লাইফস্টাইল

হার্টকে শক্তিশালী করেত এই ১২টি খাবার খেতেই হবে

হার্টকে শক্তিশালী করার উপায়

হার্টকে শক্তিশালী করার উপায়! বন্ধুরা বর্তমান সময়ে পরিবেশ দূষণ এবং খাদ্যের ভেজাল এর কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের আক্রমণ দেখা দিচ্ছে।

তাদের মধ্যে বিশেষ করে হার্ট এর রোগ বর্তমানে বেশি দেখা দিচ্ছে। এখন সময় এসেছি আমাদের হার্ট এর দিকে মনোযোগ দেওয়ার। তাই বন্ধুরা আজকের পোস্টটি হচ্ছে হার্টকে কিভাবে আপনি শক্তিশালী করবেন, এ বিষয়ে নিয়ে কিছু সহজ টিপ এবং ডাক্তারি পরামর্শ। তাহলে, বন্ধুরা কোথায় না বাড়িয়ে শুরু করা যাক-

প্রতিদিন সকালে উঠে আমরা হাত-মুখ, দাঁত, চোখসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরিষ্কার করি, যত্ন করি। কিন্তু আমাদের শরীরের ভেতরের অঙ্গগুলোর কি কোনো যত্ন নেই? হাত-মুখ, দাঁতের মতো হার্ট, কিডনি, ফুসফুসের যত্ন তো নেয়া যাবে না।

তাহলে কি করা যায়? কি করে নেবেন হার্টের যত্ন? কিভাবে হার্টকে শক্তিশালী করবেন? কি খেলে আপনার হার্ট সব সময় ভালো থাকবে? আসুন সব গুলো প্রশ্নের উত্তর জেনে আসি।

হার্টকে ভালো রাখতে হলে খাবারে তেলের পরিমাণ কমিয়ে দিন

সূর্যমুখী তেল ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ, যা শরীরের এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি সরাসরি হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং আপনার ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যদিও ডাক্তাররা বলেন যেকোনো তেলই শরীরের জন্য ভালো না।

হার্টকে ভালো রাখতে হলে খাবারে তেলের পরিমাণ কমিয়ে দিন। এন্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ‘ই’সমৃদ্ধ সূর্যমুখী তেল গ্রহণ করলে আপনার ত্বক সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে সুরক্ষিত হবে। হাঁপানি (অ্যাজমা), আর্থ্রাইটিস এর তীব্রতা হ্রাস করতেও সূর্যমুখী তেল বিশেষ ভূমিকা রাখে।

মাছ- কিছু মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ যেমন স্যালমন, ম্যাকরেল এবং টুনামাছ। সপ্তাহে অন্তত দুইদিন মাছ রাখুন খাদ্য তালিকায়। নির্দ্বিধায় খাওয়া যাবে ছোট মাছ যেমন- মলা, কাচকি, টাকি, বেলে ইত্যাদি। এ ছাড়াও বেছে নেয়া যেতে পারে পাবদা, শিং, কৈ ও মাগুরকে।

ইলিশ মাছ বেশি করে খাবেন এতে উপকারী চর্বি ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বেশি পরিমাণে থাকে। হাইব্রিড মাছগুলো খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন।

যে মাছগুলো বাদ দেবেন- পাঙ্গাস, হাইব্রিড তেলাপিয়া, রুই। গবেষকরা মনে করেন, সামুদ্রিক মাছ হৃৎপিন্ডের সুস্থতা রক্ষায় সহায়ক। নদীর মিঠা পানির বড় মাছের চর্বি বাদ দিয়ে শুধু মাছটুকু খাওয়া যাবে।

সয়াফুড- সয়বিন থেকে তৈরি পণ্যকে সয়া ফুড বা সয়া প্রোডাক্ট বলে। সয়া প্রোডাক্ট যেমন- সয়া দুধ, সয়া বিন, টফু ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন। এই খাবারগুলো শরীরের থেকে কোলেস্টেরল এবং অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট দূর করে থাকে। সয়া ফুড কেবল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে তা নয়, ভাস্কুলার ফাংশন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।

তাই খাবার মেনু্যতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সয়াবিন রাখুন। সয়াবিন ভালো করে সেদ্ধ করে খান। কারণ হজমে সাহায্যকারী এনজাইম ট্রিপসিনের কার্যকলাপ কিছুটা ব্যাহত করে সয়াবিন। আঁশসমৃদ্ধ সয়াবিন হার্টের জন্য খুব ভালো। প্রতি ১০০ গ্রাম সয়াবিনে পাওয়া যায় ৪৩ গ্রাম প্রোটিন।

কাঠবাদাম- কাঠবাদামের মনো স্যাচুরেটেড ফ্যাট, প্রোটিন ও পটাশিয়াম হার্ট ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কাঠবাদামের ভিটামিন ‘ই’ হার্টের বিভিন্ন রকম রোগ হওয়ার আশঙ্কা দূরে রাখে। কাঠবাদামে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে এবং পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। যেমন অ্যালমন্ড, ছোলা এবং আখরোট ফল।

অলিভ অয়েল- ডায়াবেটিকসের ঝুঁকি কমানো ও ক্যানসার প্রতিরোধের পাশাপাশি দুর্বল হার্টের রোগীদের জন্য অলিভ অয়েল খুবই উপকারী। সম্প্রতি এক গবেষণায় বিষয়টি প্রমাণ করেছেন গবেষকরা।

স্বাস্থ্য সাময়িকী সার্কুলেশনে প্রকাশিত নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দুর্বল হার্টের জন্য জ্বালানি হিসেবে প্রয়োজনীয় চর্বির জোগান দেয় অলিভ অয়েল। সাধারণত একটি হৃদপিন্ড তার স্বাভাবিক সংকোচন ও প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি নেয় শরীরে জমা চর্বি থেকে। কিন্তু দুর্বল হার্ট এই চর্বি গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়।

ফলে হার্ট শুধু ভালোভাবে কাজ করতে পারে না তা নয়, বরং গ্রহণ করতে না পারা চর্বি জমে হৃৎপিন্ডের আর্টারিতে বস্নক বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। অথচ অলিভ অয়েলে আছে ওলিয়েট নামের এক ধরনের উপকারী ফ্যাট যার সহায়তায় দুর্বল হার্ট সহজেই প্রয়োজনীয় চর্বি গ্রহণ করতে পারে।

শিম- করোনারি হার্ট ডিজিস কমাতে সহায়ক হয়ে ওঠে ম্যাগনেশিয়ামপূর্ণ শিম, শস্য এবং সবুজ পাতাবহুল শাক-সবজি। এসব খাবারে স্ট্রোক এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস এর ঝুঁকিও কমে আসে। এক গবেষণায় এসব তথ্য দেয়া হয়। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছিল জার্নাল বিএমসি।

আমলকি- হার্টকে ভালো রাখার জন্য আমলকি সন্দেহাতীতভাবে সবচেয়েভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করে। প্রায় সব ধরনের কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করার এক অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে আমলকির।হার্টকে শক্তিশালী করার উপায়

হলুদ- হার্টের অসুখে হলুদও কার্যকারী ভূমিকা রাখে। এতে এমন এক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা প্রদাহজনিত আক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে।

রসুন- রসুন কার্ডিওভাস্কুলার রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমায় এবং প্রাকৃতিকভাবেই এটা হার্টের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটা শুধু রক্ত চলাচলকেই স্বাভাবিক রাখে না; একইসঙ্গে হার্টকেও সুস্থ রাখে।

আদা- আদা এমন একটি ওষুধি উদ্ভিদ যা রক্তনালিকে বিশ্রাম দেয় এবং রক্ত প্রবাহকে চালু রাখতে সাহায্য করে। হার্টের অসুখের বিরুদ্ধে অ্যান্টি ফ্ল্যামেটরি হিসেবেও যুদ্ধ করে আদা।

বিলবেরি- এটি বস্ন্যাকবেরির মতোই একটি ফল। এটিও হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত এ ফল খেলে হার্টের যে কোনো সমস্যার ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকা যায়। এমনকি এ ফলটি রক্ত চলাচলকেও সচল থাকে।

হার্ট ভালো রাখে লাল মরিচ- লাল মরিচ হার্টের সঠিক ওষুধের কাজ করে। এটা হার্টের জন্য পুষ্টিকর খাবারও বটে। কারণ হার্টের জন্য এর প্রভাব কাঁচামরিচ থেকে ভালো।

সবুজ চা- বর্তমান সময়ে হার্টের জন্য সবচেয়ে বেশি ওষুধের কাজ করে সবুজ চা। এটা শুধু রক্তের শিরাকেই সচল রাখে না; শিরাকে রক্ষাও করে। বর্তমান সময়ে হার্টের জন্য সবচেয়ে বেশি ওষুধের কাজ করে সবুজ চা।

এটা শুধু রক্তের শিরাকেই সচল রাখে না, শিরাকে রক্ষাও করে। গবেষকদের ধারণা, রক্তনালির ওপর গ্রিন টির প্রভাব রয়েছে। নিয়মিত গ্রিন টি গ্রহণ করা হলে রক্তনালি শিথিল হয় এবং রক্তচাপের পরিবর্তন হলেও তা স্বাভাবিক থাকতে পারে। এর ফলে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।