হ্যালো বন্ধুরা আপনারা কি জানেন কিভাবে গণতন্ত্র আবিষ্কার হয়েছে? আর বাংলাদেশকে কেন গণতন্ত্রিক রাষ্ট্র বলা হয় ?
আসলে সর্বপ্রথম গণতন্ত্র কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ? আবার কোন দেশে গণতন্ত্র আবিষ্কার হয়েছিল ?এইসব প্রশ্নের উত্তর যদি আপনার না জানা থাকে তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য। তাই পোস্টটি স্কিপ না করে পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। তাহলেই জানতে পারবেন গণতন্ত্র কিভাবে আবিষ্কার হলো কোথায় এবং কিভাবে।
গণতন্ত্র আবিষ্কার
গণতন্ত্র আবিষ্কার হয় গ্রিক সভ্যতার থেকে। তাই গ্রিক সভ্যতা থেকে আমরা শুরু করি। আসলে গ্রিক দেশটি বর্তমানের আইডিয়াটি সাগর ভুমধ্য সাগর এবং মিউজিয়াম সাগর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। আসলেই দেশটিতে প্রাচীন গ্রিক সভ্যতা ছিল, সেখানে গ্রীক সভ্যতার নির্দেশনা পাওয়া গেছে। গ্রিক সভ্যতা কে দুই ভাগে ভাগ করা যায় একটি হচ্ছে এথেন্স ও স্পাটা। সেখানকার রাষ্ট্রগুলো ছিল ছোট ছোট নগর রাষ্ট্র।
স্পাটা
এই নগর রাষ্ট্রটি ছিল অসংখ্য ছোট ছোট নগর মিলিয়ে তৈরি হয়েছিল। এই নগর রাষ্ট্র অধিবাসীরা ছিল সমতন্ত্র দ্বারা প্রবাহিত। মানুষের মানবিকতার দিকে নজর না দিয়ে তারা সামরিক শক্তির উপর নজর দিয়েছিল বেশি। তারা ছিল যুদ্ধের প্রতি আকর্ষিত। 800 খ্রিস্টপূর্বের দীর্ঘ যুদ্ধের পর ডোড়িয়ার যোদ্ধারা দখল করতে সক্ষম হয় এই পরাজিত স্থানীয় অধিবাসী ভূমি দাস বা হেলার্ট বলা হত । এরা সুযোগ পেলেই বিদ্রোহ। এই ছিল মোটামুটি স্পাটার ইতিহাস। এবার আসা যাক নগর রাষ্ট্র এথেন্স।
এথেন্স
গণতান্ত্রিক নগর রাষ্ট্র ছিল এথেন্স মূলত এখানেই গণতন্ত্র আবিষ্কার হয়। আর এখানকার প্রজারা ছিল প্রতিবাদী। তবে প্রথম থেকে এথেন্স ছিল রাজতন্ত্র। প্রায় সপ্তম শতকের রাজতন্ত্র পরিবর্তে এক ধরনের অভিজাতন্ত্র দেখা দেয়। এখানে ধারণ করা হয় অভিজাতন্ত্রের যে বিদ্রোহী গড়ে ছিল সেগুলো ছিল স্পার্টা বিদ্রোহী। তারপর ক্ষমতা চলে আসে অভিজাতিদের হাতে। তারাও দেশের শাসন নামে শুধু নিজের স্বার্থই দেখতো । ফলে সাধারণ মানুষের মনে বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়। যদিও সাধারণ মানুষেরা ক্ষমতা দখল করতে পারেনি, কিন্তু তাদের নাম করে টাইরান্ট ক্ষমতা দখল করে নেয়।
এবং জনগণদের মধ্যে অসন্তোষ এবং বঞ্চিত কৃষকদের বিদ্রোহের আশঙ্কা দেখা দেয়। তার কারণে মূলত সপ্তম শতক খ্রিস্টপূর্বাব্দে মাঝামাঝি সময়ে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় একটি বিশেষ পরিবর্তন আসে। তারপর এথেন্সে মর্মান্তিক সংকটের সময় সব শ্রেণীর সম্মলিতভাবে কয়েকজন সংস্কারের জন্য আহ্বান জানান। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত অভিজাত শ্রেণীর বা অভিজাত বংশের জন্ম নেওয়া ‘সোলন’ । তিনি কিছু নতুন আইন প্রণয়ন করেন, এবং গ্রীকদের কঠোরতা হ্রাস করেন। তিনি ঋণ থেকে কৃষকদের মুক্তি করার জন্য নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করেন ।
চূড়ান্ত গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠান
সোলন পর জনগণের কল্যাণে তাদের অধিকার দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেন পিসিসট্রেটাস এবং ক্লসথেনিস। তারা জনগণের কল্যাণের জন্য অনেক আইন পাস করেন ।তবে চূড়ান্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হয় পেরিক্লিয়াসের সময় । তার সময়কে গ্রিক সভ্যতার স্বর্ণের যুগ বলা হয়ে থাকে।
তিনি মাত্র ৩০ বছর শাসন করেন। ৪৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহামারীতে প্রায় এক চতুর্থাংশ লোক মৃত্যুবরণ করেন। এই মহামারীতে পেরিক্লিয়াসের মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুর পর এথেন্সে দুর্ভাগ্য শুরু হয়। তারপর আবার গ্রিসে রাজতন্ত্র প্রতিষ্টিত হয়। তারপর এসেন্সের জনগণ বিদ্রোহ করতে শুরু করে। তারপর সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় । এথেন্স এর মিত্র রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত জোটের নাম ছিল ডিলিয়ান লীগ, অপরদিকে স্পাটার তার মিত্রদের নিয়ে জোট গঠন করে তার নাম ছিলো পিলোপনেসিয়া লীগ। পৃথিবীর সর্বপ্রথম এই দুটি রাজনৈতিক দল জন্ম হয় গ্রিক সভ্যতায়।
এভাবেই গ্রিক সভ্যতা সর্বপ্রথম রাজনৈতিক দল এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করে। তারপর তাদের সাহিত্যিক শিক্ষা এবং দার্শনিক বিজ্ঞান ক্ষেত্রে ধারণা ছিল সুবিশাল। আসলে গ্রীসরা সর্বপ্রথম দার্শনিক বিজ্ঞান ক্ষেত্রের সর্বপ্রথম ধারণা দেয় । তাদেরএকটি বিশেষ দিক ছিল জ্যামিতি। জ্যামিতির পন্ডিত ইউক্লিড পদার্থবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। এবং বিখ্যাত গণিতবিদ পিথাগোরাস চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা দেন। আসলে এসব বিজ্ঞানের জন্মস্থান হচ্ছে গ্রিক। গ্রুপ থেকেই জন্ম সক্রেটিসের পিথাগোরাসের।
সর্বপ্রথম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা
পৃথিবীর সর্বপ্রথম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় গ্রিকে । এই গ্রিক থেকে পুরো পৃথিবী দুই একটি রাষ্ট্র ছাড়া বর্তমানে সকল রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের পরিচালিত হচ্ছে। আসলেই এই গণতন্ত্রের পিছনে গ্রীকবাসীর দুঃখ, বিদ্রোহ ,যুদ্ধ ইত্যাদির ফলাফলেই হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্র এমন একটি পদ্ধতি যা জনগণের সুখ-দুঃখের চিন্তা করেই শাসন কার্য পরিচালিত হয়। মূলত এই জন্যেই বর্তমান পৃথিবীর গণতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
আর আমাদের বাংলাদেশরে পুরো নাম হলো গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ। পৃথিবীতে এমন কোন দেশ আছে যেখানে গণতন্ত্র কোন চিহ্ন নেই। দুই একটি রাষ্ট্র এখনো রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আছে। যেমন, সৌদি আরব। এখানে এখনো রাজার আদেশ অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হয়। এখানে সকল ক্ষমতার উৎস রাজা। আর গণতন্ত্রের সকল ক্ষমতার উৎস হচ্ছে জনগণ। জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হবে।
কিন্তু বর্তমান বিশ্বে খুব কম দেশেই আছে যেখানে জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হয়। তাই বলা যায় এই পৃথিবীতে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের অভাব দেখা যাচ্ছে। তাই সুষ্ঠু গণতন্ত্র পরিচালনার জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন ও সুনাগর হওয়া দরকার। তাহলেই আমাদের দেশ সুখে শান্তিতে ভরে উঠবে। আর আমাদের পৃথিবীর উন্নতির দিকে ধাবিত হবে। বন্ধুরা আজকের মত এটুকুই কালকে আরো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে দেখা হচ্ছে । পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।