ওয়ানডে বিশ্বকাপে কোন কোন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে! সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রযুক্তিগত ব্যবহারে আমূল পরিবর্তন এসেছে ক্রিকেটেও। এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপের মঞ্চে সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যায়িত হবে নতুন সব প্রযুক্তির।
অনেকের মতে আগের প্রযুক্তি গুলোর সব দুর্বলতা দূর করবে এবারের নবপ্রযুক্তি। সেগুলো ক্রিকেটকে আরো গতিশীল করার পাশাপাশি ঘটাবে নতুন প্রযুক্তির বিপ্লব। এরকমই কিছু প্রযুক্তি সম্পর্কে আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাবো। তাহলে চলুন জেনে নেই এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যবহৃত চোখ ধাঁধানো সব প্রযুক্তি সম্পর্কে।
১/ ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম
নিঃসন্দেহে বলাই যায় ক্রিকেটে বিপ্লব ঘটিয়েছে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম।যাকে সংক্ষেপে ডি আর এস নামে ডাকা হয়। ২০০৮ সালে ক্রিকেট বিশ্বে এই প্রযুক্তি যুক্ত হলেও ওয়ানডে বিশ্বকাপের মাধ্যমে এই প্রযুক্তির প্রথম ব্যবহার শুরু হয় ২০১১ সালে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে আম্পায়াররা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে নিতে পারেন। এবারের বিশ্বকাপে এই প্রযুক্তিকে আরো নতুনভাবে সংযোজিত করা হবে।
২/ স্মার্ট বল টেকনোলজি
এবারের বিশ্বকাপের বলে ব্যবহার করা হবে স্মার্ট বল টেকনোলজি। যে প্রযুক্তিটি ক্রিকেটকে আরো অনেক উপরে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে। বলে যুক্ত করা হবে সেন্সর যার ফলে বলের গতি, সুইম এবং স্প্রিং সহ সব সময় রিয়েল টাইম ডাটা সরবরাহ করবে। ফলে দলগুলো তাদের চূড়ান্ত কার্যফল নির্ধারণ করতে পারবে।
৩/ অন গ্রাউন্ড অ্যাকশন
আকাশ থেকে সম্পূর্ণ স্টুডিয়াম দেখার মজাই অন্যরকম। এবার স্পাইডার ক্যামে, পাখির চোখের দৃষ্টি বা বার্ড আই ভিউতে দেখা যাবে পুরো খেলার মাঠ। এটি মাঠের সম্প্রচারের গুণগত মান বৃদ্ধি করবে। পাশাপাশি দর্শকদের নিয়ে আসবে on ground অ্যাকশনে। ফলে এসটুডিয়ামে বসে থাকা দর্শকদের সঙ্গে বাইরের অ্যাকশন দেখার ব্যবধান অনেকটা দূর হবে।
৪/ হকাই প্রযুক্তি
লেক বিফোর আউট বা এল ভি ডব্লিউর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন এনেছে হকাই প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে বলের গতি নির্ণয়ে একাধিক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি খেলার মধ্যে ন্যায্যতা বাড়ায় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সকল ত্রুটিগুলো দূর করে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে নির্ভুলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের বিশ্বকাপে এই প্রযুক্তির উন্নত সংস্করণ ব্যবহার করা হবে।
৫/ এলইডি স্টাম্প বেল
ক্রিকেটকে আলোকিত করেছে আলোক উজ্জ্বল বা এলইডি স্টাম্প বেল। এর ফলে রান আউট বা স্টাম্পিং এর সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আম্পায়ারদের কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। পাশাপাশি ক্রিকেটকে আরো নির্ভুলভাবে উপস্থাপন করতে এই প্রযুক্তি সহায়তা করছে।
৬/ উচ্চগতির ক্যামেরা
উচ্চগতির ক্যামেরার সাহায্যে ক্রিকেটারদের কৌশল এবং বলের গতির বিশদ ব্যাখ্যা পাওয়া যায় এবং খেলার স্লো মোশন রিপ্লে এবং খেলার বিশ্লেষণ সুক্ষভাবে বুঝতে এই ক্যামেরাগুলোর ব্যবহার ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রযুক্তির বৈপ্লবিক প্রভাব হিসেবে কাজ করছে।
৭/ মেশিন লার্নিং
আধুনিক ক্রিকেটে বিগ ডাটা এনালাইসিস এবং মেশিন লার্নিং এর আবির্ভাব ঘটেছে। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের দলগুলো ক্রিকেটারের পারফরমেন্স প্রতিপক্ষের কৌশল সহ আরও অনেক কিছু বিস্তারিত বিশ্লেষণের জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। এই বিশ্লেষণ মূলক পদ্ধতি ক্রিকেটের পর্যাপ্ত গভীরতাকে প্রশস্ত করেছে। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে এই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বে।
৮/ ডিজিটাল প্লাটফর্ম
দর্শকদের ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত করার নতুন মাধ্যম হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ডিজিটাল প্লাটফর্ম। এই প্রযুক্তি গুলোর মাধ্যমে খেলার রিয়েল টাইম আপডেট, পর্দার পিছনের ঘটনা ও ক্রিকেটার আর ভক্তদের মধ্যে পারস্পারিক দূরত্ব মেটানো সম্ভব।
এটা স্পষ্ট যে প্রযুক্তি ক্রিকেটকে নতুন আকার দিয়েছে। যা শুধু বর্তমান ক্রিকেটকে গতিশীল করেনি বরং আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ বিজয়ীদের অবিস্মরণীয় মুহূর্তগুলোকে আমাদের সামনে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরছে। পাশাপাশি সকল দলের বিস্তারিত তথ্য দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করছে। ফলে দর্শকরা তাদের পছন্দের দল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাচ্ছে।
বন্ধুরা এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপে উপরোক্ত প্রযুক্তি গুলো ব্যবহারের কতটুকু যুক্তিযুক্ত বলে আপনার কাছে মনে হয় তা আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন এবং ওয়ানডে বিশ্বকাপের সকল আপডেটগুলো পেতে আমাদের সাইটটি ফলো করে সঙ্গেই থাকুন।