লাইফস্টাইল

যে ৪টি লক্ষণে বুজবেন আপনার কিডনি ডেমেজ হতে চলেছে

কিডনি রোগের লক্ষণ

চলুন বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আজকের নতুন পোস্ট। বন্ধুরা আপনারা কি জানেন কিডনি কিভাবে কাজ করে,কিডনি কি?কিডনি হল পাঁজরের খাঁচার নীচে অবস্থিত মুষ্টি আকারের অঙ্গগুলির মধ্যে একটি জোড়া। মেরুদন্ডের প্রতিটি পাশে একটি করে কিডনি রয়েছে।

কিডনি রোগের লক্ষণ কিভাবে বুঝবেন চলুন জেনে নেই তার আগে জেনে নেই কিডনি কিভাবে কাজ করে

কিডনি আমাদের শরীরের অতি-গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।প্রাপ্ত বয়সে একটা কিডনি সাধারণত ১১-১৩ সিমি. লম্বা এবং ৫-৬ সেমি. চওড়া হয় একটব কিডনির ওজন প্রায় ১৫০ গ্রাম। এটি মুলত শরিরে ছাঁকনি হিসেবে কাজ করে। রক্তের সাথে মিশে থাকা বর্জ্য, অতিরিক্ত পানি এবং অনন্য অপ্রয়োজনীয় পদার্থ ছেঁকে পরিশোধিত করে।

কিডনি রোগঃ
পৃথিবীতে যত প্রাণঘাতী রোগ গুলো রয়েছে এর মধ্যে কিডনি রোগ একটি। এটি খুব ধীরে মানবদেহের ক্ষতি সাধন করে, এই কারনে একে নীরব ঘাতকও বলা হয়। খুব জটিল অবস্থা না হলে সাধারণত এর লক্ষণ গুলো ভালোভাবে প্রকাশ পায়না।

কিডনি রোগের ধরণ

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগঃ
দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ দীর্ঘমেয়াদি অবস্থা যা সময়ের সাথে উন্নতি হয় না, এটি সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের কারণে হয়ে থাকে।উচ্চ রক্তচাপ কিডনির জন্য খুবই বিপদজনক, কারণ এটি কিডনির ক্ষুদ্র রক্তনালী গুলির উপর চাপ বাড়িয়ে দেয় এবং অতিরিক্ত চাপে কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস পেতে থাকে।ডায়াবেটিস দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ গুলির একটি প্রধান কারণ। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা রক্তে উচ্চ শর্করার কারণে হয়ে থাকে।অতিরিক্ত শর্করা রক্তনালীদের ক্ষতি করে।

কিডনি পাথরঃ
কিডনির যেসব রোগ এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়েছে এর মধ্যে কিডনি পাথর একটি পুরনো রোগ।

মুত্র নালীর সংক্রমণঃ
মূত্র নালীর সংক্রমণ মূত্রতন্ত্রের যে কোনও অংশে ব্যাকটিরিয়া দ্বারা সৃষ্ট। এই সংক্রমণ সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে এটি কিডনিতে চড়িয়ে পড়ে কিডনির ব্যার্থতার কারণ হতে পারে।

গ্লোমারুলোনফ্রাইটিসঃ
গ্লোমারুলোনফ্রাইটিস হল গ্লোমারুলির প্রদাহ। গ্লেমারুলি কিডনির ভিতরে অত্যন্ত ছোট কাঠামো যা রক্ত পরিশোধন করে। এর সংক্রমন সাধারণত ঔষুদ বা জন্মগত অস্বাভাবিকতার কারণে হয়।

কিডনি রোগের লক্ষণ

সবসময় ক্লান্তি অনুভব।অমনোযোগী।সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখ ফুলে যাওয়া।হাত পা ফুলে যাওয়া।সব সময় ঠান্ডা লাগা।কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপ।শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।

শরীরদুর্বল,ক্ষুধামন্দ্য,বমিবমিভাব নিদ্রাহীনতা ছয় বছরবয়সের পরেও রাত্রে বিচানায় প্রস্রাব করা শরিলে চুলকানি।পিঠের নিচের দিকে ব্যাথা।প্রস্রবের পরিবর্তন, প্রস্রাবকম বেশি হওয়া।প্রস্রাবের সময় ব্যাথা, জ্বালা করা।প্রস্রবের সাথে রক্ত, পুঁজ যাওয়া।প্রস্রবের সাথে পাথর বের হওয়া।কাদের কিডনি রোগে ঝুঁকি বেশিঃযে সকল ব্যক্তির মধ্যে কিডনি রোগের লক্ষন গুলি আছে।

যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে।যাদের ডায়াবেটিস আছে।যারা অতিরিক্ত পরিমাণ ব্যাথানাশক ঔষুদ সেবণ করেন।ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানাজনিত পানিশূন্যতা।বারবার গলার,চামড়ায়, প্রস্রবের সংক্রমণ হয়।পরিবারে বংশগত কিডনি রোগের ইতিহাস আছে।

কিডনি রোগে নির্ণয়ঃ
কিডনি রোগের লক্ষন দেখা দিলে প্রথমে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কিডনি রোগের কিছু পরিক্ষাঃ

সিরাম ক্রিয়েটিনিনঃ
এটি একটি নিদিষ্ট কিডনি ফাংশন টেষ্ট। এর স্বাভাবিক মান পুরুষদের ক্ষেত্রে ০.৬ থেকে ১.৪, এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ০.৫ থেকে ১.২ । কিডনি ঠিকমত কাজ না করলে এর মাত্রা বেড়ে যায়।

প্রস্রাব পরিক্ষাঃ
প্রস্রবের সাথে পুঁজ, প্রটিন, টি.বি জিবানু এবং রক্তকনিকা আছে কিনা এটি নির্ণয় করতে এই পরিক্ষা করা হয়।

মাইক্রোঅ্যালবুমিনেবিয়াঃ
ডায়াবেটিসের কারনে কিডনি খারাপ হওয়া সম্ভবনা আছে কিনা এই পরিক্ষার মধ্যমে অতি দ্রুত নির্ণয় করা যায়।

আইভিপি(ইন্ট্রাভেনাস পাইলোগ্রাফি)

এই পরিক্ষাতে রোগিকে বিশেষ ধরণে আয়োডিনযুক্ত ইনজেকশন দেওয়া হয় এর পর পেটের এক্স-রে নেওয়া হয়। এর সাহায্যে মূত্রনালিতে পাথর, মূত্রনালিতে বাধার কারণ ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়।

আলট্রাসনোগ্রাফঃ এটি কিডনি এবং মূত্রনালীর স্পষ্ট চিত্র তৈরি করে,। কিডনিগুলো খুব ছোট বা বড় কিনা ডাক্তাররা এর মাধ্যমে বুজতেপারেন।এছাড়া সি.টি স্ক্যান,কিডনি বায়োপসি ইত্যাদি পরিক্ষার মাধ্যমে কিডনি রোগ সনাক্ত করা হয়।

কিডনি রোগ প্রতিরোধে করণীয়

যাদের উচ্চরক্তচাপ আছে এবং ডায়াবেটিস আছে এই রোগ গুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা।প্রস্রাবে পরিবর্তন, প্রস্রাব কম বেশি হলে, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া,প্রস্রবের সাথে রক্ত বা পুঁজ গেলে সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।অতিরিক্ত ব্যাথানাশক এবং এন্টিবায়োটিক ঔষুদ সেবন থেকে বিরত থাকা।উচ্চ কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকা।

খাদ্য তালিকা তাজা ফলমূল, সবজি রাখা।পর্যাপ্ত পরিমানে পানি খাওয়া।ধুমপান ও অ্যালকোহল সেবন থেকে বিরত থাকা।পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়াম করা।ওজন কমানো।লবন কম খাওয়া।কিডনি রোগ স্পষ্ট হলে চিকিৎসার ব্যাবস্থা গ্রহন করা।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।