বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেতু! যেকোনো প্রকার প্রতিবন্ধা এড়ানোর জন্য সেতু ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশের সেতুর ব্যবহার এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সেতুর ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এটি শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা উন্নয়ন করে। মোট কথায় দেশের উন্নয়ন করার ক্ষেত্রে এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। আজকের পোষ্টের মূল বিষয় হচ্ছে সেতু। উপরে টাইটেল দেখে আপনি বুঝতে পেরেছেন। তাই আজকের মূল বিষয় হবে সেতু। আজকে আমি আপনাকে জানাবো পৃথিবীর সেরা দশটি সেতু সম্পর্কে । যদি আপনি না জানা থাকে তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। তাহলে স্কিপ না করে পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়েন আর পৃথিবীর দশটি সেতু সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করুন।
দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় চীন ও এশিয়া
আমরা যদি পৃথিবীর দীর্ঘতম সেতু সম্পর্কে আলোচনা করি। তাহলে এগিয়ে থাকবে চীন ও এশিয়া । কারণ এই দেশগুলোতে প্রচুর পরিমাণে লম্বা লম্বা সেতু তারা তৈরি করেছে। আমাদের পোস্টটিতে দশটি সেতুর মধ্যে সাতটি সেতু হলো চিনে। আজকের পোস্টটিতে পদ্মা সেতু কত নম্বর পৃথিবীর বৃহত্তম সেতু মধ্যে সেটিও আপনি জানতে পারবেন। আরেকটি মজার ব্যাপার হলো পৃথিবীর যে দীর্ঘতম বড় সেতু সেটি হলো এশিয়ার বাইরে।
১/তানিয়ার পেনশন ব্রিজ: পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন সেতু এবং সেতুটির দৈর্ঘ্যের জন্য গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড এর নাম লিখেছে। এই সেতু নির্মাণ কাজ ২০০৬ সালের শুরু হয়েছে দীর্ঘ চার বছর পর ২০১০ সালে এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
এর দৈর্ঘ্য 164.8 কিলোমিটার কাজ শেষ হওয়ার পর ২০১১ সালে এর উপর রিয়েল নাইন তৈরি করা হয়। এবং নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। চার বছরে মোট ১০ হাজার শ্রমিক এই সেতুর উপর কাজ করেছে। এই সেতুটি ২০০০ পিলার উপর দাঁড়িয়েছে। সেতুটি নির্মাণের ব্যয় হয়েছে ৮.৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার।
২/চালহুয়াংকুয়াশিয়াং রেল সেতু: তাইওয়ানের এই সেতু পৃথিবীর দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু। এই সেতুর সাথে সংযুক্ত হয়েছে তাইওয়ানের পশ্চিম ও পূর্ব উপকূল। ১৫৬ কিলোমিটারের সেতুটি 2017 সালে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয় ১৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এতে নির্মাণে ঠিক কত ডলার ব্যয় হয়েছে তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
৩/তানজিম গ্রান্ডব ব্রিজ তাইওয়ান: ২০০৬ সালের বেইজিং সাংহাই হাই স্পের অংশ হিসেবে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১১৩.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি ৫ বছর পর ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয় । পৃথিবীর সর্বপ্রথম সেতু হিসেবে ১০০ কিলোমিটার মাইলফলক অতিক্রম করে। এই সেতু করতে কত বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে তার সঠিক হিসাব ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়নি । এটি পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম সেতু।
৪/ট্যাংগার্ড গার্ড ব্রিজ চায়না: পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম এবং দীর্ঘতম এই ব্রিজ চায়নাতে। ১০৫.৮১ কিলোমিটার এই রেল সেতুটি বেইজিং এবং সাংহাইকে যুক্ত করেছে । 2010 সালে এই ব্রিজ টির কাজ শেষ হয়। ১০৫ কিলোমিটার এই ব্রিজে মোট ৩০০০৯৯টি পিলার রয়েছে
৫। ওইনামউইহেড গ্রেট ব্রিজ চায়না: চীনের চানযোজীআন রেলপথের অংশ হলো এটি। ২০০৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তারা জনসাধারণের জন্য ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয় ২০১০ সালে । ৭৯.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু ছিল সে সময় বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু। এই সেতুটি চায়নার কয়েকটি ছোট ছোট নদীর উপর এটিকে তৈরি করা হয়েছে।
৬/ বেননাস্পেস থাইল্যান্ড: এই সেতুটি থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় সেতু। আর পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম এবং দীর্ঘতম সেতু। ২০০০ সালে সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২৭মিটার প্রস্থ সেতুতে রয়েছে ৬টি লেন। এই ৫৪ কিলোমিটার সেতুটি কোন নদীর উপর অবস্থিত নয়। এই সেতু ছোট একটি অংশে নিচ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট্ট একটি নদী। এটি এশিয়া ও আমেরিকা যৌথ বিনিয়োগে নির্মাণ করা হয়। এই সেতু তৈরীর মূল কারণ দুই দেশের সম্পর্ক ভালো হওয়া।
৭/বেইজিং গান ব্রিজ চায়না: চীনের বেশিরভাগ সেতু মূলত রেলপথ । এই সেতুটি মূলত বেইজিং ও সাংঘাই হাইস্পিড রেল এর অংশ। ২০১০ সালের মূলত সেতু তৈরির কাজ শেষ হয়। ২০১১ সালে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর এই সেতু টি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এটি পৃথিবীর পঞ্চম দীর্ঘতম সেতু বলা হয়। যা দৈর্ঘ্য ৪৮.১৫ কিলোমিটার। এই সেতু তে প্রায় 300 কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারে।। এই সেতুটিতে চায়না কত বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে তা বলেনি, এবং ইন্টারনেট থেকেও জানা সম্ভব হয়নি।
৮/লেক পাংচার ট্রেন কোলজিয়ান ব্রিজ: পৃথিবীর দীর্ঘতম দশটি সেতুর মধ্যে নয়টি এশিয়ার মধ্যে। আর এশিয়ার বাইরে একটি সেতু যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। তার নাম হল: লেক পাংচার ট্রেন কোলজিয়ান ব্রিজ। এটি আমেরিকার লুচিয়ানা অবস্থিত। সেতুটি নির্মাণ করা হয় দুই দফায় প্রথম ১৯৫৬ সালে নির্মাণ করা হয় দক্ষিণ অংশ, আর নির্মাণ করা হয় উত্তর অংশ ১৯৬৯ সালে।। সেতুটি ৩৮.৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য। এখানে একটি গাড়ি চলাচলের জন্য পাঁচ ডলার টোল ফ্রি দিতে হয়।
৯/উহান মেট্রো ব্রিজ চায়না: চায়নার উহান শহর যা থেকে প্রথম করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হয়। সেই শহরের মেট্রোরেলের অংশ এই সেতুটি। আর এই সেতুটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৩৭ কিলোমিটার।
১০/ইয়াকুন ব্রিজ: বেইজিং তানজিন অন্তর যোগাযোগের জন্য এই ব্রিজ তৈরি করা হয়। এই সেতুটিরদৈর্ঘ্য ৩৫.৮ কিলোমিটার। এই সেতুটে ৩৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টার স্পিডে ট্রেন চলাচল করতে পারে। ২০০৭ সালে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর এই সেতুটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। (বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেতু)
পদ্মা সেতু কত নম্বরে
পদ্মা সেতু: আসলে পৃথিবীর সকল বড় বড় সেতু তৈরি হয়েছে শক্ত জমিতে । কিন্তু পদ্মা সেতু তৈরি হয়েছে খরস্রোত নদীর উপর। যেখানে বাদ দিতে খরচ হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকা। এবং পাইলিং হয়েছে ১২২ মিটার। এবং নদীর দুইপাশে রেলিং করতে খরচ গেছে অনেক টাকা। এবং ভূমি দখল এবং ভূমি দখল করা মানুষদের ভূমি দান করায় খরচ গেছে অনেক টাকা। এসব কাজের জন্য যে পরিমাণ টাকা গেছে।
এই পদ্মা সেতু কে যদি মাটির উপর করা যেত , তাহলে দ্বিগুণ পদ্মা সেতু করা যেত। অ্যামাজনের পর খরস্রোতের নদী পদ্মা তার কারণে এত টাকা খরচ হয়েছে। এসব বিষয়ে আলোচনা করলে দেখা যায় পদ্মা সেতু পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম সেতু হত। বন্ধুরা আজকের পোস্টে এতটুকুই, দেখা হবে আর নতুন কোন পোস্ট নিয়ে। পোস্টটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।