বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম! হ্যালো বন্ধুরা! কথা না বাড়িয়ে শুরু করব আজকের পোস্ট । বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেলের আমদানিকারক দেশ চীনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধীরগতি এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারে। চীনে চাহিদা কমে যাওয়ায় সোমবার বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম আবারও কমেছে, বলে জানা গেল বিভিন্ন ধরনের সংবাদ মাধ্যম থেকে।
রয়টার্স সংবাদ মাধ্যম বলছে, আজ সোমবার দ্বিতীয় সেশনে বিশ্ব বাজারে দুই দফায় কমেছে তেলের দাম। অন্যদিকে, বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক কোম্পানি সৌদি আরামকোর প্রধান বলেছেন, তেলের উৎপাদন বাড়াতে তাঁর কোম্পানি প্রস্তুত আছে।
বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারসের দাম প্রতি ব্যারেলে (এক ব্যারেল=১৫৯ লিটার) ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে ৯৭ দশমিক ১ ডলারে নেমেছে। এ ছাড়া, সোমবার প্রথম সেশনে যুক্তরাষ্ট্রের বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের প্রতি ব্যারেলের দাম কমে ৯১ দশমিক ৩ ডলারে হয়েছে। এর আগে, প্রথম সেশনে এই তেলের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে যায়।
গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাঁধার পর থেকেই মন্দাভাব শুরু হয়েছে জ্বালানি তেলের বাজারে। জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শতাংশ হিসেবে গত ৬ মাসে বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম কমেছে ৯ দশমিক ৭ শতাংশ।
চীনের সরকারি তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রুড তেলের আমদানিকারক চীনে গত জুন মাসে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করায় জুলাইয়ে তা কমে যায় বলে জানা গেছে চীনের সংবাদ মাধ্যম থেকে।
চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অপ্রত্যাশিত ধীরগতির কারণে জুলাই মাসে দেশটিতে দৈনিক তেল পরিশোধনের পরিমাণ ১ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে নেমে গেছে। যা ২০২০ সালের মার্চের পর দেশটিতে দৈনিক সর্বনিম্ন তেল পরিশোধন।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমেছে। একদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমাদানিকারক দেশ চীনের চাহিদা কমে যাওয়ার তথ্য প্রকাশ, অন্যদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক কোম্পানি সৌদি অ্যারামকো তেলের উৎপাদন বাড়াতে প্রস্তুত থাকার ঘোষণা দেওয়ায় দাম কমছে তেলের। খবরটি জানা গেছে রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে।
সোমবার বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১ দশমিক ১৪ ডলার বা ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে হয়েছে ৯৭ দশমিক ০১ ডলার। এর আগে শুক্রবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমেছিল ১ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দর প্রতি ব্যারেল এখন ৯১ দশমিক ০৩ ডলার। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম ১ দশমিক ০৬ ডলার বা ১ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। শুক্রবার ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে।
চীন সরকারের প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী অপ্রত্যাশিতভাবে গত জুলাইয়ে চীনের অর্থনীতির গতি কমেছিল। অপর দিকে চীনের দৈনিক পরিশোধিত তেল উৎপাদন কমে হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর চীনের অর্থনীতির গতি ও পরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন এতটা কমেনি।
‘চীন সরকারের প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, জ্বালানি তেলের দামের রেকর্ড হওয়ার কারণে চীনের অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রভাব এবং ভোক্তা চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে দেশটিতে জ্বালানি তেলের চাহিদা অনেকটা কমে গেছে ,মুডিস অ্যানালিটিকস নামের একটি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতিবিদ হেরোন লিন বলেছেন ।
তিনি আরো বলেন, ‘এ বছরের বাকিটা সময়জুড়ে তেলের চাহিদা কম থাকবে। কোভিড বিধিনিষেধে আগাম সতর্কতার কারণে সঞ্চয়ের সঙ্গে তেলের চাহিদাও কমেছে।’এদিকে সৌদি অ্যারামকোও তেলের উৎপাদন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত এই তেল কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী আমিন নাসের রোববার সাংবাদিকদের বলেছেন, সৌদি সরকার অনুরোধ করলে প্রতিদিন সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা ১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করতে প্রস্তুত রয়েছে তারা।আমিন নাসের আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করার সক্ষমতা রাখি। যদি সৌদি সরকার বা আমাদের জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে তেলের উৎপাদন সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তাহলে আমরা দৈনিক সর্বোচ্চ পরিমাণ তেল উৎপাদনের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
বিশ্লেষকেরা বলছেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান যদি ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনর্বহাল করে, তাহলে বাজারে আরও তেল আসবে। কারণ ওয়াশিংটন ও তেহরনের ওই চুক্তি আবার পুনর্বহাল হলে ইরানের তেল রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
বন্ধুরা এই ছিল আজকের পোস্ট। এ রকমই নতুন নতুন পোস্ট করার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে থাকুন। পোস্টটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।