ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে ইনকাম! বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকে আমরা আলোচনা করব বিশ্বের সর্ববৃহৎ আর্থিক ভবিষ্যৎ লেনদেন ক্রিপ্টো কারেন্সি নিয়ে।
এই ক্রিপ্টো কারেন্সি নিয়ে আপনি যদি বিগেনার হয়ে থাকেন অথবা আপনার যদি কোন কৌতুহল থাকে তাহলে আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন এর আদ্যপান্ত। তাহলে বন্ধুরা চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করি আজকের পোস্টটি। পোস্টটি স্কিপ না করে পুরোটা পড়ার অনুরোধ রইল।
বন্ধুরা আজকের পোস্টে যে বিষয়গুলো থাকবে তা হল
১/ ক্রিপ্টোকারেন্সি কি?
২/ বর্তমান বিশ্বে কতগুলো ক্রিপ্টো কারেন্সি রয়েছে।
৩/ ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে কিভাবে লেনদেন করা যায়।
৪/ ক্রিপ্টো কারেন্সির কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কন্ট্রোল করতে পারে কিনা।
৫/ জনপ্রিয় ক্রিপ্টো কারেন্সির তালিকা।
৬/ ক্রিপ্টো কারেন্সির ভবিষ্যৎ কি।
৭/ কিভাবে ক্রিপ্টো কারেন্সি দিয়ে ইনকাম করা যায়।
তাহলে বন্ধুরা চলুন জেনে নেই ক্রিপ্টো কারেন্সির বিস্তারিত।
১/ ক্রিপ্টো কারেন্সি কি
ক্রিপ্টো কারেন্সি হলো একটি ভার্চুয়াল কারেন্সি। যেটাকে ধরা যায় না ছোঁয়া যায় না শুধু অনলাইনে ট্রানজেকশন হয়ে থাকে। তাই ভার্চুয়াল ক্রিপ্টোকারেন্সি মূলত ব্লক টেকনোলজির মাধ্যমে হয়ে থাকে। এই ক্রিপ্টো কারেন্সি চালু হয়েছে ২০০৯ সালে। ২০০৯ সালে এটি ইন্ট্রোডিউস হওয়ার পর মার্কেটে বিটকয়েনের মাধ্যমে এসেছে ২০১৩ সালে। এই ক্রিপ্টো কারেন্সি ২০০৯ সালে আবিষ্কার করেছে চাইনিজ বংশধর সাতাশি নাকামুতো। তিনি হলেন মূলত একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তার হাত ধরেই এই ক্রিপ্টো কারেন্সির জন্মের সূচনা হয়।
২/ বর্তমান বিশ্বে কতগুলো ক্রিপ্টো কারেন্সি রয়েছে
বর্তমানে মার্কেটে ৯ হাজারেরও অধিক ক্রিপ্টো কারেন্সি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ক্রিপ্টো কারেন্সি হলো বিটকয়েন। আমরা অনেকেই ইতোমধ্যে শুনেছি বিটকয়েনের নাম।
৩/ ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে কিভাবে লেনদেন করা যায়
ক্রিপ্টো কারেন্সি লেনদেন করার ক্ষেত্রে ব্লগ চেনের মাধ্যমে সফটওয়্যার এবং ওয়ালেটের address এর মাধ্যমে নোট টু নোট এবং ব্লক টু ব্লক এবং লেজার সিস্টেমের মাধ্যমে লেনদেন করা যায়।
অর্থাৎ ফ্রি টু ফ্রি লেনদেন করতে পারি। ফ্রি টু ফ্রি মানে হচ্ছে পার্সন টু পার্সন। যেখানে কোন থার্ড পার্টি জানবে না, কোন ব্যাংক ডকুমেন্ট থাকবে না এবং কোন গভর্নমেন্ট ইনফর্মেশন জানবে না। শুধু আমি এবং আপনি জানব আমরা কে কাকে কত টাকা লেনদেন করছি। একটি ওয়ালেটের মাধ্যমে আমরা ট্রানজেকশন করতে পারব।
এটি ডিজিটাল এডড্রেস ওয়ালেটে আমাদের রাখতে হবে এবং এই এড্রেস টু এড্রেস ট্রানজেকশন করতে পারবেন। যেমন বিকাশ নাম্বার টু নাম্বার ট্রানজেকশন করা যায় কিন্তু বিকাশ হচ্ছে একটি সেন্ট্রাল আইস মানি যেখানে থার্ড পার্টি বা বিকাশ কোম্পানি জানবে আমি কাকে কত টাকা লেনদেন করছি। কিন্তু ক্রিপ্টো কারেন্সি অথবা বিটকয়েন এখানে ডিসেন্ট্রালাইজ। এখানে ব্লক টু ব্লক ট্রানজেকশন হওয়ার কারণে কোন থার্ড পার্টি জানবে না আমি কিংবা আপনি কে কত টাকা ট্রানজেকশন করছি।
৪/ ক্রিপ্টো কারেন্সি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কন্ট্রোল করতে পারে কিনা
ক্রিপ্টো কারেন্সি কোন ব্যক্তি কন্ট্রোল করতে পারে না। কারণ এটি ১০০% ডি সেন্ট্রালইস সিস্টেম। মানে আপনি এবং আমি ছাড়া আমাদের লেনদেন কেউ জানতে পারবে না। যেমন উদাহরণ টাকা, রুপি, ডলার এবং ইউরো গভর্মেন্ট বা সরকার কন্ট্রোল করতে পারে। কিন্তু ক্রিপ্টো কারেন্সি কোন দেশ অথবা কোন ব্যাংক অথবা কোন ব্যক্তি কন্ট্রোল করতে পারে না।
৫/ জনপ্রিয় ক্রিপ্টো কারেন্সি তালিকা
বর্তমান মার্কেটে ৯ হাজারেরও বেশি ক্রিপ্টো কারেন্সি চালু রয়েছে। এগুলোর মধ্যে দুই ধরনের ক্রিপ্টো কারেন্সি দেখা যায়।
- স্টেবল কয়েন
- আনস্টেবল কয়েন
১/ স্টেবল কয়েন
স্টেবল কয়েন্টগুলোর মধ্যে রেড উঠানামা করে না অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট দাম বা রেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। যার ভ্যালু সবসময় এক ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। স্টেবল কয়েন গুলোর মধ্যে রয়েছে,
- ইউ এস ডি সি
- ইউ এস ডি টি
- বি ও এস ডি
- ডাই
- ফ্যাক্স
২/আনস্টেবল কয়েন
আনস্টেবল কয়েন গুলোর মধ্যে রেড উঠানামা করে। আনস্টেবল কয়েন গুলো হল,
- বিটকয়েন
- ইথেরিয়াম
- লাইট কয়েন
- বি এন্ড বি
- কার ডানো কয়েন
- একসেপ্টট্রা
- লাইট কয়েন
স্টেবল এবং আনস্টেবল কয়েনের বিস্তারিত বলতে গেলে। স্টেবল কয়েন হচ্ছে যে কয়েনের ভ্যালু সব সময় এক ডলার থাকে এবং আনইনস্টেবল কয়েন হচ্ছে যে কয়েনের ভ্যালু বাড়ে এবং কমে।
৬/ ক্রিপ্টো কারেন্সির ভবিষ্যৎ কি
দিন বাই দিন সকল দেশে এবং সকল কোম্পানি ক্রিপ্টো কারেন্সি গ্রহণ করে যাচ্ছে। ইন্ডিয়া, পাকিস্তান এবং আশেপাশে দেশগুলোতে ক্রিপ্টো কারেন্সি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পাশাপাশি সরকারও সমস্ত কোম্পানিগুলোকে ক্রিপ্টো কারেন্সি ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন ও জনপ্রিয় করার জন্য বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জনসাধারণকে সজাগ করছে। এমনকি বিশ্বের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ দেশ ক্রিপ্টো কারেন্সি কে বৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ক্রিপ্টো কারেন্সিকে জনপ্রিয় করার জন্য ইউরোপের ধনী দেশ জর্জিয়া তাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্লাস ৬ থেকে ক্রিপ্টো কারেন্সি বিষয়ে একটি সাবজেক্ট ইনভল্ভ করেছে। এ থেকে আমরা বলতে পারি ইউরোপের যে কোন দেশ কোন একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করলে সেটা ১০০ বা ৫০ বছরে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এই চিন্তা ভাবনাকে মাথায় রেখেই পরিকল্পনা গ্রহণ করে। যেহেতু তারা বুঝতে পেরেছে আগামী ৫০ বা ১০০ বছরে ক্রিপ্টো কারেন্সির মার্কেট ভ্যালু কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। সে কারণেই তারা তাদের শিক্ষা কারিকুলামে ক্রিপ্টো কারেন্সি কে যুক্ত করেছে।
এই উদাহরণের মাধ্যমেই আমরা বুঝতে পারি ক্রিপ্টো কারেন্সির ভবিষ্যৎ কি হতে পারে।
৭/ কিভাবে ক্রিপ্টো কারেন্সি দিয়ে ইনকাম করা যায়
ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে কিভাবে ইনকাম করা যায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এতক্ষণ যতগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো এ বিষয়টির মাধ্যমে তার সুফল পাওয়া যাবে কিনা সে সম্পর্কে জানা সম্ভব।
ক্রিপ্টো কারেন্সি দিয়ে ইনকাম করার বেশ কতগুলো মাধ্যম রয়েছে এর মধ্যে দুটি মাধ্যম হল
চেডিং: যেটির মাধ্যমে আপনি ইনভেস্ট করে আয় করতে পারবেন।
ফ্রিতে ইনকাম: আপনি ফ্রিতেও কিছু ক্রিপ্টো কারেন্সি ইনকাম করতে পারবেন। যেমন বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট বাউন্টি, এয়ার ডপ। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ। অর্থাৎ ফ্রি ইনকামের মাধ্যমে আপনি নিজেকে এস্টাবলিশ করতে পারবেন না এর মাধ্যমে আপনি যদি স্টুডেন্ট হন তাহলে নিজের হাত খরচ ও মোবাইল বিল সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক প্রয়োজন মেটাতে পারেন।
বন্ধুরা ক্রিপ্টো কারেন্সি নিয়ে আমাদের এই পোস্টটি কেমন লেগেছে তা কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন। ক্রিপ্টো কারেন্সির বিনিময় মুদ্রা বিটকয়েন ও ইথিরিয়াম সহ অন্যান্য সকল কয়েন্টের বিস্তারিত তথ্য ও ইনভেস্টমেন্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের পরবর্তী পোস্টটি ফলো করুন ধন্যবাদ।