গর্ভাবস্তায় মাথা ব্যাথার কারণ! গর্ভবতী মোয়েদের একটি অতি পরিচিত সমস্যা হচ্ছে এই মাথা ব্যাথা। হরমোন পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘুম ভালো না হওয়ার কারণে এই মাথা ব্যাথা হয়ে থাকে। এই মাথা ব্যাথা থেকে এক পর্যায়ে হতে পারে ঘাড়ের ব্যাথা। তবে এটি মা বা নবজাতক শিশুর কোন সমস্যার কারণ হতে পারে না।
গর্ভবতী মায়েদের এই মাথা ব্যাথার কারণ ?
গর্ভাবস্তায় মায়েদের সাধারনত মাথা ব্যাথা শুরু হয় নয় সপ্তাহের পর থেকে। তবে গর্ভবতী মায়েদের যে কোন সময় এ মাথা ব্যাথা হতেত পারে। এমন ধরনের মাথা ব্যাথা হতে পারে যা মায়েরা কোন দিন অনুভব করতে পারে নি। এই মাথা ব্যাথা মাথার যেকোন পাশে বা উভয় পাশে হতে পারে মাথার।
রক্তের পরিমান বৃদ্ধি:
গর্ভাবস্থায় রক্তের পরিমান বৃদ্ধি সাইনাসের উপর চাপ বাড়ারে পারে, যার ফলে সাইনাস থেকে মাথাব্যাথা হয়।
ঘুমের ব্যাঘাত, পানি শূন্যতা, ক্ষুধা:
অনেক সময় দেখা যায় যে ঘুম কম হলে সচরাচর মাথা ব্যাথা হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় মায়েদের বেশি বেশি করে পানি পান করতে হবে । না হলে ডিহাইড্রেশন থেকে মাথা ব্যাথা হতে পারে। গর্ভবতী মায়েরা যতই খাবার খাক না কেন তাদের ঘন ঘন ক্ষুদা লাগতে পারে। তানা হলে শর্করার পরিমান কমে যেতে পারে। সে থেকে মাথা ব্যাথা হতে পারে।
হরমোনের উঠানামা, চিন্তা:
গর্ভবতী মায়েদের হরমোন উঠানামা করে মাইগ্রেনের সমস্যা হয়ে থাকে সে থেকে মাথা ব্যাথা হয়। মায়েদের এ সময় নানা কারণে চিন্তা আসে তখন মাথা ব্যাথা শুরু হতে পারে।
মায়েদের উচ্চরক্তচাপ:
উচ্চ রক্ত চাপের কারণে অনেক সময় মাথা ব্যাথা হয়ে থাকে । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ২২ সপ্তাহের সময় এই সমস্যাটা বেশি দেখা দেয়। আপনি যদি হঠ্যাৎ মাথা ব্যাথা অনুভব করে থাকেন যা আপনি আগে অনুভব করেননি তাহলে আপনি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যাথার চিকিৎসা:
গর্ভবতী হওয়ার পরে মাথা ব্যাথার জন্য আপনি নানান রকম ঔষধ খেতে পারেন। কিন্তু আপনি চাইলেই প্রাকৃতিক উপায়ে এই মাথা ব্যাথার মোকাবেলা করতে পারেন। ঔষধের বিকল্প প্রাথমিক কিছু উপায় আছে যা কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
অন্ধকার ঘরে ঘুমানো, মাথায় ঠান্ডা সেক, নিয়মিত গোসল:
মাথা ব্যাথা শুরু হলে চেষ্টা করতে হবে একটি আলো বিহীন একটি কক্ষে কিছুক্ষনের জন্য হলেও ঘুমাতে। চেষ্টা করতে হবে জনশূন্যহীন একটি ঘড়ে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিতে। মাথা ব্যাথা হালকা থাকলে একটু ঠান্ডা সেঁক দেওয়া যেতে পারে । একটা ছোট কাপড়ে একটু বরফ নিয়ে আস্তে আস্তে সেঁক দিলে মাথা ব্যাথা কমতে পারে। এছারা ঔষুধের দোকান থেকে একটা কোল্ড প্যাক কিনে সেটা দিয়ে কপালে সেঁক দিলে মাথা ব্যাথা কমতে পারে।
যদি গর্ভাবস্থায় আপনি কোন রকম সমস্যায় না ভুগেন এবং ডাক্তার গোসল করতে নিষেধ না করলে নিয়মিত কুসুম গোরম পানি দিয়ে প্রতিদিন গোসল করা ভালো।
বেশি পানি পান করা:
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে গর্ভবতী মায়েরা বেশি পানি খেতে চায় না। সে ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই বেশি করে পানি পান করা দরকার। আবার অতিরিক্ত গরমেও ডিহাইড্রেশনের কারণে অধিক পানি বের হয়ে যায় । সে কারণে মাথা ব্যাথা হতে পারে । তাই বেশি করে পানি পান করতে হেবে।
বিশ্রাম নেওয়া:
গর্ভবতী মায়েদের অবশ্যই ভালো করে বিশ্রাম নেওয়া দরকার । রাতে অন্ত্যত ৭-৯ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। প্রয়োজন হলে দিনের বেলায় কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়া দিরকার।
ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া:
অনেক সময় মাথা ব্যাথা হলে একটু বিশ্রাম নিলে মাথা ব্যাথা চলে যায়। বিশ্রাম নিয়েও যদি মাথা ব্যাথা না কমে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
যদি আপনার প্রাকৃতিক উপায়ে কাজ না হয় তাহলে ঔষধ গ্রহন করতে হবে।ঔষধ গ্রহনের পূর্বে এটি আপনার জন্য নিরাপদ কিনা তা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় যদি মাথা ব্যাথা হয় তাহলে আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খেতে হবে। জ্বর হলে কিংবা শ্বাস কষ্ট হলে ডাক্তার দেখাতে হবে। মাথা ব্যাথার পাশা পাশি বমি বমি ভাব চোখে ঝাপসা দেখা এসব কিছু মনে হলে তারাতারি করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।