লাইফস্টাইল

পায়ের গোড়ালি ফাটার সহজ সমাধান

পায়ের গোড়ালি ফাটার ঔষধ

পায়ের গোড়ালি ফাটার ঔষধ! তো বন্ধুরা আপনারা সবাই পায়ের গোড়ালি ফাটার রোগ সাথে পরিচিত। অনেকেরই ঠান্ডার সময় তার পায়ের গোড়ালি ফেটে যায় তার সমাধানের জন্য আমরা ভ্যাসলিন মেরিল ইত্যাদি ক্রিম গুলো ব্যবহার করে থাকি। আসলে কি ভ্যাসলিন মেরিল ইত্যাদি এই ক্রিমগুলো দিয়ে কি আমাদের পা ঠিক হয় না আমাদের পায়ের ফাটার কারণ অন্য কিছু। চলুন বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক,,

শীতকাল পা ফাটার কারণ নয়

বিভিন্ন কারনে ও পা ফেটে থাকে। শীতের সময় ছাড়াও বছরের অন্য সময়েও অনেকের পা ফাটে। পা না ফাটলেও গোড়ালির ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। শরীরের সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে পায়ের গোড়ালিতে। আর তাইতো পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়। এছাড়াও শুষ্ক আবহাওয়াতে পায়ের গোড়ালি বাইরে থাকে।

যে কারণেও পায়ের গোড়ালি ফাটতে পারে। রাস্তার ধূলাবালি বা মাটির সংস্পর্শেও অনেক সময় গোড়ালি ফাটে। গোড়ালি ফাটা খুবই কষ্টকর। অনেক সময় রক্ত পর্যন্ত পড়ে। এর পেছনে রয়েছে সচেতনভাবে পায়ের ত্বকের যত্নের অভাব। এই অভাব খুব সহজেই দূর করা যায়। পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণগুলো ও পায়ের গোড়ালি ফাটার ঔষধ জেনে নিন-

পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ:

১.শরীরে ভিটামিন এর অভাব হলে পা ফেটে থাকে। মানব দেহে ক্যালসিয়াম, জিংক ও আয়রনের ঘাটতি পা ফাটার অন্যতম কারণ।

২.মানবদেহে পানিশূন্যতার কারণে পা ফাটতে দেখা যায়।পানিশূন্যতা দূর করতে প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।

৩.খুব বেশি গরম পানিতে গোসল, ধুলাবালি, দীর্ঘদিন ধরে পায়ের যত্নের অভাব, অপরিচ্ছন্ন জুতা পরা , অতিরিক্ত পুষ্টির অভাব।

৪.ডায়বেটিস রোগীদের স্নায়ুজনিত সমস্যা তৈরীর ফলে পায়ের আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে।ফলে পা ফাটা হতে পারে।

৫.অল্প ফেটে গেছে এমন জায়গার চামড়াকে জোরে জোরে টেনে তোলা বা ছিঁড়ে দেওয়া।

৬.অনেকে আবার পা ফাটা সমস্যা জেনেটিক ভাবে পেয়ে থাকেন।অর্থাৎ বাবা, চাচা,মা কারো এই সমস্যা থাকলে ছেলে -মেয়েরা ও বংশ পরম্পরায় পেয়ে থাকে।

৭. পা প্রতিদিন পরিষ্কার না করা, ভ্যাসলিন বা ময়েশ্চার ব্যবহারের পরে তা সঠিকভাবে পরিষ্কার না করে আবার লোশন, ক্রিম বা ময়েশ্চার ব্যবহার করা।

পায়ের গোড়ালি ফাটার হাত থেকে বাঁচার উপায়:

১. মধু পায়ের যত্নে অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। এক বালতি হালকা গরম পানিতে এক কাপ মধু মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মিশ্রণ দিয়ে পায়ে ম্যাসাজ করতে থাকুন । ২০ মিনিট ধরে এই ম্যাসাজ করতে পারেন ।তারপর পা-ঘষার পাথর দিয়ে শক্ত চামড়া ঘষে পরিষ্কার করে দিন।এতে অনেক উপকার পাবেন।

২. অ্যালোভেরায় বিটামিন এ, সি এবং ই থাকে। এই কারণে ত্বকের জন্য অ্যালো ভেরার জেল খুবই কার্যকরী। হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে, পা-ঘষার পাথর দিয়ে গোড়ালি ঘষে পরিষ্কার করে নিন। তারপর মোটা করে এই জেল লাগান পায়ের তলায়। এরপর মোজা পরে শুতে যান। সকালে উঠে হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে নিন।

৩. ভ্যাসলিন এর সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে সারা রাত পায়ে লাগিয়ে রাখুন। তবে পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর হবে ও পা নরম মিশ্রণ হয়ে যাবে।

৪. হালকা গরম পানিতে তিন চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। সেই মিশ্রণে পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। ১৫ মিনিট বসে থাকলে পায়ের ত্বক অনেক নমনীয় হবে। এরপর পানি থেকে পা তুলে পা-ঘষার পাথর দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিন।

৫. অলিভ অয়েল, তিলের তেল, নারকেল তেল, সরষের তেল ও বাদাম তেল পা ফাটার ভালো একটি সমাধান। রাতে যে কোনো একটি ভেজিটেবল তেল লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে পা ফাটা অনেকটাই কমে যাবে।

পা ফাটা হতে পারে যে ৪ রোগের লক্ষণ; পা ফাটার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। যদিও শীতেই পা ফাটার সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তবে অনেকেরই এ সমস্যা দীর্ঘমেয়াদী হয়ে থাকে।বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেও সারিয়ে তোলা যায় না পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যা। এক্ষেত্রে আবার পা ঢাকা জুতা না পরলে খুবই খারাপ দেখায় পায়ের গোড়ালি।

 পা ফাটার সমস্যাটি বিভিন্ন রোগের লক্ষণও হতে পারে; তবে জানেন কি, পা ফাটার সমস্যাটি বিভিন্ন রোগের লক্ষণও হতে পারে। যা অনেকেরই অজানা।ভিটামিন কিংবা পানির ঘাটতি থেকে শুরু করে চর্মরোগের কারণেও দীর্ঘমেয়াদী পা ফাটার সমস্যায় আপনি ভুগতে পারেন।

চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন রোগের কারণে পায়ের গোড়ালি পা ফাটার অন্যতম এক কারণ হলো ভিটামিনের অভাব। বিশেষত ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি ত্বকের যত্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এই দুটি ভিটামিনের অভাবে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যার মধ্যে অন্যতম পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া।

এ ছাড়াও পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনের কারণেও পা ফাটার সমস্যা দেখা দিতে পারে। পরিবেশের আর্দ্রতা কম থাকা, কম পানি পান করা কিংবা শুষ্ক পরিবেশে নিয়মিত দীর্ঘক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার ফলে পায়ের ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়। এর ফলে চামড়া শুকিয়ে ও ফেটে যেতে পারে।

পা ফাটার আরও এক কারণ হতে পারে অ্যাকজিমা

পা ফাটার আরও এক কারণ হতে পারে অ্যাকজিমা। এটি এমন এক ধরনের ত্বকের রোগ যার প্রভাবে পা ফাটার সমস্যা দেখা দেয়।এই রোগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে উপসর্গটি দেখা যায় তাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস।দেহের যে কোনো স্থানেই এ চর্মরোগ হতে পারে।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এই রোগের সঠিক কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরাও এখনো নিশ্চিত নন।এ ছাড়াও সোরিয়াসিসের কারণেও পা ফাটা দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পায়ের তালুতে খোসার মতো চামড়া উঠতে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে সোরিয়াসিস নাম চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে পায়ের গোড়ালিতেও। এই রোগ একবার শরীরে প্রকাশ পেলে তা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও সারিয়ে তোলা সম্ভব নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

সাধারণত শীতে যখন জলবায়ুর শুষ্কতার ফলে পায়ের গোড়ালির চামড়া ফেটে যায়, তখন ঘরোয়া উপায়েই তার সমাধান সম্ভব। তবে দীর্ঘদিন পা ফাটার সমস্যায় ভুগলে তা হতে পারে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ।বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের এর থেকে ডায়াবেটিক ফুট হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এ সমস্যা পুষে না রেখে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।(পায়ের গোড়ালি ফাটার ঔষধ)

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।