মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি! বন্ধুরা যদি কারো বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা মহিলা থাকে তাহলে সে মহিলাকে নিয়ে নানান ধরনের কথা শুরু হয়। এমনকি অনেক আত্মীয় স্বজন কিছু লক্ষণ দেখে বলে দেন ছেলে হবে না মেয়ে। আপনার পরিবারে এক নতুন সদস্য আসতে চলেছে।
এমন খবর পাওয়ার পর থেকেই দেখবেন প্রচুর আত্মীয়-স্বজন আপনাকে নানান ভাবে উপদেশ দেওয়া শুরু করছে। সবচেয়ে বেশি কথোবকথন হয়ে থাকে শিশুর লিঙ্গ নিয়ে। অর্থাৎ পেটে থাকা নবজাতক ছেলে হবে না মেয়ে। সেই নিয়ে সকলে নিজের মতন করে মতামত দিয়ে থাকে।
অনেক পরিবারে আবার মহিলা সদস্যরা নাকি কিছু লক্ষণ দেখেই বলে দিতে পারে আপনার ছেলে হবে না মেয়ে। কিন্তু আসলেই কি এই অনুমান গুলোর কোন সত্যতা রয়েছে বা বিজ্ঞান এই অনুমান গুলো সম্পর্কে কি বলছে।
বিজ্ঞানের মতে যে মুহূর্তে শুক্রানুর সঙ্গে ডিম্বানু মিলে যায় তখনই গর্বের শিশু বাবা মায়ের শরীর থেকে ২৩ টি করে ক্রোমোজোম পেয়ে যায়। লিঙ্গ, চোখের মনি রং, চুলের রঙের মতো কিছু বৈশিষ্ট্য তখনই নির্ধারণ হয়ে যায়।
শিশুর যৌনাঙ্গ অন্তঃসত্তা হওয়ার ১১ সপ্তাহের মাথায় তৈরি হওয়া শুরু হয়। তবে আরো বেশ কিছু সময় না গেলে আল্ট্রাসনোগ্রাফির দ্বারা বোঝা সম্ভব নয় যে গর্ভে থাকা শিশুটি ছেলে না মেয়ে। তবে অনেক দেশেই পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
তাই আত্মীয়রা তাদের পুরাতন বিশ্বাসের উপরেই নির্ভর করে আন্দাজ করে থাকেন। তো বন্ধুরা আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে আলোচনা করব প্রচলিত ধারণায় কি কি লক্ষণ দেখে বোঝা যাবে গর্ভে কন্যা সন্তান রয়েছে।
১/ বমির প্রবণতা
বলা হয়ে থাকে কোন অন্তসত্ত্বা মহিলার যদি বমির প্রবণতা বেশি হয়ে থাকে তাহলে তার গর্ভে কন্যা সন্তান হবে। কেননা কন্যা সন্তান হলে শরীরের মধ্যে হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়ে থাকে। আর এ কারণেই হবু মায়েরা বেশি পরিমাণে বমি করে থাকে। অপরদিকে পেটে পুত্র সন্তান থাকলে বমির প্রবণতা কম হয় এবং শরীর সবসময় প্রফুল্ল থাকে।
২/ ত্বকের জেল্লা
গর্ভে মেয়ে সন্তান থাকলে নাকি মায়ের সৌন্দর্যে ভাগ বসায়। তাই অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যদি আপনার চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে যায় তাহলে মেয়ে সন্তান হবে ধরে নেওয়া যায়।
অপরদিকে ছেলে সন্তান গর্ভে থাকলে এমন সমস্যা হয় না। এমনকি মায়ের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পায়। এমনও বলা হয়ে থাকে ছেলে সন্তান হলে মায়ের চুল লম্বা হয় এবং মেয়ে সন্তান হলে মায়ের চুল পড়তে থাকে। তবে এই ধরনের ধারণার অবশ্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
৩/ খাওয়ার ইচ্ছা
ছেলে সন্তান গর্ভে থাকলে নাকি মায়েদের আচার খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা দেয়। অপরদিকে মেয়ে সন্তান গর্ভ থাকলে মায়েদের মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা দেয়। খাবার পছন্দ এবং অপছন্দের বিষয়টি শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণে কোন প্রবণতা আছে কিনা তা নিয়ে এখনো কোনো গবেষণা করা হয়নি। এটা একটি গ্রাম বাংলার মায়েদের প্রচলিত ধারণা।
৪/ বাচ্চার হার্ট রেট
ভ্রুনের হৃদপন্দনের আলট্রা সাউন্ড এ শোনা যায় এমন কিছু বিশেষণ অনুযায়ী ১৪০ হার্ট রেট হলে ছেলে এবং ১৪০ এর বেশি হলে মেয়ে। পীটাল ডায়গনোসিস এন্ড থেরাপির গবেষণা পত্র অনুযায়ী অন্তঃসত্তা অবস্থায় ছেলে বা মেয়ের হার্ট রেট খুব একটা পার্থক্য বোঝা সম্ভব নয়।
৫/ পেটের আকার
পেটের দিকে তাকিয়ে দেখুন আপনার পেটটি দেখতে কেমন। পেটটি যদি পাকসের আকৃতির মত গোলাকার এবং সুন্দর দেখায় তাহলে আপনার গর্ভে কিন্তু ছেলে সন্তান রয়েছে ধরে নিতে হবে।
আর যদি গর্ভবতী মায়ের পেট চ্যাপ্টা ধরনের হয় অর্থাৎ তরমুজের মত হয়ে থাকে তাহলে সেই গর্ভবতী মায়ের পেটে মেয়ে সন্তান আছে ধরে নিতে হবে। যখন কোন মা ছেলে সন্তান গর্ভে ধারণ করে তখন তার পেট নিচের দিকে হেলে যায়। পাশাপাশি নিচের দিকে অনেক বেশি পরিমাণে ভর অনুভব হয়।
আর যদি কন্যা সন্তান হয়ে থাকে তাহলে পেটের ভর উপর দিকে উঠবে এবং উপর দিকেই পেটটা অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। তবে এই বিষয়ে বিজ্ঞান বলছে মায়ের পেটের আকার ধারণ করবে তার শরীরের ধারণক্ষমতার উপর তার লিঙ্গের উপর নয়।
৬/ শরীরের মধ্যে চর্বি জমা
যদি কোন গর্ভবতী মায়ের পেটে কন্যা সন্তান হয় তাহলে সেই মায়ের শরীরে অনেক বেশি পরিমাণে চর্বি জমা হয়। মানে তার শরীর এবং মুখ ফুলে যাবে। এমনকি পেটো অনেকটা বড় হয়ে যায়।
আর যদি কোন গর্ভবতী মায়ের পেটে ছেলে সন্তান থাকে তাহলে শরীরের চাইতে পেটটা অনেক বেশি বড় হয়ে থাকে। অর্থাৎ পেটের মধ্যেই বেশি চর্বি জমা হয়। এমনকি কোমরের দিকেও কিছু পরিমাণ চর্বি জমা হয়ে থাকে। ফলে দূর থেকে দেখে মনে হয় না যে মহিলাটি গর্ভবতী রয়েছে।
৭/ পেটে কালো দাগ
গর্ভবতী অবস্থায় মায়েদের পেটে ছয় থেকে সাত মাস পর থেকে এই কালো দাগ দেখা যায়। এটি হচ্ছে তলপেট থেকে একেবারে পাঁজর পর্যন্ত একটি দাগ। এই দাগটি লম্বা বরাবর হয়ে থাকে।
এরকম দাগ থাকলে তাদের গর্ভে ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। আর কারো কারো ক্ষেত্রে যদি তলপেট থেকে নাভি পর্যন্ত হয়ে থাকে তাহলে সেই গর্বের মেয়ে সন্তান আছে বলে ধরে নিতে হবে।
বন্ধুরা উপরোক্তই এসব লক্ষণ যে ১০০% সত্য এমনটা কিন্তু নয়। কেননা এই সমস্ত বিষয় বৈজ্ঞানিকভাবে কখনোই স্বীকৃতি পায়নি। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এমনটি ১০০% সত্য বলে দেখা গেছে। ছেলে হবে না মেয়ে তা জানাটা একটি পরিবার বা গর্ভবতী মায়ের কাছে খুবই আনন্দের হয়ে থাকে।
তবে এ বিষয়টি অনুমান করে না জানাটাই সবচেয়ে ভালো। কেননা সৃষ্টিকর্তা সকলের ভাগ্য আগে থেকেই লিখে রেখেছে। তাই সৃষ্টিকর্তার উপরেই আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে।(মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি)
বন্ধুরা অনুমানভিত্তিক এই পোস্টটি আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। আপনি যদি এরকম আরো নতুন নতুন পোস্ট পেতে চান তাহলে All Info360 সাইটটি ফলো করে আমাদের সঙ্গেই থাকুন ধন্যবাদ।