রাজনীতি

যেসব কারনে শ্রীলংকার অর্থনীতি বিপর্যের মুখে

শ্রীলংকার অর্থনীতি

চরম এক সংকটকাল অতিক্রম করছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র হল শ্রীলংকা। শ্রীলংকার অর্থনীতি! হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন আশা করি ভাল আছেন। আজকের এই পোস্টটিতে জানাবো আমাদের এশিয়া র দীপ রাষ্ট্র শ্রীলংকার দেশটির অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্পর্কে। বর্তমান সময় শ্রীলংকা দেশটির সবচেয়ে খারাপ সময় চলতেছে।

তাই বন্ধুরা আজকের পোস্টটিতে শ্রীলংকার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্পর্কে জানাবো, আসলে কি কি কারনে শ্রীলংকার এই অর্থনৈতিক বিপর্যয়, তা জানার জন্য আজকের এই পোস্টটি,,, তাই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনুরোধ রইল। তাই স্কিপ না করে পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আজকের পোস্ট।

বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট- শ্রীলঙ্কাতে এখন শুধু হাহাকার। জ্বালানী তেল এবং খাদ্য কেনার জন্য উর্ধ্বশ্বাসে হয়ে ছোটাছুটি করছে সাধারণ মানুষ। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে কখনো এতোটা দুরাবস্থায় পড়েনি শ্রীলংকার দেশটি। বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট বেসামাল করে তুলেছে দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনীতি ব্যবস্থা কে ।

বৈদেশিক ঋণের ভারে জর্জরিত শ্রীংলকা দেশটি। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় ঠেকেছে যে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারছে না, বলে জানা গেছে বিবিসি নিউজ থেকে। জিনিসপত্রের দাম এখন আকাশছোঁয়া, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনা অসাধ্য হয়ে চলেছে।

জ্বালানী তেলের তীব্র সংকট – কাগজের অভাবে দেশটির স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ। কারণ, কাগজ আমদানি করার মতো বৈদেশিক মুদ্রা তাদের কাছে একেবারে নেই বললেই চলে।

জ্বালানী তেলের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে শ্রীলঙ্কাতে। তেল সংগ্রহের জন্য হাজার-হাজার মানুষ লাইনে ভিড় করেছে, তারপরও জ্বালানি তেল পাচ্ছে না। দেশটির অবস্থা এত খারাপ যে পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের পেট্রোল পাম্পগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে দেশটির সরকার।

 আড়াইশ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ – কারণ, জ্বালানী তেল আমদানি করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা নেই শ্রীলংকার কাছে, বর্তমানের শ্রীলংকার অবস্থা খুবই বিপদজনক। ইরানের কাছ থেকে জ্বালানী তেল আমদানি বাবদ আড়াইশ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে পারেনি শ্রীলংকা দেশটি ।

এর বিনিময়ে প্রতিমাসে পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চা ইরানে রপ্তানি করবে শ্রীলংকা দেশটি। এভাবে ধীরে ধীরে সে টাকা পরিশোধ করা হবে, বলে জানা গেছে বিবিসি নিউজ থেকে।

অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প

গত ১৫ বছরে শ্রীলংকা বেশ কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে যার কোন সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না দেশটির জন্য । এর মধ্যে সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, রাস্তা এবং আরো নানা ধরণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

মূলত তার কারণেই দেশটির অর্থনৈতিক এত বিপর্যয় ঘটে।কলম্বো পোর্ট সিটি হতে যাচ্ছে এক নতুন দুবাই, তাছাড়াও আরো কিছু অযথা প্রকল্প যেমন, রাজধানী কলম্বোর কাছেই সমুদ্র থেকে ভূমি উদ্ধার করে কলম্বো পোর্ট সিটি নামে আরেকটি শহর তৈরি করা হচ্ছে ।

এইসব প্রকল্প কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ২৫ বছর এবং বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার । যা দেশটির জিডিপি আয়ের এর অর্ধেক ধরা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।

বলা হয় যে, হংকং, দুবাই এবং সিঙ্গাপুরকে টেক্কা দেবে নতুন এই শহরটি। চীনের সাথে একত্রিত হয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে শ্রীলংকা। মূলত এসব প্রকল্পের জন্যই তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এত দুর্বল হয়ে পড়েছে।

বর্তমানে দেশটির এসব প্রকল্পের কোন প্রয়োজন ছিল না।দেশটির বিশ্লেষকরা মনে করেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রীলংকা ঋণ নিয়েছে। বিপুল অর্থ খরচ করা হলেও অনেক প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হয়নি বলে জানা যায়।

অধ্যাপক আবিরত্নে মতে- গত ১৫ বছর ধরে শ্রীলংকায় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ তেমন একটি হয়নি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ক্ষতিগ্রস্ত দ্বিতীয় কারণ বলে ধরা হয়। বিদেশি বিনিয়োগের পরিবর্তে বিভিন্ন সরকার ঋণ করার প্রতি মনোযোগী হয়েছিল বলে জানা যায়।

চীনের কাছে শ্রীলংকান প্রায় পাঁচ মিলিয়ন ডলার

“চীনের কাছ থেকে ঋণ নেয়া সহজ। সেজন্য তাদের কাছ থেকে নিয়েছে। শ্রীলংকার মোট ঋণের ১০ শতাংশ চীন থেকে নেয়া,” বলে জানিয়েছে অধ্যাপক আবিরত্নে।তিনি আরো বলেন, শ্রীলংকার মোট ঋণের ৪৭ শতাংশ বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন বন্ড ইস্যু করে নেয়া হয়েছে।

এইসব অবস্থার কারণে শ্রীলংকা আজকে এই দুঃসময় চলছে।এখন প্রশ্ন হল শ্রীলঙ্কায় কি এই অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান বের করতে পারবে। আর চীন ও অন্যান্য দেশের এই এত বড় ঋণ তারা কি পূরণ করতে পারবে। এখন দেখা যাক শ্রীলংকার কিভাবে সমস্যার সমাধান করতে পারে।

বন্ধুরা আজকের এই ছিল পোস্ট। শ্রীলংকার অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে। বন্ধুরা আরো নতুন অন্য কোন একটি পোষ্টের সাথে আপনাদের সাথে দেখা হচ্ছে । ভালো থাকুন আর আপনার চারপাশ ভালো রাখুন। পোস্টটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।