লাইফস্টাইল

গরমে বাচ্চাদের ঘামাচি দূর করার প্রাকৃতিক উপায়

ঘামাচি দূর করার উপায়

ঘামাচি দূর করার উপায়! বন্ধুরা বর্তমান সময়ে প্রচুর গরম পড়ছে। আর এই গরমেই আমাদের যত রকমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। সেই সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে এক নাম্বারের ঘামাচি । গরম মানেই ঘাম, ঘামে ভেজা শরীর, ঘামাচি আর অস্বস্তিকর চুলকানি। ঘামাচি থেকে বাঁচতে বাচ্চাদের সুতি কাপড় পরান।

শরীর উন্মুক্ত রাখবেন না। মনে রাখবেন শরীরের উন্মুক্ত স্নানেই ঘামাচি বেশি হবে। ঘাড়ে, গলায়, বগলে, কুঁচকিতে, পিঠে পাউডার দেবেন। ঘামাচি হলে বরফ ঘষতে পারেন, উপকার পাবেন। চলুন তাহলে বন্ধুরা জেনে নেওয়া যাক আজকের ঘামাচি দূর করার কিছু সহজ উপায়।

গরমে প্রচুর পানি পান করাবেন

কিছু চর্মরোগ গরম এলে বেড়ে যায়। ছত্রাকজনিত রোগ যেমন দাউদ, ছুলি প্রভৃতি এর উদাহরণ। কারণ, গরম এলে শরীরে ঘাম হয় এবং শরীর ভেজা থাকে। আর ভেজা শরীরই হলো ছত্রাক জন্মানোর জন্য উপযুক্ত ক্ষেত্র। এতে শরীরে ছত্রাক বা ফাঙ্গাস জন্মায়। তাই যেসব বাচ্চার শরীরে ঘাম বেশি হয়, তাদের ক্ষেত্রে সব সময় ভেজা কাপড় পরিবর্তন করে দেবেন।

বেড়াতে বের হলে ব্যাগে শিশুর জন্য বাড়তি কাপড় রাখুন। যেন যখন-তখন বদলে দেওয়া যায়। আবার যেসব শিশু স্থূল, তাদের দেহে বেশি ভাঁজ থাকে। সেই ভাঁজের মধ্যে ঘাম আর ময়লা বেশি জমে থাকে বলে এসব স্থানে ছত্রাক বা ফাঙ্গাস বেশি হতে দেখা যায়।

গরমে শিশুদের প্রচুর পানি পান করাবেন। ফলের রস বা জুসও পান করাতে পারেন। এ সময় প্রচুর রসালো মৌসুমি ফল বাজারে পাওয়া যায়। সেগুলো বেশি বেশি খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। ত্বক ভালো থাকবে-

গরমে ঘামাচি-গরমে ঘামাচি আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা অনেক। স্বাভাবিক ঘাম তৈরি হওয়ার পর তা ঘর্মগ্রন্থি থেকে সরু নালির মাধ্যমে ত্বকের উপরিভাগে, অর্থাৎ শরীরের বাইরে চলে আসে।

গরমের সময় অতিরিক্ত ঘামের চাপে ঘর্মগ্রন্থি কিংবা ঘাম শরীরের বাইরে বহনকারী সেই নালিটিই ফেটে যায় এবং ত্বকের নিচে ঘাম জমতে থাকে। ত্বকের নিচে জমে থাকা এই ঘামই ঘামাচি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ঘামাচির বেশ কয়েকটি ধরন রয়েছে। ঘামাচি সৃষ্টির কারণে শরীর থেকে ঘাম ঠিকভাবে বেরিয়ে আসতে পারে না।

সেইসঙ্গে শরীরে সৃষ্ট বাড়তি তাপ বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হয়। এতে গরম আরো বেশি অনুভূত হয়, মাথা ঘোরায়, মাথাব্যথা করে, বমিভাব হয়, জ্বর জ্বর লাগে। সেইসঙ্গে শরীর চুলকাতে থাকে। চুলকাতে চুলকাতে ঘামাচিতে ইনফেকশন হয়ে একজিমার আকার ধারণ করে। অনেক সময় ঘামাচি বড় হয়ে ফোঁড়ায় রূপান্তরিত হয়। উল্লেখ্য, ঘামাচি কখনো লোমের গোড়াকে আক্রান্ত করবে না।

ঘামাচি হলে করণীয়-

• ঠান্ডা পরিবেশে থাকতে হবে। তাই প্রচলিত আছে, ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে গোসল করলে ঘামাচি সেরে যায়। ঘরে এয়ারকন্ডিশনার থাকলে ভালো হয়, তবে ফ্যানের বাতাসও উপকারী।

• দিনে কয়েকবার ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা যেতে পারে।

• বেবি ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।

• ঢিলেঢালা সুতির জামাকাপড় পরতে হবে।

• ক্যালামিলন লোশন ঝাঁকিয়ে ঘামাচি আক্রান্ত শরীরে ঘণ্টাখানেক ধরে লাগিয়ে রেখে সেটি ধুয়ে ফেলতে হবে। এ রকম তিন-চার দিনের বেশি করা যাবে না।

• ঘামাচিতে লাল ভাব দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো কিছুদিন কিউরিল অয়েনমেন্ট দিনে দুবার করে ব্যবহার করে উপকার পাওয়া যেতে পারে।

• আর যদি ফোঁড়া হয়ে যায়, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ মুখে খেতে হবে।

ঘামাচি দূর করার উপায় click here

 চিকিৎসকের পরামর্শে আপনাদের জন্য কিছু টিপস

গ্রীষ্মের দাবদাহে ছোটরা এমনিতেই অস্থির। এর মধ্যে শরীরে ঘামাচি হলে তাদের ভোগান্তি আরও বাড়ে। এটি মূলত ঘর্মগ্রন্থির সমস্যা। শরীরে ঘাম তৈরি হলে ওই গ্রন্থির মাধ্যমে তা ত্বকের উপরিভাগে চলে আসে।

প্রচণ্ড গরমে ঘাম অনেক বেশি তৈরি হয়, তখন এত বেশি পরিমাণ ঘাম ঘর্মগ্রন্থির ছিদ্রপথে বেরোতে পারে না। ফলে তা ত্বকের নিচে এসে জমা হতে থাকে এবং সে স্থান ফুলে ওঠে। এভাবেই ঘামাচি তৈরি হয়, সেই সঙ্গে থাকে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া।

গরমে শিশুদের ঘামাচি থেকে বাঁচাতে করণীয়:

* ঘামাচিগুলোকে নখ দিয়ে খোঁচানো যাবে না।
* পাতলা কাপড় সামান্য ভিজিয়ে শিশুর শরীর মুছে দিন। কাপড়ের ভেতর বরফকুচিও ব্যবহার করতে পারেন।
* শিশুকে যথাসম্ভব শীতল পরিবেশে রাখুন। ফ্যান বা পাখা চালাতে বাধা নেই। ফ্যানের বাতাসে শিশুর ঠান্ডা লাগার ভয় নেই, তার চেয়ে গরমে ঘাম থেকে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা বেশি।
* গরমের দিনে শিশুকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। গোসলের পানিতে কোনো অ্যান্টিসেপ্টিক দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
* শিশুকে হালকা সুতির কাপড় পরান ও প্রচুর পানি পান করান।
* গরমে তেল, লোশন একেবারেই ব্যবহার করবেন না। তবে ঘামাচি পাউডার দিতে পারেন।
লালচে দানার মতো দেখতে সব ফুসকুড়ি বা র্যাশই কিন্তু ঘামাচি নয়। তাই এ ধরনের র্যাশের সঙ্গে জ্বর, সর্দি-কাশি বা অন্য জটিলতা থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডা. আবু সাঈদ
শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

প্রশ্নোত্তর:

প্রশ্ন: বেশিক্ষণ টিভি দেখলে কি চোখের ক্ষতি হয়?
উত্তর: দীর্ঘ সময় টিভি দেখলে চোখে ক্লান্তি আসে। চোখের স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারিয়ে যায় এবং চোখে অস্বস্তি হয়। দীর্ঘদিন এভাবে অনেকটা সময় ধরে টিভি দেখলে ধীরে ধীরে চোখের স্বাভাবিক ক্ষমতা কমে যেতে পারে।অধ্যাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ এই সকল তথ্য আমাদের কে জানিয়েছেন। বিভাগীয় প্রধান, চক্ষু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।