বন্ধুরা আপনারা যারা মহাকাশ সম্পর্কে জানার আগ্রহী তাদের জন্য আজকের একটি নতুন আপডেট নিউজ। সাম্প্রতিক সময়ে বুধ গ্রহের কিছু অজানা তথ্য জানা গেছে যা শেয়ার করব আজকের এই পোস্টটিতে। তাহলে চলুন বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আজকের পোস্ট-
সৌরজগতের সীমানা পেরিয়ে মহাকাশের গভীরে পৌঁছে গেছে পাইওনিয়ার বা ভয়েজার
সূর্যকে ঘিরে আমাদের এই সৌরজগত সম্পর্কে আরও জানতে অসংখ্য মহাকাশযান ইতিমধ্যেই মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করেছে৷ তবে মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনির মতো দূরের গ্রহ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বাড়লেও সূর্যের কাছের গ্রহ – যেমন বুধ বা শুক্র গ্রহ সম্পর্কে আমাদের ধারণা অনেক কম৷
এবার কিন্তু সেই চিত্র বদলাতে চল।সূর্যের যত কাছে যাওয়া যায়, উত্তাপও সেই অনুপাতে বাড়তে থাকে৷ সেইসঙ্গে সূর্যের মহাকর্ষের টান আরও শক্তিশালী হয়ে যায়৷ ফলে এতকাল মানুষ মূলতঃ সূর্য থেকে দূরেই মহাকাশ অভিযান চালিয়েছে৷ এমনকী সৌরজগতের সীমানা পেরিয়ে মহাকাশের গভীরে পৌঁছে গেছে পাইওনিয়ার বা ভয়েজার-এর মতো যান৷
Mercury –এই মূহূর্তে মেসেঞ্জার নামের এক মহাকাশযান সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ Mercury বা বুধ গ্রহে পৌঁছে গেছে৷ প্রায় ৩০ বছর আগে মারিনার 10 নামের এক যান শেষ বারের মতো বুধ গ্রহের এত কাছাকাছি পৌঁছেছিলো৷ তবে সেই যান শুধু গ্রহের সামনের দিকের ছবি তুলেছিলো৷ সেবার প্রায় ৫৫ শতাংশ অংশ অজ্ঞাত রয়ে গিয়েছিলো৷
মেসেঞ্জার সেই কাজ এবার সম্পূর্ণ করলো৷ প্রায় ২ সপ্তাহ আগে ঐ যান বুধ গ্রহের মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূর থেকে অসংখ্য ছবি তুলেছে এবং নানা রকম যন্ত্রের সাহায্যে নতুন সব তথ্য পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিয়েছে৷
Mercury Dual Imaging System-মেসেঞ্জার মহাকাশযানের মধ্যে যে বিশেষ ক্যামেরা রয়েছে, তার নাম Mercury Dual Imaging System বা (MDIS)৷ এর আগে বুধ গ্রহের এত স্পষ্ট ছবি তোলা হয় নি৷ এতদিন মনে করা হতো, যে বুধ গ্রহের সঙ্গে আমাদের পৃথিবীর চাঁদের বেশ মিল রয়েছে৷ কিন্তু এবার জানা গেলো, যে তা মোটেই ঠিক নয়৷ আপাতদৃষ্টিতে সেখানে চাঁদের মতো বিশাল গর্ত দেখা গেলেও তার গঠন অত্যন্ত জটিল৷
BepiColombo নামের যান বুধ গ্রহে পাঠানোর পরিকল্পনা
শুধু মার্কিন মহাকাশ সংস্থা NASA-ই নয়, জার্মানির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা DLR-ও সেই সব ছবির বিশ্লেষন করেছে৷ এই সব ছবির সাহায্যে বুধ গ্রহের এক নির্ভরযোগ্য মানচিত্র তৈরী করাও সম্ভব হবে৷ এর ফলে ২০১৩ সালে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা BepiColombo নামের যে যান বুধ গ্রহে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে, তার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে৷
সূর্যের সবচেয়ে কাছের ও সৌরজগতের ক্ষুদ্রতম গ্রহ হিসেবে মার্কারি বা বুধগ্রহ রহস্যে ভরা৷ এক বহুমুখী অভিযানের আওতায় ২০২৫ সালে একাধিক যান ও যন্ত্রপাতি সেই সব রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালাবে৷
মহাকাশযানে ১৬টি হাই টেক যন্ত্র রয়েছে৷ বার্লিনের এক গবেষকদল তার মধ্যে একটি তৈরি করেছে৷ তার কাজ থার্মাল বিকিরণ মাপা৷ বুধ গ্রহের উপরিভাগ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা আরও তথ্য সংগ্রহ করতে চান৷
উচ্চ তাপমাত্রায় পৃথিবীর বুকে বিভিন্ন ধরনের পাথরের কী দশা হয়, সবার আগে বিজ্ঞানীরা তা জানার চেষ্টা করেছেন৷ বুধ গ্রহে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে তখন সেই ফলাফলের তুলনা করা যাবে৷ চরম উত্তাপ সত্যি বড় চ্যালেঞ্জ৷ জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টারের ড. ইয়োর্ন হেলব্যার্ট বলেন, ‘‘বুধ গ্রহের যে গোলার্ধ সূর্যের দিকে মুখ করে রয়েছে, সেখানে তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি৷
এবং আমরা তার খুব কাছাকাছি রয়েছি৷ অর্থাৎ আমাদের মহাকাশযান এক টোস্টারের মধ্য দিয়ে যাবে৷ সেটিকে বুধ গ্রহ এবং সূর্যের উত্তাপ সামলাতে হবে৷ অনেকটা সময় জুড়ে এই যানের সহ্যশক্তি নিশ্চিত করার উপযুক্ত ডিজাইন ও যন্ত্রপাতি তৈরির কাজ ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ৷ আমাদের সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহের মতো বুধ গ্রহও বিশাল, আদিম মেঘ থেকে সৃষ্টি হয়েছে৷ সেটা ছিল প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগের ঘটনা৷ সূর্যের প্রাথমিক অবস্থায় তাকে ঘিরে গ্যাস ও ধুলিকণার ঘূর্ণায়মান মেঘ ছিল৷ প্রথমদিকে ক্ষুদ্র পদার্থগুলি পরস্পরের সঙ্গে হালকাভাবে যুক্ত হতে থাকে৷
বুধ গ্রহ কি সূর্যের কাছে তার বর্তমান কক্ষপথেই সৃষ্টি হয়েছে
লক্ষ লক্ষ বছর ধরে সেগুলির আকার বড় হতে থাকে৷ তারপর কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ ধুলিকণার পুঞ্জগুলির মধ্যে সংঘাত ঘটতে থাকে৷ উত্তাপ বাড়ার ফলে সেগুলি আরও নিবিড় হতে শুরু করে৷ ফলে আরও উপাদান সেগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়৷ ধীরে ধীরে গরম গোলাকার আয়তন সৃষ্টি হয় – যা আজকের গ্রহগুলির আদি রূপ৷
সূর্য ও তার জোরালো বিকিরণ থেকে দূরত্ব যত বেশি, বরফের অস্তিত্ব সেই হারে বাড়তে থাকে৷ পানি, মিথেন বা অন্য কোনো তরল গ্যাস দিয়ে তৈরি সেই বরফ৷ এভাবেই শনিগ্রহের মতো বিশালাকার গ্যাসভিত্তিক গ্রহ সৃষ্টি হয়৷ অন্যদিকে সূর্যের কাছাকাছি শক্ত আকারের গ্রহগুলি সৃষ্টি হতে থাকে – অর্থাৎ মঙ্গলগ্রহ, পৃথিবী, শুক্র ও বুধ গ্রহ৷
গবেষকরা কিন্তু তার বদলে গন্ধক ও ক্লোরিনের মতো উপাদান খুঁজে পেয়েছেন৷ ফলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে৷ ড. ইয়োর্ন হেলব্যার্ট বলেন, ‘‘এই সব পদার্থের কিন্তু এত উচ্চ তাপমাত্রায় উবে যাবার কথা৷ সেখানে গন্ধক থাকার কথাই নয়৷
অথচ ভূ-পৃষ্ঠের সাড়ে চার শতাংশ জুড়ে তা রয়েছে৷ ফলে সেটা বিস্ময়ের বড় কারণ বৈকি৷ তাই প্রশ্ন হলো, বুধ গ্রহ কীভাবে তৈরি হয়েছে এবং কোথায় তৈরি হয়েছে৷ বুধ গ্রহ কি সূর্যের কাছে তার বর্তমান কক্ষপথেই সৃষ্টি হয়েছে? তা যদি হয়, তাহলে এত পরিমাণ ভোলাটাইল সালফার সেখানে এল কী করে? সৌরজগতের সৃষ্টি সম্পর্কে আমাদের তত্ত্বের সঙ্গে বিষয়টি একেবারেই মিলছে না৷
বন্ধুরা যে সব নতুন অজানা তথ্য জানা গেছে মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে সবগুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়েছে। এরকম নতুন কোন আপডেট তথ্য প্রকাশিত হলে আমরা আপনাদের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিব। তাই বন্ধুরা আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন তাহলে এই সকল তথ্য জানতে পারবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।