লাইফস্টাইল

কাঁচা আদার উপকারিতা ও বিস্ময়কর ঔষধি গুণ

আদার উপকারিতা

আদার উপকারিতা! বন্ধুরা আপনার শরীরের ৭০% রোগের থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় আপনার বাসায় রয়েছে। তা আপনি জানেন না তার নাম হল আদা, চিকিৎসা বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, মানব শরীরে প্রায় ৭০% রোগের নিরাময় হতে পারে এই আদা। চলুন বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আজকের পোস্ট,,,

মহৌষধ নামে পরিচিত এ আদার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভেষজ গুণ

এই আদার উপকারিতা গুণের দ্বারা আদা আমাদের শরীরের স্বাস্থ্যরক্ষার সাথে সাথে ত্বকের কাজ করে থাকে। নিত্য প্রয়োজনীয় এ আদায় রয়েছে-ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক, লবণ, পটাশিয়াম, ভোলাটাইল, অয়েল ইত্যাদি।

এটি একটি ভেষজ ওষুধ। আদা খাদ্যশিল্পে, পানীয় তৈরিতে, আচার, ওষুধ ও সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। আদা শুকনো অথবা ভেজা দুভাবেই খাওয়া যায়। কেউ কেউ আদার সাথে মধু মিশিয়ে খেয়ে থাকেন।

আদার উপকারিতা ও আদার কিছু গুণাগুণ:

১. আদা আপনাকে পেটের অস্বস্তিদায়ক যন্ত্রণা থেকে বাঁচিয়ে রাখবে। গ্যাস্ট্রিক সমস্যাতেও আদা বেশ কার্যকর। ২. আদা খেলে শরীরের অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দূর হয়।
৩. আদাতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম ও জিঙ্ক যা শরীরের রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
৪. হাজার বছর ধরে আদা এশিয়া মহাদেশে ঠা-া এবং কফজনিত অসুখ নিরাময়ে ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। ৫. আদা খেলে কোলন ক্যান্সার এবং জরায়ুর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
৬. আদা প্রাকৃতিক পেইন কিলার যা ব্যথানাশকের কাজ করে। বাতজনিত গাঁটে ও মাথাব্যথায় আদা বেশ কার্যকর।
৭. আদায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট রয়েছে, যা শরীরের রোগজীবাণু ধ্বংস করে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৮. আদা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির শোষণ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে।
৯. সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ বোধ করলে আদা খেতে পারেন, এতে সমস্যা আস্তে আস্তে কেটে যাবে।

 ক্ষুধামন্দা ভাব থাকলে খাওয়ার আগে একটু আদা খেয়ে নেন

তা কমে গিয়ে বমিভাবও কমে যাবে। নিয়মিত আদা খেলে শরীরের হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা দূর করে। আদা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আদার নির্যাস শরীরের কোষে গ্লুকোজের শোষণক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে দীর্ঘমেয়াদে সুগারের স্তর ঠিক রাখতে ভূমিকা রাখে এবং কোষগুলোতে নির্বিগ্নে ইনসুলিনের চলাচল ঠিক রাখে।রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতেও আদা দারুণ কার্যকরগর্ভধারণের প্রথম দিকে গর্ভবতী মায়ের শরীর সকালবেলা খারাপ লাগতে পারে।

এ সময়ে অল্প অল্প কাঁচা আদা খাওয়ার অভ্যাস করলে সুস্থ থাকা যায়। ১৫. আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপা রোধে আদার রসে খুব উপকার পাওয়া যায়। ১৬. আদার রস দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে, দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা জীবাণুকে ধ্বংস করে।

আদা দেহের ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। আদায় নিহিত অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট যে কোনো কাটাছেঁড়া বা ক্ষতস্থান দ্রুত ভালো করে। ১৮. আদা সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত করে রক্ত পরিসঞ্চালন বৃদ্ধি করে, রক্তনালী প্রসারিত করে।

ফলে শীতকালেও শরীর গরম রাখে। আদার রস রক্তশূন্যতা দূর করে। আদায় ভিটামিন-ই এবি ও সি থাকার কারণে চুল পড়া রোধ করে। নিয়মিত কাঁচা আদা খাওয়ার অভ্যাস চুলের গোড়াকে মজবুত করে। আদা পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে, এটি আবার ত্বকের জন্যও উপকারী।

নিয়মিত আদা খেলে ত্বকের ব্রণ ওঠা বন্ধ হয় এবং ত্বক পরিষ্কার ও মশ্রিণ রাখে। যারা গলার চর্চা করেন তাদের গলা পরিষ্কার রাখার জন্য আদা আর লবণ খুবই উপকারী। বাতব্যথা একটি নিত্য সমস্যা, বিশেষ করে আমবাত হলে- ১ চামচ আদার রস ও ১০ গ্রাম পুরনো আখের গুঁড় মিশিয়ে প্রতিদিন রোজ সকালে ১ বার করে ১ মাস খেলে সেরে যাবে।(আদার উপকারিতা)

জটিল আমাশয় হলে আদা শুকিয়ে গুঁড়া করে ১ গ্রাম পরিমাণ ইষৎ উষ্ণ পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন দু’বার করে ভালো না হওয়া পর্যন্ত খেতে হবে

হিক্কা বা হেঁচকির জন্য এককাপ ছাগলের দুধের সাথে ১ চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে সঙ্গে সঙ্গে ঘন ঘন হেঁচকি সমস্যা কমে যাবে।বসন্ত গুটি হলে ১ চামচ আদার রস ও ১ চামচ তুলসি পাতার রস মিশিয়ে দু’বার খেলেই বসন্তের গুটি বের হয়ে যাবেমাইগ্রেনের ব্যথা, কিডনির জটিলতা দূর করতে আদার ভূমিকা অপরিসীম।বমি বমি ভাব হলে কাঁচা আদা চিবিয়ে খান।অতিরিক্ত ওজন কমাতেও আদা সাহায্য করে।

আদা স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। আদা মল পরিষ্কার করে। আদার রস শরীরকে শীতল রাখে। আদা লিভারের শক্তি, কৃমি নিঃসরণ করে, নাক, কান, গলাজনিত রোগের উপশম করে।আদা খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে।

শরীরের পুষ্টি উপাদানগুলো শোষণ করার ক্ষেত্রে আদা কোষসমূহের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।আদায় থাকা কিছু উপাদান মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে।অনেকে গাড়িতে উঠলে বমি হয় কিংবা বমির ভাব হয়। এ সমস্যা এড়াতে ভ্রমণের আগেই এক টুকরা আদা মুখে ফেলে দিন।

আদা খেলে মহিলাদের মাসিকের সময় তল পেট ব্যথা ও শারীরিক অস্বস্তি দূর হয়। আদা কোলন ক্যান্সার রোধে উপকারী

 প্রতিদিন মাত্র ১ ইঞ্চি পরিমাণের আদা কুচি খাওয়ার অভ্যাস সাইনাসের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। প্রতিদিন কাঁচা আদা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে সহজে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়বে না। আদার মধ্যে যে অ্যান্টিএইজিং উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা দেহের টক্সিন দূর করে এবং দেহে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ত্বকে বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করে।

 আদা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কার্যকরভাবে কমাতে সাহায্য করে। ৪৪. ক্লান্ত মাংসপেশি ও শীতে কুচকে যাওয়া ত্বকের চিকিৎসায়, রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করার জন্য আদার রসের ভূমিকা অতুলনীয়। গরম পানিতে চার টেবিল চামচ আদাকুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিন।

সেই পানিতে গোসল করলে ক্লান্ত মাংশপেশি, কুচকে যাওয়া ত্বক ও রক্ত সঞ্চালন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে।ডায়রিয়ার ব্যাকটেরিয়া দূর করতেও আদার বিকল্প নেই। বার বার আদার রস খেলে ফুড পয়জনিং ও পেটের সমস্যা খুব সহজেই ভালো হয়ে যাবে। অপারেশনের পর কাঁচা আদা খান। দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করবে। আদা বাটা দিনে তিন থেকে চারবার লাগান শ্বেতি রোগ ভালো হয়ে যাবে। একই নিয়মে ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহারে উপকার পাবেন।

আদা খাওয়ার কয়েক পদ্ধতি

১. আদায় সামান্য পানি দিয়ে থেতলে নিন। আদার রস ও আদা গরম পানিতে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন। চা বানানোর জন্যে এই পানি ব্যবহার করুন।
২. আদা ছুলে, সামান্য লেবুর রস মেশান। হজমে এই মিশ্রণ খুব ভালো কাজ করে।
৩. সারা দিনে ৫০ গ্রাম আদা খেতে পারেন। পাউডারড জিঞ্জার আদা চামচ করে দিনে ৩ বার খেতে পারেন। আদা সরু লম্বা করে চিকন করে কেটে নিন। সামান্য লবণ, গোলমরিচ মেশান।
৪. পানি ফুটিয়ে নিন। এবারে দুধ, মসলা, আদার রস, চা পাতা দিয়ে আরো একবার ফুটিয়ে নিন। কাপে চিনি দিয়ে পরিবেশন করুন। ওপরে সামান্য এলাচগুঁড়ো ছড়িয়ে দিতে পারেন।
৫. হজমে সাহায্য করার জন্যে আদা দিয়ে সিরাপ বানিয়ে নিন। জিরে গুঁড়ো, বিট নুন, আদার রস, লেবুর রস, ঠা-া জল একসাথে মিশিয়ে ব্লেন্ড করুন। তৈরি আদার সিরাপ। দুপুরে বা রাতের খাবারের পরে এই সিরাপ খেতে পারেন।
৬. ভিনিগারে আদার টুকরো, লবণ, মরিচ দিয়ে কিছু দিন রাখুন। খাওয়ার সময় আচার হিসেবে খেতে পারেন। তাই আসুন, আল্লাহর দেয়া মহৌষধ আদার সুষ্ঠু ব্যবহার করে দৈনন্দিন জীবনে সুস্থতার ধারা অব্যাহত রাখি।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী আমাদের বাসায় পরিচিত কিছু মসলার মধ্যেই আমাদের শরীরের প্রায় ৮০% ঔষধি গুনাগুন থাকে যেমন আদার, লং ডালমুড়িস , জোয়ান, জিরা,ইত্যাদি। এইসব মসলাগুলো কিছু নিয়ম-নীতির মাধ্যমে সেগুন করলে আমাদের শরীর থেকে প্রায় ৭০-৮০% রোগের নিরাময় করা সম্ভব

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।