শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়! শীত প্রতিবছর আগমনের সাথে সাথে মানুষের শরীরের পরিবর্তন হতে শুরু করে। বিশেষ করে হাত-পা এবং মুখ ঠোঁট এগুলো রুক্ষ ও শুষ্ক দেখায়।
এজন্য প্রতিবার শীতে নিজের ত্বকের যত্ন নিতে আমরা কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি বা উপায় অবলম্বন করতে পারি। যে পদ্ধতি বা উপায় গুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে শীতে আমাদের ত্বককে শুষ্ক এবং রুক্ষতার হাত থেকে রক্ষা করতে পারি। এজন্য আমাদের নিম্নোক্ত কাজগুলো বা নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে।
মধু
মধুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান। যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আপনি প্রতিদিন এক চা চামচ মধুর সঙ্গে দুই চামচ মিল্ক পাউডার এবং এক চিমটে হলুদ ভালোভাবে মিশিয়ে ১৫ মিনিট মুখের মধ্যে দিয়ে রাখুন। এতে করে আপনার ত্বক আরো উজ্জ্বল এবং মসৃণ দেখাবে।
ঘি
ঘিতে রয়েছে ময়েশ্চারাইজিং এর উপাদান। যা প্রতিদিন হাত-পা ও মুখে মাখলে ত্বককে আরো মসৃণ ও নরম করে তোলে।
লেবু
লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড। যা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে দিয়ে রাখতে হবে। এরপর পেস্টটি শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন এতে করে ত্বক আরো মসৃণ ও লাবণ্য উজ্জ্বল দেখাবে।
নারকেল তেল
নারিকেল তেল আমরা সকলেই জানি একটি অত্যন্ত কার্যকারী তেল। কেননা এই তেলের মাধ্যমে আমাদের শরীরের শুষ্ক এবং রুক্ষ স্থানগুলি খুব সহজেই মসৃণ এবং নরম করে তোলে। তাই আপনার শরীরের যে অংশ শুষ্ক ও রুক্ষ দেখায় সেই অংশের নারিকেল তেল দিয়ে রাখুন।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা নিয়ে আমাদের নতুন করে কোন কিছু বলার নেই। কেননা আপনারা সকলেই জানেন অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী একটি উদ্ভিদ। তাই প্রতিদিন অ্যালোভেরার রস মুখে ব্যবহার করুন এক্ষেত্রে ধোয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
নিম পাতা
নিম পাতার পাউডার বা গুরর সঙ্গে মধু ও হলুদের গুরু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর ১০ মিনিট মুখের মধ্যে দিয়ে রাখুন। এরপরে ধুয়ে ফেলুন এতে করে ত্বকের মধ্যে যে রুক্ষ ভাব তা দূর হয়ে যাবে।
শীতে যে কাজগুলো করা যাবে না
শীতে আমরা অনেকেই অনেক কিছু না জেনেই ত্বকের মধ্যে বিভিন্ন উপাদান বা অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ব্যবহার করে থাকি। এতে করে শীতকালে আমাদের ঠোঁট, পা ফেটে যায়।
এমনকি আমরা না জানার কারণে অনেক সময় আমাদের ত্বক আরও রুক্ষ ও শুষ্ক দেখায়। যা অত্যন্ত লজ্জার হয়ে থাকে। তাই আমরা নিচে এমন কিছু কাজের কথা উল্লেখ করব যে কাজগুলো শীতের সময় কখনই করবেন না। তাহলে চলুন জেনে নেই।
গরম বা ঠান্ডা পানির ব্যবহার
শীতে কখনোই খুব বেশি ঠান্ডা এবং খুব বেশি গরম পানি মুখে ব্যবহার করবেন না। কেননা এতে করে তৈলাক্ত এবং আর্দ্রতা ভাব দূর হয়ে যায়। এজন্য আপনি কুসুম কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন।
চালের গুরর ফেসপ্যাক
আপনি কখনোই শীতকালে চালের গুরর ফেসপ্যাক ব্যবহার করবেন না। কেননা চালের গুরয় স্টার্চ থাকে যা ত্বকে শুষ্ক করে তুলে। তাই শীত এলে আপনি এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
ঘনঘন মুখ ধোয়া
যাদের ঘন ঘন মুখ ধোয়ার অভ্যাস রয়েছে তারা শীতকালে এই অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। কেননা ঘনঘন মুখ ধুলে ত্বক আরো শুষ্ক ও রুক্ষ দেখায়। তাই শীতকালে এই বদ অভ্যাস থেকে দূরে থাকুন।(শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়)
মেকআপ তুলে ফেলা
শীতে যারা মেকআপ ব্যবহার করেন তারা ঘুমানোর আগে অবশ্যই মেকআপ অলিভ অয়েল তেল দিয়ে হলেও তুলে ফেলেুন। কেননা মেকআপ তুলে না ফেললে সারারাত মুখের মধ্যে মেকাপ থাকার ফলে ত্বক আরো শুষ্ক এবং ফ্যাকাসে হয়ে যায়। তাই আপনি রাত্রে ঘুমানোর আগে অবশ্যই মেকআপ তুলে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
ঠোট এবং পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ
আমাদের অনেকেরই শীতের সময় ঠোট এবং পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। এটির একমাত্র কারণ পানি শূন্যতা। কেননা আমরা অনেকেই রয়েছি যারা শীতের সময়ে খুব কম পানি পান করে থাকি।
ফলে আমাদের শরীরের মধ্যে ডি হাইড্রেট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় বা অনেক ক্ষেত্রেই ডি হাইড্রেট হয়ে পড়ে। তাই এই পানি শূন্যতার কারণে আমাদের ঠোট এবং পায়ের গোড়ালি ফেটে যায় এই সমস্যার সমাধান হিসেবে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।