প্রত্যেকদিন সকালে করে সূরাতুল ফাতিহা পড়ে টাটকা তিনটি পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খেলে যে সমস্ত রোগের হাত থেকে আপনি বাঁচতে পারবেন তা আমরা আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব।
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা জানেন শুধুমাত্র তিনটি করে পেয়ারা পাতা একটানা সাত দিন খেলে হাই ব্লাড প্রেসার, কোলেস্ট্রল, ডায়াবেটিসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ ১০ থেকে ১২ টি রোগের হাত থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। এছাড়া পেয়ারা পাতা মুখের মধ্যে রাখলে দাঁতের মধ্যে শিরশির অনুভূতি দূর হয়ে যায়। প্রিয় বন্ধুরা তাহলে চলুন জেনে নেই পেয়ারা পাতার ঔষধি গুন সম্পর্কে আজকের এই পোস্টটি।
১/ দাঁতের সমস্ত রোগ ভালো করে
পেয়ারা পাতা দাঁতের জন্য আক্রান্ত উপকারী। পেয়ারা পাতার এই উপকারী গুণ শুধুমাত্র এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। নারী পুরুষের অনেক গুরুত্বপূর্ণ গোপন রোগের হাত থেকেও এই পেয়ারা পাতা রক্ষা করে থাকে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যেহেতু বাংলাদেশের মানুষ অধিকাংশই ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তাই এই পেয়ারা পাতা নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। পেয়ারা পাতা রক্তের আলফা গ্লুকোডাইস এঞ্জাইম অ্যাক্টিভিটির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তের মধ্যে শর্করার পরিমাণ ১০০% নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
কিন্তু মনে রাখতে হবে এর জন্য আপনাকে পেয়ারা পাতা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে। এছাড়া যারা যেকোনো ধরনের ব্যায়াম বা ডায়েট কন্ট্রোল ছাড়াই পেটের চর্বি কমাতে চান তাদের জন্য পেয়ারা পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়মটি এই পোস্টের শেষে বর্ণনা করা হয়েছে তাই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
২/ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
পেয়ারা পাতা জটিল কার্বোহাইড্রেটকে সুগারে রূপান্তর হতে দেয় না। এই ধরনের সুগার আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ক্ষুধা এবং ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক করে থাকে। যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন অর্থাৎ হাই ব্লাড প্রেসার তারা অন্তত একবার হলেও পেয়ারা পাতা খেয়ে দেখতে পারেন।
এটা ইনস্টেন্ট অর্থাৎ তাৎক্ষণিকভাবে আপনার রক্তচাপকে একদম নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবে। এক্ষেত্রে ব্লাড প্রেসারের উচ্চমাত্রার ওষুধ না খেয়ে এই ভেষজ পেয়ারা পাতা খেয়ে একবার হলেও দেখতে পারেন। কারণ পেয়ারা পাতা মানব শরীরের রক্তকে অতিরিক্ত ঘন হতে বাধা দেয়। পাশাপাশি দেহের মধ্যে রক্ত চলাচলের মাত্রাকে ঠিক রাখার মধ্য দিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
পেয়ারা পাতা উচ্চফাইবার এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া ধর্মীয় হওয়ায় এটি খুব সহজে উচ্চ রক্তচাপের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে।
৩/ মস্তিষ্ক সুস্থ রাখে
পেয়ারা পাতা শুধু যে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরাই খেতে পারবে এমনটা নয়। পেয়ারা পাতা শিশুদেরও খাওয়ানো যায়। কেননা এই পেয়ারা পাতা প্রতিদিন খেলে আপনার এবং আপনার শিশুর মস্তিষ্ক সুস্থ থাকবে। পেয়ারা পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৩ অর্থাৎ নিয়াসিন রয়েছে এবং রয়েছে ভিটামিন বি৬।
যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে অনেক সহায়ক হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল এবং মনোযোগ বৃদ্ধিতে নিয়াসিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনার ইস্কুলগামী অমনোযোগী শিশুকে প্রতিদিন পেয়ারা পাতা খাওয়ালে তার পড়ালেখায় মনোযোগ আসবে।
৪/ হরমোনাল সমস্যা দূর করে
দেহের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হরমোন গুলোর মধ্যে অন্যতম হরমোন হলো থাইরয়েড। এই থাইরয়েড হরমোন গুলি যদি দেহের মধ্যে কম বা বেশি উৎপন্ন হয় তাহলে শরীরের মধ্যে থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা হয়। আর এই থাইরয়েড হরমোনের চিকিৎসার জন্য পেয়ারা পাতা একটি শ্রেষ্ঠ উপাদান।
৫/ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে
পেয়ারা পাতা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। বিশেষজ্ঞরা একটি পরীক্ষায় দেখেছে পেয়ারা পাতায় প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট লাইট ওপেন থাকার কারণে এটি স্তন ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সার এবং মুখের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে বিশেষভাবে কাজ করতে পারে।
এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আয়রন। যার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ এলার্জি ইত্যাদির সমস্যাও পেয়ারা পাতা খুবই উপকারী।
৬/ পোকামাকড়ের কামর থেকে রক্ষা করে
আপনার অজান্তে যদি কোন পোকামাকড় শরীরের মধ্যে কামড় দিয়ে থাকে তাহলে সেখানে পেয়ারা পাতার রস ব্যবহার করলে খুব সহজেই ক্ষত ভালো হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। এছাড়াও পেয়ারা পাতা পুরুষের প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। যাদের প্রোস্টেটের সমস্যা রয়েছে তারা অন্তত একবার হলেও পেয়ারা পাতা খেয়ে দেখতে পারেন।
৭/ দাঁতকে সুস্থ রাখে
মাত্র তিনটি পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে আপনার মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, মুখের ঘা, মারির ব্যথা বা দাঁতের যেকোনো শিরশির ভাব দূর হয়ে যাবে। এজন্য পেয়ারা পাতা পিছে মুখের মধ্যে দিতে হবে অথবা পেয়ারা পাতা মুখের মধ্যে চিবিয়ে রাখতে হবে।
পেয়ারা পাতা খাওয়ার ২টি নিয়ম
১/ প্রথমে সাত থেকে আটটি পেয়ারা পাতা সংগ্রহ করে পানিতে দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। এজন্য দুই গ্লাস পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। পানির মধ্যে বুদবুদ দেখা দিলে বুঝে নিতে হবে পেয়ারা পাতা সিদ্ধ হয়ে গেছে।
আপনি চাইলেই এই পানির মধ্যে গ্রিনটিও ব্যবহার করতে পারেন। পরবর্তীতে পেয়ারা পাতার সিদ্ধ পানিকে জেলির মাধ্যমে খেচে নিতে হবে। এই পানি কুসুম গরম থাকা অবস্থায় সকালে অথবা রাতে খেতে পারেন। তবে দিনে অন্তত একবার পান করাই যথেষ্ট। দিনে একের অধিক পান করলে এসিডিটির সমস্যা হতে পারে।
এই পানি খালি পেটে খাওয়ার কোন দরকার নেই। তবে মনে রাখবেন কোন কিছু খাওয়ার অন্তত এক থেকে দেড় ঘন্টা আগে এই কুসুম পানি আপনি খেয়ে নিবেন। এই নিয়মে টানা সাত দিন পেয়ারা পাতা খাওয়ার নিয়ম অনুসরণ করুন।(পেয়ারা পাতার ঔষধি গুন)
২/ যদি কারো কাছে পেয়ারা পাতা সিদ্ধ করে খাওয়াটা ঝামেলার মনে হয় তাহলে প্রতিদিন সকালে কচি তিনটি করে পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। এজন্য মাঝারি টাইপের সতেজ তিনটি পাতা খুব সকালে চিবিয়ে খেয়ে নিন।
এতে করে আমরা উপরোক্ত যেসব রোগের কথা উল্লেখ করেছি ইনশাল্লাহ সে সমস্ত রোগ আল্লাহর রহমতে ভালো হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন আপনি যদি মুসলমান হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সুরা ফাতিহা পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেন। আর অন্য ধর্মের হয়ে থাকলে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করবেন।