ভারতে ২ হাজার রুপির নোট বাতিলের আসল কারন কি! ভারতের সর্বোচ্চ ২ হাজার রুপির নোট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে বর্তমান নরেন্দ্র মোদি সরকার।
শুক্রবার ভারতের কেন্দ্রীয়ও ব্যাংক জানায় প্রচলিত দুহাজার রুপির নোট তারা বাতিল করে দিবে। ২০১৬ সালে চালু হয়া দুহাজার রুপির নোট আপাতত বিনিময় করা গেলেও এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মধ্যে দুহাজার রুপির নোট গুলো জমা দিতে বলা হয়েছে। ২০১৬ সালেও নরেন্দ্র মোদী সরকার ঠিক একই রকম সিদ্ধান্ত নেয়।
সেসময় অপ্রত্যাশিত ভাবে ৫০০ ও ১০০০ হাজার রুপির নোট বাতিল করেন। এই মানের নোট পাল্টে ব্যাংক থেকে ছোট মানের নোট নিতে নির্দেশ দেওয়া হয় জনসাধারণকে। এবারও যেন তাই মনে করিয়ে দিচ্ছে দেশটির জনগণকে। বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদের মতে এবারের সরকারের এই পদক্ষেপটি খুব বেশি বিপত্তি সৃষ্টি করবেনা হয়ত। কেননা এর আগে ছোট মানের নোট গুলো প্রত্যাহারে খুব বেশি সময় নিয়েছিল দেশটির সরকার। কিন্তু এবারে ধীরে ধীরে এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হবে।
কেন দুহাজার রুপির নোট তুলে নিলো সরকার। ভারতের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও ব্যাংকিং খাতে কি প্রভাব ফেলবে এই নিয়ে আজকে আমাদের এই পোস্টটি। তাহলে বন্ধুরা কথা না বারিয়ে চলুন শুরু করা যাক,….
কেন ২০০০ হাজার রুপির নোট তুলে নিল সরকার
২০১৬ সালে পুরনো মুদ্রা প্রত্যাহারে যে শূন্য স্থান তৈরি হয়েছিল সেটি দ্রুত পুরনে দুহাজার রুপির নোট বাজারে ছাড়া হয়েছিল। তবে কিছুদিন পরেই ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায় তারা এ নোটের প্রচলন কমাতে চায়। এমনকি গত চার বছরে দুহাজার রুপির একটি নোটও ছাপা হয়নি। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে সাধারণ মানুষও এই নোট খুব বেশি ব্যবহার করছেনা। রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া জানায় এই নোট গুলো প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কারন সাধারণ মানুষ এ নোট ব্যাবহারে খুব বেশি আগ্রহী নয়।
নির্বাচনের আগে কেন দুহাজার রুপির নোট বাতিল করল সরকার
সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কেন এই সময়ে দুই হাজার রুপির নোট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে না জানালেও ধারনা করা হচ্ছে দেশটি তে সামনে সাধারণ নির্বাচন আর রাজ্য ও সাধারণ নির্বাচনের আগে অবৈধ লেনদেনের নগত রুপির চাহিদা বেরে জায় ।
এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে দেশটিতে দুহাজার রুপির নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। NNT ফিন্যান্স হোল্ডিং এর প্রধান অর্থনীতিবিদ রুবা রেগে বলেন সাধারন নির্বাচনের আগে এ ধরনের সিদ্ধান্ত খুবি বুদ্ধিমানের কাজ । যারা এসব নোট জমা করছিলো তারা এখন অসুবিধায় পরতে পারেন। ভারতে বর্তমান দুহাজার নোটের পরিমাণ ৪৪.২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই সংখ্যা দেশটিতে বর্তমান যত মুদ্রা রয়েছে তার ১০.৮ শতাংশের সমান।
অর্থনীতিবিদ রুবা রেগে বলেন এই নোট প্রত্যাহারের কারনে বর ধরনের কোন সমস্যা দেখা যাবেনা হয়ত।কারন বাজারে ছোট মানের পর্যাপ্ত নোট রয়েছে। এ ছাড়া গত ছয় সাত বছরে ডিজিটাল লেনদেন এবং ই-কমার্স খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভাবে অনেক বেশি সমৃদ্ধ হয়েছে।
তবে কোয়ান্টিকোর অর্থনীতিবীদ ইউভিকা সিংহালের মতে নগত লেনদেন হয় এমন খাত বিশেষ করে কৃষি এবং নির্মাণ খাতে সামান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেসব মানুষ এসব নোট ব্যাংকে গচ্ছিত রাখার বদলে পণ্য কেনার জন্যে বিশেষ করে স্বর্ণ কেনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে সেখানেও কিছুটা সমস্যা দেখা দেওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
ব্যাংক গুলোতে কি প্রভাব পরবে
যেহেতু সরকার সাধারণ মানুষকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ছোট মূল্যের নোট গুলো জমা দিতে বা বিনিময় করতে বলেছে তাই স্বাভাবিক ভাবে ব্যাংকের আমানত বাড়বে। এই ঘোষণাটি এমন সময় আসলো যখন আমানতের বৃদ্ধি ব্যাংক ঋণ বৃদ্ধির চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।
তাই এটি আমানতের হার বৃদ্ধি চাপ কমিয়ে দিবে বলে মনে করেন অর্থনীতি বিশ্লেষক কার্ত্তিক স্রিনিবাসক। একি সঙ্গে ব্যাংকিং ব্যবস্থার তারল্য বাড়বে । এম.কে গ্লোবাল ফিনান্সিয়াল এর অর্থনীতিবীদ মাধুরি অরোরা বলেন যেহেতু সব দুহাজার রুপির নোট ব্যাংকিং সিস্টেমে ফিরে আসবে তাই প্রচলিত নগত অর্থের পরিমাণ কমবে। এটি ব্যাংকিং সিস্টেমের তারল্য উন্নত করতে সাহায্য করবে।
বন্ড মার্কেটে কি প্রভাব পরবে
অর্থনীতিবীদ শ্রী নিবাসন বলেন উন্নত ব্যাংকিং সিস্টেমের তারল্য এবং ব্যাংক গুলোতে আমানতের প্রভাবের অর্থ হতে পারে স্বল্প মেয়াদী সুদের হার কমে যাওয়া। কারণ এ তহবিল স্বল্প মেয়াদী সকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়ক করা হয়।