সৌদি আরব ভিসা এজেন্সির ঠিকানা: বর্তমানে সৌদি আরবে বাংলাদেশের প্রায় ২০ লক্ষ প্রবাসী কর্মরত রয়েছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষেই সৌদি আরবে কর্মসংস্থানে জন্য গিয়ে থাকে। প্রতিবছর হজের জন্যও বিপুল পরিমাণ মানুষ সৌদি আরবে যায়। কারণ সৌদি আরবের মক্কা এবং মদিনা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্রতম স্থান।
যেখানে প্রতি বছর হজ করার জন্য সারা বিশ্বের লাখ লাখ মুসল্লি একত্রিত হয়। বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম নয়। এছাড়া সৌদি আরবে উন্নত চিকিৎসা ও ইসলামিক শিক্ষার জন্য অনেকে গিয়ে থাকে। তবে আমরা অনেকেই জানিনা সৌদি আরবের ভিসা কিভাবে করতে হয়। ফলে অনেকেই নানা রকম বিরম্বনার সম্মুখীন হয়।
আপনি যদি সৌদি আরব যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আজকের পোষ্টটি আপনার জন্য অত্যন্ত স্পেশাল হতে চলেছে। কারণ আজকের এই পোস্টে আমরা সৌদি আরবের ভিসার দাম, কোন কোন ভিসায় সৌদি আরব যাওয়া যায়, সৌদি আরবের ভিসা আবেদন করার নিয়ম সহ অন্যান্য তথ্য বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করব। তাই পোস্টটি স্ক্রিপ্ট না করে পুরোটি পড়ার অনুরোধ রইল।
সৌদি আরব যেতে কোন কোন ভিসা চালু আছে
সৌদি আরব ভিসা এজেন্সির ঠিকানা বাংলাদেশের একটা বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিবছর সৌদি আরব গিয়ে থাকে। এছাড়াও অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা দীর্ঘদিন যাবত সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের কাজ করছে এবং অনেকেই রয়েছে সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
তবে সবার আগে জানতে হবে সৌদি আরবে কোন কোন ভিসাগুলো চালু রয়েছে। তাহলে আপনি নির্দিষ্ট একটি ভিসা সিলেক্ট করে সৌদি আরবে যেতে পারবেন। চলুন সৌদি আরবের ভিসা সম্পর্কে জেনে নেই।
- সৌদি আরব টুরিস্ট ই-ভিসা
- হজ্জ ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা
- বিজনেস কমার্শিয়াল ভিসা
- আমেল মঞ্জিল ভিসা
- আমেল আইদি ভিসা
- কোম্পানি ভিসা
- চাওয়াক খাছ ভিসা
- মাজরার ভিসা
সৌদি আরবের বিভিন্ন ভিসার দাম
আমরা অনেকে রয়েছি সৌদি আরব যাওয়ার জন্য বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে ভিসার দাম সম্পর্কে জানতে চাই। তবে সঠিক তথ্যটি আমরা খুব কমই পেয়ে থাকি। তাই আজকে আমরা নিচে সৌদি আরবের কয়েকটি জনপ্রিয়ও ভিসার দাম সম্পর্কে তুলে ধরলাম।
কেউ যদি সৌদি আরবে টুরিস্ট ভিসায় যেতে চান তাহলে বাংলাদেশী টাকায় ৮০ হাজার টাকার মত খরচ করতে হবে। এক্ষেত্রে সিঙ্গেল টুরিস্ট ৩ মাস এবং ডুয়েল টুরিস্ট ৬ মাস সৌদি আরবে অবস্থান করতে পারবে। আমরা প্রতিবছর সৌদি আরবে হজের জন্য গিয়ে থাকি।
২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে হজ করার জন্য প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার এর বেশি মানুষ গিয়েছে। আর সে বছর হজের জন্য ব্যক্তি প্রতি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ লক্ষ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এছাড়া অনেকেই রয়েছে ওমরা হজ করে থাকে। বাংলাদেশি টাকায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ পড়বে তবে এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ওমরা শেষ করতে হলে খরচ করতে হলে ৭৫ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা।
এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে উচ্চ ইসলামিক শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য অনেকেই সৌদি আরবে গিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে এই ভিসাকে স্টুডেন্ট ভিসা বলে। আর এই স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সৌদি আরবের ২ থেকে ৩ হাজার রিয়াল খরচ করতে হয়। অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকা প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকার বেশি।
পাশাপাশি অনেক সৌদি আরব প্রবাসী রয়েছে যারা তাদের ফ্যামিলিদের সৌদি আরবে নিয়ে থাকে। আর এজন্য ফ্যামিলি ভিসা প্রদান করা হয়। আর এক একটি ফ্যামিলি ভিসার জন্য প্রায় বাংলাদেশি টাকায় ৪ লক্ষ টাকার মত খরচ করতে হয়। এর বাইরেও বিজনেস কমার্শিয়াল ভিসা চালু হয়েছে। এই ভিসার জন্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়।
সৌদি আরবের কাজের ভিসার দাম
সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে। আর এসব কাজের জন্য এক একটি ভিসার দামও ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। নিচে কাজ অনুযায়ী ভিসার দাম উল্লেখ করা হলো।
আমেল মঞ্জিল ভিসা
একজন সৌদি আরবের নাগরিক তার গৃহকর্মের জন্য সর্বোচ্চ ৮ জন কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারে। আর এই ভিসাকে বলা হয় আমেল মঞ্জিল ভিসা। এ ভিসার জন্য একজন বাংলাদেশীকে খরচ করতে হবে ১৫০০ থেকে ২০০০ রিয়াল। যা বাংলাদেশী টাকা প্রায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা।
আমেল আইদি ভিসা
এই ভিসায় আপনি সৌদি আরবের একজন কফিলের অনুমতি নিয়ে যে কোন কাজ করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে খরচ করতে হবে প্রায় ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার রিয়াল।
কোম্পানি ভিসা
সৌদি আরবে বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি রয়েছে যেগুলোতে প্রতিবছর কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। আপনি যদি কোম্পানি ভিসা অ্যাপের মাধ্যমে সৌদি আরবে গিয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে খরচ করতে হবে ২০০০ থেকে ২৫০০ রিয়াল। আর অন্যান্য সকল খরচ মিলিয়ে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩.৫ লাখ থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়তে পারে।
চাওয়াক খাছ ভিসা
এ ভিসার মাধ্যমে একজন বাংলাদেশী মূলত হোম ড্রাইভার হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে ভিসার দাম ধরা হয় ১৫০০ থেকে ১৭০০ রিয়াল। কিন্তু সৌদি আরবের কফিলরা এই ভিসার দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে বাংলাদেশি টাকায় ৩ থেকে ৩.৫০ লক্ষ টাকায়।
মাজরার ভিসা
এই ভিসার মাধ্যমে একজন বাংলাদেশী সৌদি আরবে গিয়ে কৃষি কাজ করে থাকেন। এক্ষেত্রে ভিসার মূল্য ধরা হয় ১৫০০ থেকে ২০০০ রিয়াল। আর সব প্রসেসিং মিলে এই ভিসার দাম পরে বাংলাদেশী টাকায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। বর্তমানে সৌদি আরবের সকল শ্রমিক ভিসার মেয়াদ সর্বনিম্ন ২ বছর করা হয়েছে। এরপর আপনি পর্যায়ক্রমে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে সৌদি আরবে অবস্থান করতে পারবেন।
সৌদি আরবের ভিসা আবেদন করার নিয়ম
সৌদি আরব ২০২৩ সালের ১ মে থেকে ই ভিসা চালু করে। তবে এই ভিসাটি শুধুমাত্র টুরিস্টদের জন্য প্রযোজ্য। এ ছাড়া অন্যান্য ভিসাগুলোর আবেদন করতে গেলে বিভিন্ন ধরনের এজেন্সি বা সৌদি আরব এম্বাসির কাছে যেতে হয়। নিচে সৌদি আরবের ভিসা আবেদন করার নিয়ম গুলো দেওয়া হলো।
১/ আপনি কোন বিষয়ে সৌদি আরব যেতে চান সে বিষয়টি সিলেক্ট করা।
২/ এরপর ঐ ভিসার আবেদন ফরম পূরণ করা।
৩/ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সহকারে জমা দেওয়া।
৪/ এরপরে আপনার ভিসার প্রসেসিং ফি জমা দেওয়া।
৫/ এম্বাসিতে সাক্ষাৎ করতে হবে আপনার দক্ষতা যাচাই করার জন্য।
৬/ টুরিস্ট ভিসা বাদে অন্য ভিসা গুলোতে একটু সময় লাগে। তাই আপনি চাইলেই আপনার ভিসার অবস্থান সম্পর্কে এজেন্সিতে জানতে পারেন।
৭/ সর্বশেষ আপনাকে ভিসা সম্বলিত পাসপোর্ট গ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে সৌদি আরবে কাজের সন্ধানে গেলে আপনাকে অবশ্যই বিএমইটির দক্ষতা যাচাই করতে হবে। অন্যথায় আপনি সৌদি আরবে গেলে কাজ পেতে সমস্যা ও বেতন কম হবে।
সৌদি আরব ভিসা এজেন্সির ঠিকানা
সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত মোট ১৮ টি এজেন্সি রয়েছে। যার মাধ্যমে আপনি সৌদি আরবে যেতে পারেন। নিচে এজেন্সি গুলোর নাম দেওয়া হলো।
- আল খিদ মা কনসালটেন্সি সেন্টার
- আল মাহমুদ কনসালটেন্সি
- আল-মানার কনসালটেন্সি লিমিটেড
- আল নূর কনসালটেন্সি সেন্টার
- বিএস সার্ভিসেস
- জিতকো বিডি সার্ভিস
- লামিক এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড
- এমসি ডিভিশনস বিডি ভিসা সার্ভিস
- মিডল ইস্ট কনসালটেন্সি
- এসকে গ্লোবাল সার্ভিস
- দ্য বিশাজি
- আল হুমাইরা কনসালটেন্সি সার্ভিস
- আলতায়া বা কনসালটেন্সি সেন্টার
- এআই এন্টারপ্রাইজ
- আমিরা কনসালটেন্সি সার্ভিস
- আল মারজান কনসালটেন্সি
- ডিপ্লোম অ্যাট কনসালটেন্সি
- ইন্ট্রাকো কনসালটেন্সি সার্ভিসেস
বন্ধুরা সৌদি আরবের ভিসা সংক্রান্ত আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন। এছাড়া সৌদি আরবের পাসপোর্ট কিভাবে করবেন সে সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের পরবর্তী পোস্টটি ফলো করুন ধন্যবাদ।