বাড়িতে জ্বীন থাকার আলামত গুলো কি কি! আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। বাড়িতে জ্বীন থাকার আলামত গুলো আমাদের জেনে নেওয়া উচিত। প্রিয় বন্ধুরা আজকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে যাচ্ছি।
আশা করি আপনারা মনোযোগ সহকারে এই পোস্টটি পড়বেন এবং এই পোস্টটির মাধ্যমে স্পষ্টতো জানতে পারবেন কিভাবে আপনার বাড়িতে খারাপ জ্বীনগুলো আনাগোনা করছে কিনা অথবা আপনার সঙ্গে জ্বীনের কোন আছর আছে কিনা। এই বিষয়গুলো বুঝার জন্য অথবা উপলব্ধি করার জন্য নিচে কিছু আলামত রয়েছে।
যে আলামত গুলো পরীক্ষা-নিক্ষা করার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন বা জানতে পারবেন যে আপনার সঙ্গে বা আপনার বারিতে জ্বীনের কোন আছর আছে কিনা। তাহলে চলুন জেনে নেই কয়েকটি আলামত সম্পর্কে।
১/ আপনার নিজের অথবা আপনার পরিবারের অন্য কোন সদস্যের গায়ে যদি প্রায় সময়ে রক্তের ছিটা দেখতে পান। অথচ আপনার অথবা পরিবারের কারো গায়ে রক্তের ছিটে ফোটা লাগার কোন সম্ভাবনা নেই। তারপরেও যদি আপনি এমনটা দেখতে পান। তাহলে বুঝে নিবেন যে আপনার বাড়িতে জ্বীনের আনাগোনা রয়েছে এবং তারা প্রতিনিয়ত আপনার পরিবারের ক্ষতি করতে চাইছে।
২/ আপনি যখন রাতের বেলা ঘর থেকে বের হন তখন যদি আপনার এমন মনে হয় যে আপনার পেছন পেছন কেউ হেঁটে আসছে। অথবা আপনার কাছে যদি এরকম মনে হয় যে, আপনার চারপাশে অন্য কারো উপস্থিতি রয়েছে অথচ চারপাশে তাকিয়ে দেখেন আপনার আশেপাশে কেউ নেই। তাহলে বুঝে নিবেন এটা খারাপ জ্বীনের কাজ। সে আপনাকে অনুসরণ করছে।
৩/ এছাড়াও আপনি যখন রাতের বেলা বাসায় কাত হয়ে শুয়ে থাকেন। তখন মাঝেমধ্যেই যদি আপনার মনে হয় যে আপনার পিছন থেকে কেউ একজন আপনার কাছে আসছে বা আসার চেষ্টা করছে অথচ আপনার ঘরে আপনি ছাড়া আর কেউ নেই। তাহলে বুঝে নিবেন যে এটা বাসার মধ্যে জ্বীন থাকার একটা স্পষ্ট আলামত।
৪/ এরপর গভীর রাত্রে আপনার বাড়ির আঙ্গিনায় অথবা আপনার বাড়ির আশেপাশে যদি কোন কুকুর অথবা বিড়াল কান্নাকাটি করে এবং এরকমটা যদি আপনি প্রায় সময়ই দেখে থাকেন। তাহলে বুঝে নিবেন যে আপনার বাড়ির আশেপাশে জ্বীনের আনাগোনা রয়েছে।
৫/ এছাড়া যদি এমনটি হয় যে, আপনি আপনার বাসায় আপনার কোন দরকারি বস্তু একটি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে গেছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর লক্ষ করলেন উক্ত স্থানে আপনার দরকারি বস্তুটি আর নেই।
অর্থাৎ সেটি তার নিজ স্থান থেকে অন্য কোথাও সরে গেছে। তাহলে বুঝে নিবেন এটি খারাপ জ্বীনের কারসাজি। এটি যদি প্রথমবার আপনার সঙ্গে ঘটে তাহলে এক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। কেননা এমনটা হতে পারে যে আপনি একটা জায়গায় আপনার একটি দরকারি জিনিস রেখেছেন কিন্তু আপনার মনে নেই।
যদি মাঝেমধ্যেই এমন ঘটনা লক্ষ্য করেন যে, কোনো একটি দরকারি জিনিস এক জায়গায় রেখেছেন কিন্তু ফিরে এসে দেখছেন সেই জিনিসটি আপনার রেখে যাওয়া স্থানে নেই এবং অন্য কোথাও খুঁজে পেয়েছেন। অথবা এমন যদি হয় যে আপনি বাসায় এসে দেখছেন আপনার সাজানো আসবাবপত্র এলোমেলো হয়ে আছে। তাহলে বুঝে নিবেন আপনার বাসায় জ্বীনের বসবাস হয়েছে।
৬/ রাতের বেলা হঠাৎ করে আপনার বাসার ছাদে অথবা আপনার ঘরের দরজায় যদি কেউ ঢিল ছুরে সেটা উপর থেকে অথবা সামনে থেকে যে কোন স্থান থেকেই ঢিল ছুরা হোক না কেন। এমনটা যদি প্রায়ই হয় তাহলে বুঝে নিবেন আপনার বাড়ির আশেপাশে অথবা আপনার বাসার মধ্যে খারাপ জ্বীনের বসবাস রয়েছে।
৭/ অনেক সময় এমন হয়ে থাকে যে আপনি বসে আছেন কিন্তু আপনার আশপাশে কেউ নেই। কিন্তু হঠাৎ দেখবেন আপনার বাসার টিনের চাল অথবা আপনাকে লক্ষ্য করে কেউ ঢিল ছুড়ছে। এমনটি আসলে খারাপ প্রকৃতির জ্বীনগুলো মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য করে থাকে।
৮/ এর পরে আপনার বাড়ির ভেতরে অথবা বাড়ির আঙ্গিনায় হঠাৎ করে দুর্গন্ধ অথবা সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়ছে। এতে করে আপনি বুঝে নেবেন যে আপনার বাড়িতে জ্বীনের আনাগোনা রয়েছে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখবেন যেই সমস্ত জ্বীনগুলো খারাপ তাদের শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং ভালো প্রকৃতির জ্বীনগুলোর শরীর থেকে সুগন্ধি বা আতরের সেন ছড়িয়ে থাকে।
৯/ এরপরে যদি এমন হয় আপনি আপনার বাসায় শুয়ে আছেন। কিন্তু হঠাৎ করে আপনার শরীরের উপর বা মুখের উপরে পানি পরতে থাকে। অথচ বাহিরে কোন বৃষ্টি পরতেছে না। অথবা উপর থেকে ইঁদুর বা বিড়াল আপনার গায়ে প্রস্রাব করবে এমন কোন সম্ভাবনা নেই। তাহলে নিশ্চিত বুঝে নিবেন এটা কোন দুষ্টু জ্বীনের কাজ। এক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে দেখা যায় যে, আপনার বাসায় এক একদিন এক এক জায়গা থেকে পানি পড়েছে। এটি হচ্ছে খারাপ প্রকৃতির জ্বীনগুলো মানুষকে ক্ষতি করার চেষ্টা করে।
১০/ বাড়িতে জ্বীন থাকার আলামত গুলো কি কি পরিবারের অনেকেই প্রায় সময় কোন না কোন খারাপ স্বপ্নগুলি দেখে। যেমন আপনার পরিবারের সদস্যরা প্রায় সময় যদি স্বপ্নের মধ্যে সাপ দেখে অথবা ভয়ংকর কোন জীবজন্তু এসে আক্রমণ করছে এমনটি দেখে। এছাড়া কোনো কারণ ছাড়াই যদি মাঝেমধ্যে বেশি সংখ্যক ভয় পেয়ে যায়। তাহলে বুঝে নিবেন এগুলো সব খারাপ জ্বীনের আলামত।
১১/ সর্বশেষ যদি আপনার পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য সব সময় অসুস্থ হয়ে থাকে। যেমন আপনার পরিবারের কোন একজন ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থা থেকে সেরে উঠেছে। কিন্তু পুনরায় অন্য একজন ব্যক্তি অসুস্থতায় ভুগছে। তাহলে বুঝে নিবেন আপনার বাড়িতে জ্বীনের বসবাস রয়েছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনি এর প্রতিকার করার চেষ্টা করবেন।
জ্বীন প্রতিকার করার নিয়ম
বন্ধুরা জ্বীন প্রতিকার করার জন্য প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় আমাদের শিখিয়ে গেছেন। সেটি হচ্ছে সূরা নাস এবং সূরা ফালাক। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর জ্বীনের আক্রমণ হয়েছে এবং জাদু টোনা ও বান মারা হয়েছিল।
আল্লাহতালা সঙ্গে সঙ্গে নবী করীম সাল্লাল্লাহু সালামের মাধ্যমে পুরা উম্মা জাতির জন্য উপহারস্বরূপ এই দুটি সূরা পাঠিয়ে দেন। এই দুটো সূরা পড়ে আপনি যদি পানিতে ফুঁ দিয়ে পান করেন অথবা নিজের বুকে ফু দেন। এছাড়া পাশাপাশি আয়াতুল কুরসী পড়ে নিজের শরীরের মধ্যে দম করেন।
তাহলে কোনভাবেই কোন খারাপ জ্বীন আপনাকে অথবা আপনার পরিবারকে শত চেষ্টাতেও ক্ষতি করতে পারবে না। এছাড়াও আসরের নামাজের পর এবং ফজরের নামাজের পর নিয়মিত যারা আয়াতুল কুরসী তেলাওয়াত করে পাশাপাশি সূরা নাস এবং সূরা ফালাক তেলাওয়াত করে নামাজের বিছানা থেকে উঠে। তাহলে ঘরের সকল সদস্য খারাপ জ্বীন এবং যাবতীয় জ্বীনের আছরের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে।