্গাকারা রয়েছে এক নম্বরে সর্বমোট তিনি ৮টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন।
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি ডাক খাওয়া প্লেয়ার
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি ৩ বার ডাক খেয়েছেন পাকিস্তানের প্লেয়ার সালমান বাক। তিনি এশিয়া কাপে মোট ৭টি ম্যাচ খেলেন এর মধ্যে ২টি হাফ সেঞ্চুরি পেলেও বাকি তিনটি ম্যাচে খেয়েছেন ডাক। অবশ্য বাংলাদেশের পেসার রুবেল হোসাইন মোট তিনবার এশিয়া কাপে ডাক খেয়েছে।২০০৮ থেকে ২০১০ এই দুইটি আসরে পাকিস্তানের তখনকার কিংবদন্তি সালমান বাক খেলার সুযোগ পেয়েছিল। এরপরে ম্যাচ ফিক্সিং এ তার নাম জড়িয়ে পড়লে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হন। পরে আর জাতীয় টিমে খেলার সুজোগ হয়নি।
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাকানো রেকর্ড শহীদ আফ্রীদির ছাড়া আর কার হতে পারে। ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাকানো এই খেলোয়াড়ের এশিয়া কাপেও সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড রয়েছে। বোম বোম খেত এই খেলয়ার এশিয়া কাপে মোট ২৬ টি ছক্কা হাকিয়েছে। এর পরের অবস্তানে রয়েছে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তী সানা জয়সুরিয়া। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি ছক্কার মালিক হংকং এর খেলোয়াড় বাবর হায়াত। ৩ ম্যাচ খেলে ৮ টি ছক্কা হাকিয়েছেন এই খেলোয়াড়।
এশিয়া কাপে এক আসরে সবচেয়ে বেশি রান
এশিয়া কাপে এক আসরে সবচেয়ে বেশি রান রয়েছে শ্রীলংকা লিজেন্ড সানা জয়সুরিয়ার। ২০০৮ সালে ঐ আসরে মাত্র পাঁচটি ম্যাচ খেলে ৩৭৮ রান সংগ্রহ করেন এই ব্যাটার । ৫ ম্যাচের মধ্যে ১টি সেঞ্চুরি ও ২ টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তার। একই আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭২ রান সংগ্রাহক ছিল ভারতের লিজেন্ড সুরেশ রায়না ।
টি-টোয়েন্টি ফরমেটে এক আসরে সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ড টি রয়েছে রয়েছে হংকং এর খেলয়ার বাবর হায়াতের। তিন ম্যাচ খেলে ১৯৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। যেখানে ছিল ১ সেন্সরি ও ২ হাফ সেন্সুরি।
এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান
২০১২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজের ব্যক্তিগত রানের সর্বোচ্চ মাইলফলক স্পর্শ করেন ভারতের কিংবদন্তি ভিরাট কোহলি । পাকিস্তানের দেওয়া ৩৩০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বিরাট কোহলি অবিশ্বাস্যভাবে ১৮৩ রান করে বসে। যেটা তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রান। আর এর সুবাদে হাতে ২ উইকেট থাকতেই জিতে জায় ভারত।
সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারী
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারী তালিকায় উঠে আসবে আরেক শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়ের নাম তিনি হচ্ছেন মুরালিধরণ। মোট ২৪টি ম্যাচ খেলে ৩০ টি উইকেট শিকার করেছেন এই লঙ্কান বোলার।
এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারী তালিকায় মুরালিধরণের নাম থাকলেও এশিয়া কাপে কিন্তু তিনি ডেঞ্জার প্লেয়ার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করতে পারেনি। ডেঞ্জার প্লেয়ার হিসেবে ধরা হয় আরেক কিংবদন্তি শ্রীলংকার লিজেন্ড নাসিদ মালিঙ্গাকে। মালিঙ্গা ২৪ ম্যাচ খেলে স্বীকার করেছিলেন ২৯ টি উইকেট । এর মধ্যে ২ বার নিয়েছে ৫ টি করে উইকেট। অপরদিকে তারই সতীর্থ অজন্তা মেন্ডিস মাত্র ৮ ম্যাচে নিয়েছিলেন ২৪টি উইকেট দ্বিতীয় ডেঞ্জার ডলার হিসেবে উঠে তার নাম।
বন্ধরা এশিয়া কাপের সকল রেকর্ড নিয়ে আমাদের এই পোস্টটি আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। এশিয়া কাপ নিয়ে আপনাদের জানা অজানা সকল বিষয় নিয়ে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন। এরকম নিত্যনতুন আপডেট পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।