ফুসফুস ভালো রাখার উপায়! বন্ধুরা আজকের পোস্টটি হতে যাচ্ছে ফুসফুস ভালো রাখার জন্য বিশেষ কিছু নিয়ম ও যে সব খাবার খেলে ফুসফুস ভালো রাখা যায়, সেই সকল বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করব আজকের এই পোস্টটিতে। চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক-
ধূমপানের কারণে ফুসফুসের ক্ষতি হয়ে থাকে
বন্ধুরা আপনারা জানেন যে মানদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে ফুসফুস। শরীরের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে ফুসফুসের যত্ন নেয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত বায়ুদূষণ ও ধূমপানের কারণে ফুসফুসের ক্ষতি হয়ে থাকে। তবে কিছু খাবার রয়েছে, যা ফুসফুসের জন্য ভালো। পপএমন কিছু খাবার আছে যা দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখলে ফুসফুস সুস্থ থাকে। আসুন জেনে নিই যা খেলে ভালো থাকে ফুসফুস-
১. আপেলে থাকা ফেনোলিক যৌগ ও ফ্ল্যাভনয়েড শরীরের প্রদাহ কমায়।ইউরোপিয়ান জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে। যেসব শিশু নিয়মিত আপেলের জুস পান করে তাদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা কম হয়।
২. গ্রিন টি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফুসফুসের প্রদাহ কমায় ও কার্যকারিতা বাড়ায়। ২০১৭ সালে কোরিয়ান এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, যারা নিয়মিত দুই কাপ গ্রিন টি পান করেন, তাদের ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ে।
৩. ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ সামুদ্রিক মাছ ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায়।
৪. বাদাম ও বীজ ফুসফুসের জন্য খুবই উপকারী। আখরোট, পেস্তাবাদাম কাজুবাদাম, চিনাবাদাম, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, ফ্ল্যাক্সসিডে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, প্রয়োজনীয় খনিজ থাকায় এ গুলো শ্বাসতন্ত্র ভালো রাখে।
৫. আদা-রসুন ফুসফুসের জন্য ভালো কাজ করে। এসব মসলায় থাকা অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ফুসফুস পরিষ্কার রাখে ও কার্যকারিতাও বাড়ায়।
৬. গোলমরিচে থাকা ক্যাপাসেইসিন উপাদান শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা কমায়।
ফুসফুস ভালো রাখার ৭ খাবার
স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে বায়ুদূষণ। দেখা দিচ্ছে নানা জটিল রোগ। সমস্যা দেখা দিচ্ছে ফুসফুসে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব ঠেকাতে নিয়মিত কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে অন্যতম টমেটো।
এতে থাকা লাইকোপেন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শ্বাসযন্ত্রে সুরক্ষা–স্তর হিসেবে কাজ করতে পারে। এ ছাড়া কমলা, পেয়ারা, আঙুর, লেবুর মতো ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ ফল নিয়মিত খেতে হবে। এসব ফল ফুসফুস ভালো রাখে। ফুসফুস ভালো রাখতে পারে—এমন কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জেনে নিন-
আমলকি: গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আমলকি খেলে যকৃতের ধূলিকণার সব ক্ষতি ঠেকানো যায়। আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সর্দি-কাশি ঠেকাতে পারে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও আমলকির জুসের গুণ বর্ণনা করে বলা হয়েছে, শরীরের সব ধরনের ক্রিয়ার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে তা।
টমেটো: শরীরকে রোগ প্রতিরোধক্ষম করে তোলে টমেটো। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় টমেটোর এসব কার্যক্ষমতার কথা বলা হয়েছে।
গবেষকেরা বলছেন, টমেটোতে আছে দারুণ অ্যান্টিঅক্সিডেটিভ প্রভার, যা কোষকে বুড়ো হতে দেয় না। এ ছাড়া নানা রকম ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে টমেটো। টমেটোর লাইকোপেন শ্বাসযন্ত্রে সুরক্ষা–স্তর হিসেবে কাজ করে। বাতাসে থাকা ক্ষতিকর ধূলিকণার প্রভাব হিসেবে কাজ করে লাইকোপেন।
হলুদ: হলুদ পরিচিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত। দূষিত কণার প্রভাব থেকে ফুসফুসকে সুরক্ষা দিতে কাজ করে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কফ ও অ্যাজমার সমস্যা সমাধানে হলুদ ও ঘিয়ের মিশ্রণ কাজে লাগে। এ ছাড়া হলুদ, গুড় ও মাখনের মিশ্রণ অ্যাজমা দূর করতে পারে।
তুলসী: বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে ফুসফুসকে রক্ষা করতে পারে তুলসীপাতা। এ ছাড়া বাতাসে থাকা ধূলিকণা শোষণ করতে পারে তুলসীগাছ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন অল্প করে তুলসীপাতার রস খেলে শরীরের শ্বাসযন্ত্রের দূষিত পদার্থ দূর হয়।
লেবুজাতীয় ফল: কমলা ও লেবুতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। লেবুজাতীয় ফল নিয়মিত খেলে ফুসফুসে বায়ুর ক্ষতিকর উপাদানগুলোর প্রভাব পড়তে পারে না।
গুড়: অ্যাজমা ও ব্রংকাইটিসের মতো অনেক শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় কার্যকর হতে পারে গুড়। তিলের সঙ্গে গুড় মিশিয়ে খেলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়। বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে কম।
সবুজ চা: প্রতিদিন দুই কাপ করে গ্রিন টি বা সবুজ চা খেতে পারেন। শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে সবুজ চায়ের সঙ্গে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।