উৎসব

নীলকন্ঠ পাখিকে হিন্দুধর্মের অনুসারীরা কেন পুঁজো ও বিশ্বাস করে

নীলকন্ঠ পাখি

নীলকন্ঠ পাখি কি! বাংলা নীলকন্ঠ একটি অতি পরিচিত পাখি। বাংলা নীলকন্ঠ পাখির  ইংরেজি নাম-Indian roller। এই পাখিটি আমাদের দেশে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না । কিন্তু মাঝে মাঝে অতিথি পাখি হিসেবে আমাদের দেশে আসে।

বর্ণনা

পাখিটি দেখতে আকারে ছোট। কিন্তু পাখিটি অনেক সুন্দর। শরীরের তুলনায় মাথাটি একটু বড়। অন্যান্য ছোট পাখির তুলনায় এই পাখিটি অনেক সুন্দর। পাখিটির মাথার উপরের পালকের রঙ্গ আকাশী রঙ্গের , মনে হয় যেন রাজার মুকুট পরে আছে। পাখিটির ডানা গুলোতে হালকা আকাশী রং এবং গাঢ় সবুজ রঙ্গের মিশ্রন রয়েছে।

পাখিটি ডানা মেলে যখন আকাশে উড়ে তখন পাখিটিকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। পাখিটির শরীরে গাঢ় ও হালকা নীল রঙ্গের পালক রয়েছ। পাখিটির গলা থেকে বুক পর্যন্ত হালকা খয়েরি কালারের মিশ্রন রয়েছে। পাখিটির লেজটি গাঢ় নীল রঙ্গের দেখতে ভারি সুন্দর লাগে।পাখিটির  পিঠটা দেখতে কিছুটা হালকা লাল কালার বা ইট কালার। নীলকন্ঠ পাখি কি

পাখিটির লেজটি নীল কালার এবং পা দুটো হালকা হলুদ কালারের। ঠোট গুলো পাখিটির কালো রঙ্গের এবং পায়ের আঙ্গুল গুলো কালো ও হলুদ কালারের। পাখিটির কন্ঠে কোন নীল নেই কিন্তু তারপরও পাখিটির নাম নীল কন্ঠ। নীল কন্ঠ পাখিটি লম্বায় ৩৫ থেকে ৩৭ সে.মি ,ওজন ১৬৫ গ্রাম,ডানা ১৯ সে.মি, ঠোঁট ৩.৫ সে.মি, পা ২.৫ সে.মি , লেজ ১৩ সে.মি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

নীলকন্ঠ পাখি কি

স্বভাব

নীলকন্ঠ পাখি যে সব গাছে পাতা ঝরে যায় বা পাতা ঝরা গাছ, বা বনের প্রান্তদেশ, ছোট ছোট ঝোপ, গ্রামাঞ্চল বিচরণ করে । পাতাবিহীন ডাল, বেড়ার বাঁশঅথবা বৈদ্যুতিক তারে একাকি বসে থাকতে দেখা যায়। একাকি বসে এরা নিজের লেজটিকে উপর ও নিচে দলায় এবং নিচে দেখে চুপি সাড়ে তাদের শিকার খুজতে থাকে।

যে কোন ঝোঁপে , ঘাসে বা ময়লা কোন যায়গায় আগুন লাগায় পুরানোর সময় এরা চুপি সাড়ে বসে থাকে পোকা মাকড় খোজার জন্য। এপ্রিল ও মে মাস এদের প্রজননের ঝতু। এ  ঝতুতে এরা উচুঁ তীক্ষ্ণ কন্ঠে ডাকে ছেলে মেয়ে উভয়ে মহড়া দেয়।

প্রজনন

নীলকন্ঠ পাখির প্রজনন কাল খুব অল্প সময়। এদের প্রজনন কাল বসন্ত কাল। একি নিয়মে প্রতি বছর বসন্ত কালে এরা ডিম দেয়। শুধু মাএ ডিম পাড়ার সময় পুরুষ ও মহিলা নীলকন্ঠ পাখি এক হয়। এরা উচুঁ উচুঁ পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট গর্ত করে এরা বাসা তৈরি করে। কিছু পরিমান সামান্য খড়কুটো দিয়েও এরা বাসা তৈরি করে থাকে। বাসা তৈরি করার পর নীলকন্ঠ ২ থেকে ৩ দিন সময় নিয়ে থাকে। তার পরপরে  মেয়ে নীলকন্ঠ পাখি ডিম দিয়ে থাকে।

সাধারনত একটি মেয়ে নীলকন্ঠ পাখিতিন থেকে চারটি ডিম দিয়ে থাকে। ছেলে ও মেয়ে নীলকন্ঠ পাখি একসাথে ডিমে তা দিয়ে থাকে। তারা ডিমে ১৮ থেকে ২০ দিন তা দেওয়ার পর বাচ্চা বের হয় ডিম থেকে।

নীলকন্ঠ পাখি কি

নীলকন্ঠ পাখির খাদ্য তালিকা

এরা সাধারনত পোকা মাকড়, কীটপতঙ্গ, ব্যাঙ্গ, টিকটিকি  এবং গিরগিটি ইত্যাদি খেয়ে থাকে। বাচ্চা দেওয়ার পর পুরুষ নীলকন্ঠ পাখি খাবার সংগ্রহ করে আনে এবং মহিলা নীলকন্ঠ পাখি সেই বাচ্চা দের খাওয়ায়।

বিস্তর

নীলকন্ঠ পাখিরা সমগ্র ভারত, গারো পাহাড়ে বাংলাদেশের, পার্বত্য চট্রগ্রাম সহ সমগ্র দক্ষিন এশিয়াতে এরা বিচরন করে থাকে। সারা সময় এরা ঘুরে বেরালেও প্রজননের সময় এরা এক হয়ে থাকে।

অবস্থা

নীলকন্ঠ পাখিকে বাংলার বিপদমুক্ত পাখি হিসেবে ঘোষানা করা হয়েছে । গত তিন বছর ধরে এদের সংখ্যা কমে গেলেও বাংলাদেশে বর্তমানে ১০,০০০ হাজারেরও বেশি নীলকন্ঠ পাখি আছে। সে কারনে আই . ইউ. ‍সি. এন এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্থ বলে ঘোষনা করেছে। বাংলাদেশে ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রানী আইনে এই বাংলার নীলকন্ঠকে সংরক্ষিত বলে ঘোষনা করা হয়েছে।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।