উৎসব

মাহে রমজানকে (রহমত, মাগফেরাত, নাজাত) তিন ভাগে ভাগ করার কারণ

রমজান মাসকে তিন ভাগে ভাগ করার কারণ

রমজান মাসকে তিন ভাগে ভাগ করার কারণ: রোজা হল আল্লাহ প্রদত্ত একটি ইবাদাত। ইসলামিক যে পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে তার মধ্যে রোজা অন্যতম।

আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন যারা আমার উদ্দেশ্যে রমজান মাসের প্রতিটি রোজা পালন করে তাদেরকে আমি নিজ হাতেই এই রোজার প্রতিদান দেব । এছাড়া আল্লাহ তা’আলা আরো বলেছেন রোজ হাশরের ময়দানে রোজাদার ব্যক্তিকে আল্লাহতালা জমজম কূপের পানি পান করবেন এবং তাদের জন্য বিশেষ এক জান্নাতি দরজা খুলে দেবেন।

যে দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদার ব্যক্তিরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। আজকে আমরা রোজার মাসকে কেন তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আপনারা যারা ধর্মভীরু মুসলমান রয়েছেন তাদের জন্য আজকের পোস্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলুন শুরু করি আজকের পোস্টটি।

রমজান মাসকে কেন তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে

আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং তিনি বিশ্বের সকল বিষয় সম্পর্কে অবগত আছেন। আল্লাহ তায়ালা এই বিশ্বে মুসলিম জাহানের জন্য প্রতিবছর একটি মাস পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। আর সেই পরীক্ষায় মুমিন ব্যক্তিরা না খেয়ে আল্লাহর ইবাদত করে।

আর আল্লাহর এই পরীক্ষায় যে মুমিন ব্যক্তি উত্তীর্ণ হয় তারা পরকালে অফুরন্ত সুখ শান্তিতে থাকতে পারে।আমরা সকলে জানি আল্লাহ তায়ালা মুমিন ব্যক্তিদের জন্য সব সময় পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। তবে এসব পরীক্ষার মাঝে তিনি অনেক বেশি বরকত এবং রহমত দান করেন। যার প্রমাণ স্বরূপ আমরা রমজান মাসে দেখতে পাই।

আমরা যদি লক্ষ্য করি তাহলে দেখতে পাই এই রমজান মাসে ধনী গরিব এমন কেউ নেই যে প্রতিদিন মানসম্মত খাদ্য দিয়ে তাদের সেহেরী ও ইফতার সম্পন্ন করে না। সকলেই কম বেশি প্রতিদিন বাজার করে। আর এ মাসের জন্য মুমিন ব্যক্তিরা বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করে। আল্লাহতালা এই মাসকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন।

যেহেতু পুরো একমাস রোজা থাকতে হয় তাই প্রথম দশদিনকে আল্লাহতালা রহমতের দিন বলে উল্লেখ করেছেন, মাঝের দশ দিন আল্লাহতালা মাগফিরাতের দিন বলে উল্লেখ করেছেন এবং শেষের ১০ দিন আল্লাহ তায়ালা নাজাতের দিন বলে উল্লেখ করেছেন। এর মাধ্যমে এই তিন ভাগে আল্লাহ তায়ালা তার মুমিন ব্যক্তিদেরকে বিশেষ রহমত দান করেন। নিচে চলুন এই তিন ভাগের বৈশিষ্ট্য গুলো জেনে নেই। রমজান মাসকে তিন ভাগে ভাগ করার কারণ,

রহমতের ১০ দিন

রমজানের প্রথম ১০ রোজাকে রহমতের দিন বলে আল্লাহতালা উল্লেখ করেছেন। এই সময়ে অনেকেই রয়েছে শুধু প্রথম ১০ দিনের রোজা রেখে থাকে। কারণ তারা মনে করে রমজানের প্রথম ১০ রোজা রাখলে আল্লাহর আশীর্বাদ পাওয়া যায়। এই ১০ রোজায় ঈমানদারগণ তাদের সাধ্যমত গরীব দুঃখীদের দান-সদকা করে থাকেন।

নাজাতের ১০ দিন

নাজাতের ১০ দিনকে বলা হয়ে থাকে ক্ষমার দিন। অর্থাৎ এই দিনগুলোতে ঈমানদার ব্যক্তিগণ আল্লাহতালার কাছে তাদের সকল পাপ কাজের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর ভাইয়ে ভাইয়ে, আত্মীয় স্বজনদের মাঝে বা পারা প্রতিবেশীদের মাঝে কোন বিভেদ থাকলে সেই বিভেদ দূর করার চেষ্টা করে।

মাগফিরাতের ১০ দিন

মাগফিরাতের ১০ দিন কে জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা করার সময় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ একুশে রোজা থেকে ত্রিশে রোজা পর্যন্ত ঈমানদার ব্যক্তিগণ আল্লাহর কাছে জাহান্নামের কঠোর শাস্তি থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য প্রার্থনা করে থাকেন।

আমরা সকলে মুসলমান। তাই আল্লাহর সকল সৃষ্টিকে মেনে নিয়ে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগীতে নিজেদেরকে মশগুল রাখতে সব সময় চেষ্টা করা উচিত। মৃত্যুর পর আরেক জীবন রয়েছে তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করে ভালো কাজগুলোকে গ্রহণ এবং মন্দ কাজগুলোকে বর্জন করা দরকার।

চলমান রমজান মাসের ৩০ টি রোজা যেন আমরা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্য রাখতে পারি এই কামনায় শেষ করছি আজকের পোস্টটি। আশা করি পোস্টটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন ধন্যবাদ।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।