তথ্য ও প্রযুক্তি

মার্ক জুকারবার কিভাবে ফেসবুক তৈরি করল

ফেসবুক আবিষ্কারের ইতিহাস

ফেসবুক আবিষ্কারের ইতিহাস! বন্ধুরা আপনারা কি জানেন কিভাবে ফেসবুকে আবিষ্কার হয়েছে যদি না জেনে থাকেন তাহলে শুধু পোস্টটি আপনারই জন্য।

তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক- ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এসময়ের সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক । আজ সেই ফেসবুকের জন্মদিন। যেই ফেসবুকের মাধ্যমে আমরা প্রিয় জনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই আজ তারই জন্মদিন।

কিভাবে কে তৈরী করলো এই ফেসবুক তা নিয়ে মানুষের রয়েছে কৌতূহল

আসুন আজ সেই কৌতূহল দূর করি। জানি ফেসবুক তৈরির কাহীনি ।আমেরিকান কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও সফটওয়্যার ডেভেলপার মার্ক জাকারবার্গ।

হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তার রুমমেট ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র এডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিত্স এবং ক্রিস হিউজেসের সাহায্য নিয়ে ফেসবুক নির্মাণ করেন।প্রথমে ২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর মার্ক এলিয়ট জুকারবার। ফেসম্যাশ ডট কম নামে একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

আর ঐ সাইটের জন্য নিজের কলেজের ডাটাবেজও হ্যাক করেছিলেন তিনি। হ্যাক করা হার্ভার্ড কলেজের ডাটাবেজ থেকে স্টুডেন্টদের ছবি নিয়ে তা ফেসম্যাশে ব্যবহার করে ভিজিটরদের “হট” অথবা “নট” ভোটিংয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। পরে কলেজের শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে এই সাইট বন্ধ করতে বাধ্য হয় জুকারবার্গ।

মুলত ঐ ফেসম্যাশ ওয়েবসাইট থেকেই ফেসবুকের চিন্তা মাথায় আসে জুকারবার্গের। আর সেই ভাবনা থেকেই ২০০৪ সালের ১১ই জানুয়ারী। দিফেসবুক ডট কম ডোমেইন কিনে ফেলেন তিনি।মার্ক জুকারবার্গ যখন “দ্য ফেসবুক” নামে নতুন সাইটটি চালু কর। তার পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ১২০০ জন শিক্ষার্থী এতে রেজিস্ট্রেশন করেন।

প্রথমদিকে এটি শুধুমাত্র হার্ভার্ড কলেজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও ২ মাসের মাথায়। আরও এটি বোস্টন শহরের অন্যান্য কলেজ, আইভি লীগ এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়।

জুন মাসের মধ্যে সাইটে প্রায় দেড় লাখ ( ১,৫০,০০০ ) ইউজার ফেসবুক ব্যবহার করা শুরু করে এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১ মিলিয়ন এ। তবে এ সময় শুধুমাত্র ১৩ বছরের উপরের বয়সের ছেলে ও মেয়েরা এটি ব্যবহার করতে পারতেন। এসময় ফেসবুকে কোনো ছবি আপলোড করা, ওয়াল, নিউজ ফিড, ইভেন্ট, পেজ ইত্যাদি ফিচার ছিল না।

অবশেষে ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে জুকারবার্গ শ্রুতিমধুর নামের কারণে “দ্য ফেসবুক (The Facebook)” কে সংক্ষিপ্ত করে “ফেসবুক (Facebook)” রাখেন এবং এই নামে একটি ডোমেইন কিনেন। তবে এজন্য খরচ হয়েছিল দুই লাখ মার্কিন ডলার। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তম জানাশোনার অভিপ্রায়ে সকল শিক্ষার্থীর কিছু ব্যক্তিগত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল-আসলে ফেইসবুক যখন তৈরি করা হয়েছিল, তখন কেবল মাত্র ইউনিভার্সিটির এক বর্ষে শিক্ষারত কয়েকজন শিক্ষার্থীর মাঝে যোগাযোগ নিশ্চিত করাই ছিল এর প্রত্যক্ষ উদ্দেশ্য।

ফেইসবুক নামটা কিন্তু সেখান থেকেই এসেছে। তবে প্রথমদিকে ফেইসবুকের নাম ছিল ফেসম্যাশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ একটি বই তৈরি করেছিল, যার নাম ছিল ফেইসবুক। আর সেখানে শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তম জানাশোনার অভিপ্রায়ে সকল শিক্ষার্থীর কিছু ব্যক্তিগত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন শিক্ষার্থীর নাম ছিল মার্ক জাকারবার্গ। সেই ছেলেটির প্রোগ্রামিং এর প্রতি ছিল প্রচুর আগ্রহ আর প্যাশন।(ফেসবুক আবিষ্কারের ইতিহাস)

সে কী করল? নিজেই একটি ওয়েবসাইট বানালো। আর তাকে সাহায্য করল এডুয়ার্ড সেভেরিন, ডাস্টিন মস্কোভিটজ এবং ক্রিস হিউজ নামে তারই কিছু কক্ষনিবাসী। আর সেই ওয়েবসাইটে সব শিক্ষার্থীর একটি আইডি থাকবে বলে ঠিক করা হল।

এর জন্য মার্ক জাকারবার্গ কে হার্ভার্ড এর সংরক্ষিত তথ্যকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ বা হ্যাক করতে হয়েছিল, আর যুক্ত করা হলো একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য থাকবে মেসেজিং করার অপশন। আবার নিজেদের লেটেস্ট কিছু তথ্য বা ঘটনাও অন্যদের সাথে শেয়ার করার জন্য তৈরি করল আরেকটি অপশন। খুব কম সময়ের মধ্যেই অয়েবসাইটটি সকলের খুব প্রিয় হয়ে উঠলো।(ফেসবুক আবিষ্কারের ইতিহাস)

ফেসবুকের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং দ্রুত অগ্রগতি

মার্ক জাকারবার্গ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন ২৮ অক্টোবর ২০০৩ সালে ফেসম্যাশ নামে একটি সাইট তৈরি করেন। এতে তিনি ব্যবহার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ টি হাউসের শিক্ষারথীদের ছবি।

আর সেখানে পাশাপাশি দুইটি ছবি ব্যবহার করে হার্ভার্ডের সকল শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে বলেন যে কোন ছবিটি হট আর কোন ছবিটি হট নয়। সংক্ষেপে হট অর নট। এর মাত্র চার ঘন্টার মধ্যেই প্রায় ৪৫০ ভিজিটর ২২০০০ ছবিতে ভোট দেন। তারপর ২০০৪ সালের জানুয়ারিতে মার্ক জাকারবার্গ ফেসমাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তার নতুন সাইট ফেসবুক ডট কম এর কোড লেখা শুরু করেন।সেই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১০ লাখ।

এরপর ২০০৫ সালের আগস্টে ফেসবুক ডট কম নাম পালটে কোম্পানীর নাম রাখা হয় শুধু ফেইসবুক। ২০০৫ এর ডিসেম্বরের মধ্যে ফেসবুকের মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা হয় ৫৫ লাখ।

২০০৬ সালে ফেইসবুকের সাথে কৌশলগত কারণে মাইক্রোসফট যোগ দেয়।এর আগে ফেসবুকের ব্যবহারকারীরা ছিল শুধু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্মচারী। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে ফেসবুকের সর্ব মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় 1 কোটি 20 লাখে।

তারপর 2007 সালে ভার্চুয়াল গিফট শপ চালু করার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর সংখ্যা 2 কোটি তে পৌঁছায়। 2009 সালে 35 কোটি এবং 2010 সালের মধ্যে ফেসবুকের মোট ব্যবহারকারী হয় প্রায় 55 কোটির অধিক। বর্তমানে মোট এক্টিভ ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় আড়াই বিলিয়ন এর মত।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।