রুয়েল এনফিল্ড কোম্পানির ইতিহাস! রুয়েল অ্যান্ড ফিল্ড কোম্পানির ইতিহাস! বন্ধুরা বর্তমান বিশ্বে রয়েল অ্যান্ড ফিল্ড বাইক গুলো খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
বেশিরভাগ ইয়াং ছেলে মেয়েরা স্পোর্টস বাইকের দিকে না গিয়ে এই রয়েল ইনফিল্ড বাইকেই বেশি পছন্দ করছে। কিন্তু অনেকে কি করে কোন বাইকের বিষয়ে ভালোভাবে না জেনে সেটা কিনে ফেলে এবং পড়ে অনেক সমস্যায় পড়ে।
তাই বন্ধুরা আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে এই রয়েল ইনফিল্ডের বাইকের কি কি ভালো দিক আছে এবং কি কি খারাপ দিক আছে বা কাদের এই বাইকগুলো কেনা উচিত কাদের কেনা উচিত নয় সেই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করব। অনেকে আছে রয়েল ইনফিল্ডের কিছু বাইককে বুলেট নামে চিনে। এটা সম্পূর্ণ ভুল কারণ বুলেট হলো রয়েল এনফিল্ডের একটা মডেলের নাম। বর্তমানে রয়েল ইন ফিল্ডের প্রায় ৯টি মডেল হয়েছে। এর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় এবং সব থেকে বেশি বিক্রি হওয়া মডেলটি হল ক্লাসিক ৩৫০।
বন্ধুরা একটি পোষ্টের মাধ্যমে রয়েল ইনফিল্ডের সকল মডেল সম্পর্কে আলোচনা করা সম্ভব নয়। তাই আমরা পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় যেসব মডেল রয়েছে ওই সমস্ত মডেল নিয়ে এই পোস্টে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
রয়েল এনফিল্ড এর ইতিহাস
প্রথমে একটি কথা বলি কেউ হয়তো জানে না এই রয়েল ইনফিল্ড হল সবথেকে প্রাচীন কোম্পানি। যেটা আজও পর্যন্ত চালু রয়েছে। যদিও ইয়ামাহা কোম্পানিটি ১৮৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু তখন তারা বাইক বানাতো না মিউজিকাল যন্ত্রাংশ বানাতো। তারা বাইক বানানো শুরু করে ১৯৫৫ সাল থেকে। ১৮৯১ সালে ওয়াকার স্মিথ এবং ওয়াকার বিডি নামক দুই ব্যক্তি একটি ছুরি বানানোর কোম্পানি কিনে নিয়ে সাইকেল বানানো শুরু করে। যার নাম ছিল রয়েল ইনফিল্ড সাইকেল মেড লাইক এ গান।
এরপর তারা কয়েকটি চার চাকার সাইকেল বানিয়ে ছিল। কিন্তু সেগুলো ভালোভাবে বাজারে চলেনি এরপর ১৯০১ সালে মানে আজ থেকে প্রায় ১২২ বছর আগে রয়েল এন্ড ফিল্ড প্রথম মোটরসাইকেল তৈরি করে।
সেখান থেকে রয়েল এন্ড ফিল্ডের যাত্রা শুরু হয়। এর পর বছরের পর বছর সেটা আপগ্রেড করতে থাকে। এরপর ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। আর এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এই রয়েল এন্ড ফিল্ডের বাইক প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। কারণ তখন হাতেগোনা বাইক বানানো কয়েকটি কোম্পানি ছিল। যেমন bmw, রয়েল এনফিল্ড সহ হাতে গোনা কয়েকটি কোম্পানি।
yamaha suzuki কোম্পানি গুলোর তখন কোনো অস্তিত্ব ছিল না। আর যে কয়টা কোম্পানি ছিল এই কোম্পানিগুলোর বাইক তখনকার সময়ে সব দেশের জন্য উন্মুক্ত বা ব্যবহার করার অনুমতি ছিল না। কেননা তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। তাই ব্রিটিশ, বেলজিয়াম, ফরাসি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদির মত দেশগুলোর সেনাবাহিনীতে এই রয়েল ইনফিল্ডের বাইক প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধতে রয়েল ইনফিল্ডের সকল মডেল গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে মডেলটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটা হল ফ্লাইং ফ্লি। যার মানে হলো উড়ন্ত মাছি। এই মডেলটির এমন নাম রাখার পেছনে কারণ হলো এটি স্পেশালি উড়োজাহাজ থেকে নিচে ছুঁড়ে ফেলার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। এর মানে যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকদের জন্য এই বাইকটি উড়োজাহাজ থেকে প্যারাসুট দিয়ে ছুড়ে ফেলা হত। এই বাইকে ১২৫ সিসির টু স্টক ইঞ্জিন ছিল। আর সবথেকে বড় ব্যাপার হলো এই বাইকের ওজন মাত্র ৫৬ কেজি ছিল। যার ফলে এই কম ওজনের জন্য এটা প্লেন থেকে প্যারাসুট দিয়ে নিচে ফেলতে সুবিধা হতো।
এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীন হয়ে যায়। এরপর ১৯৪৯ সালে আর কে সুন্দর রাম নামে এক ব্যক্তি অবরফে মাদ্রাস মোটরস কিছু বাইক ভারতে আমদানি করে ভারতের বাজারে বিক্রি করা শুরু করে। এর মধ্যে রয়েল এন্ড ফিল্ডো ছিল। তবে তখন রয়েল এন্ড ফিল্ড ইংল্যান্ডের কোম্পানি ছিল।
রয়েল এন্ডফিল্ড কিভাবে ভারতীয় কোম্পানিতে পরিণত হয়
এরপর ১৯৫২ সালে স্বাধীন ভারতের সরকার ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য মাদ্রাজ মটরসের এই রয়েল এন্ড ফিল্ডের বুলেট ৩৫০ মডেলটি ৫ লক্ষ ইউনিট অর্ডার দিয়েছিল।
এটাই ছিল রয়েল এন্ড ফিল্ডের ভারতীয় কোম্পানি হওয়ার পিছনে সবথেকে বড় কারণ। সেই সময় এত পরিমাণ বাইক ইংল্যান্ড থেকে পুরোপুরি অ্যাসাম্বেল করে আনা সম্ভব হতো না। তাই ১৯৫৫ সালের রয়েল এন্ড ফিল্ড ভারতে সর্বপ্রথম কারখানা তৈরি করে। প্রথমে এই কারখানায় ইংল্যান্ড থেকে পার্টস নিয়ে এসে সেটিং করা হতো। কেননা তখন কোন পার্টস ইন্ডিয়াতে তৈরি করার মত ক্যাপাসিটি ছিল না।
এরপর ধীরে ধীরে ভারতে রয়েল এন্ড ফিল্ডের পার্টস বানানো শুরু হয়। এর মানে সম্পূর্ণ বাইকটি ইন্ডিয়াতে বানানোর জন্য প্রস্তুতি নেয় বা বানানো শুরু হয়। ঐ দিকে ইংল্যান্ডে নানা রকম সমস্যার ফলে রয়েল এন্ড ফিল্ডের কোম্পানি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। এইভাবে রয়েল এন ফিল্ড ইংল্যান্ডের বা ব্রিটিশ কোম্পানি থেকে ভারতীয় কোম্পানিতে পরিণত হয়ে যায়।
রেট্রো লুক ৩৫০
রয়েল এন্ড ফিল্ড এর সব বাইকগুলো রেট্রো ক্লাসিক ডিজাইনের। ইয়ামাহা কেটিএম এর প্রথম মডেলের সাথে আপনি বর্তমানে রয়েল ইনফিল্ডের মডেলের সাথে অনেকটা মিল পাবেন। এর মানে ১৯৪০ বা ৫০ এর দশককে প্রায় সব বাইকগুলোর মডেল একই রকম ছিল। বাকি কোম্পানিগুলো তাদের বাইকের মডেল গুলোকে আপগ্রেড করে করে তখন থেকে এখনকার মডেলের মধ্যে আকাশ পাতালের পার্থক্য করে ফেলেছে। কিন্তু রয়েল এন্ড ফিল্ড সেই পুরনো স্মৃতিকেই বজায় রাখার চেষ্টা করেছে এবং তার মধ্যে নতুন নতুন ফিচার দিয়েছে। এটাকে বলা হয় রেট্রো স্টাইল। তাই ক্লাসিক 350 তে আপনি এমন একটা রেট্রো লুক পাবেন যেটা অনেক পুরনো যুগে চলত।
এরপর আমরা যদি ইঞ্জিনের দিকে তাকাই তাহলে এখানে দেওয়া রয়েছে ৩৪৬ সিসির সিলিন্ডারের একটা আন্ডার এস্কয়ার ইঞ্জিন। এই আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিন সম্পর্কে জানতে হলে আপনি আমাদের পরবর্তী পোস্টটি দেখতে পারেন।এই আন্ডার স্কোয়ার ইঞ্জিন হওয়ার কারণে বাইকের গতি অনেকটা বেড়ে যায়। এর সাথে এই বাইকটিতে আপনি প্রচুর পরিমাণে ওয়েট বহন করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যদি পাহাড়ে ভ্রমণ করতে চান তাহলে এই বাইকটি আপনার জন্য একটি দারুন অপশন হতে পারে।
রয়েল এন্ড ফিল্ডের কিছু জনপ্রিয় মডেল হল,
১/ Royal Enfield Hunter 350,Royal Enfield Bullet 350, Royal Enfield Classic 350
২/ Royal Enfield Super Meteor 650
৩/ Royal Enfield Hunter 350
৪/ Upcoming Models; Royal Enfield Himalayan 450, 2023 Royal Enfield Bullet 350, Royal Enfield Shotgun 650 ,
বন্ধুরা এই পোস্টের মাধ্যমে রয়েল আন্ড ফিল্ডের সকল তথ্য আপনাদেরকে জানাতে চেষ্টা করেছি। রয়েল আন্ড ফিল্ডের আরো বিস্তারিত তথ্য এবং অন্যান্য মডেলের বাইকের দাম জানতে আমাদের পরবর্তী পোস্টটি ফলো করুন ধন্যবাদ।