26 March Kobita! Dear Friends, are you searching for Independence Day poems online? Then you have come to the right place. In today’s article, we will present you with a collection of Independence Day poems. Poems written on the occasion of the famous Independence Day of famous poets of Bangladesh and the world will be with us in this article.
If you want to read Independence Day poems, you can easily collect them from this article. In this article, we have highlighted the poems of world-famous writers and poets on the occasion of Independence Day. You can collect some wonderful poems from one article.
স্বাধীনতা দিবসের কবিতা ২০২৪
অনেক কষ্টের বিনিময়ে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। এক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আমরা জীবন দিয়ে রক্ষা করব। তাই স্বাধীনতা দিবস নিয়ে পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ কবি সাহিত্যিকগণ হাজার হাজার কবিতা লিখে গেছে। সেরকমই কিছু বিখ্যাত কবিতা আজকের এই নিবন্ধে আমরা তুলে ধরেছি।
একটি পতাকা পেলে–
- হেলাল হাফিজকথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
- আমি আর লিখবো না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা
- কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
- ভজন গায়িকা সেই সন্ন্যাসিনী সবিতা মিস্ট্রেস
- ব্যর্থ চল্লিশে বসে বলবেন,–’পেয়েছি, পেয়েছি’।
- কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
- পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে
- ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে।
- কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
- ভূমিহীন মনুমিয়া গাইবে তৃপ্তির গান জ্যৈষ্ঠে-বোশেখে,
- বাঁচবে যুদ্ধের শিশু সসন্মানে সাদা দুতে-ভাতে।
- কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
- আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে,
- সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে সমান সুখের ভাগ
- সকলেই নিয়ে যাবো নিজের সংসারে।
স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো–
- নির্মলেন্দু গুণএকটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে
- লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে
- ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’
- এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,
- এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,
- এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না৷
- তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?
- তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে
- ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হদৃয় মাঠখানি?
- জানি, সেদিনের সব স্মৃতি ,মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত
- কালো হাত৷ তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ
- কবির বিরুদ্ধে কবি,
- মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,
- বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,
- উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,
- মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ … ৷
- হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,
- শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি
- একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে
- লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প৷
- সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর৷
- না পার্ক না ফুলের বাগান, — এসবের কিছুই ছিল না,
- শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত
- ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়৷
- আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল
- এই ধু ধু মাঠের সবুজে৷
- কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে
- এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,
- লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক,
- পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক৷
- হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,
- নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে
- আর তোমাদের মত শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে৷
- একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল
- প্রতীক্ষা মানুষের: “কখন আসবে কবি?’ “কখন আসবে কবি?’
- শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
- রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
- অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷
- তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,
- হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার
- সকল দুয়ার খোলা৷ কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?
- গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:
- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷’
- সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের৷
স্বাধীনতা, উলঙ্গ কিশোর–
- নির্মলেন্দু গুণজননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উল্ঙ্গ শিশুর মত
- বেরিয়ে এসেছো পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও।
- তোমার পরমায়ু বৃদ্ধি পাক আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে,
- প্রাত্যহিক বাহুর পেশীতে, জীবনের রাজপথে,
- মিছিলে মিছিলে; তুমি বেঁচে থাকো, তুমি দীর্ঘজীবী হও।
- তোমার হা-করা মুখে প্রতিদিন সূর্যোদয় থেকে
- সূর্যাস্ত অবধি হরতাল ছিল একদিন,
- ছিল ধর্মঘট, ছিলো কারখানার ধুলো।
- তুমি বেঁচেছিলে মানুষের কলকোলাহলে,
- জননীর নাভিমূলে ক্ষতচিহ্ন রেখে
- যে তুমি উল্ঙ্গ শিশু রাজপথে বেরিয়ে এসেছো,
- সে-ই তুমি আর কতদিন ‘স্বাধীনতা, স্বাধীনতা’ বলে
- ঘুরবে উলঙ্গ হয়ে পথে পথে সম্রাটের মতো?
- জননীর নাভিমূল থেকে ক্ষতচিহ্ন মুছে দিয়ে
- উদ্ধত হাতের মুঠোয় নেচে ওঠা, বেঁচে থাকা
- হে আমার দূঃখ, স্বাধীনতা, তুমিও পোশাক পরো;
- ক্ষান্ত করো উলঙ্গ ভ্রমণ, নয়তো আমারো শরীরি থেকে
- ছিঁড়ে ফেলো স্বাধীনতা নামের পতাকা।
- বলো উলঙ্গতা স্বাধীনতা নয়,
- বলো দূঃখ কোনো স্বাধীনতা নয়,
- বলো ক্ষুধা কোন স্বাধীনতা নয়,
- বলো ঘৃণা কোন স্বাধীনতা নয়।
- জননীর নাভিমূল ছিন্ন-করা রক্তজ কিশোর তুমি
- স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও। তুমি বেঁচে থাকো
- আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে, প্রেমে, বল পেন্সিলের
- যথেচ্ছ অক্ষরে,
- শব্দে,
- যৌবনে,
- কবিতায়।
স্বাধীনতা তুমি– শামসুর রাহমানস্বাধীনতা তুমি
- রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।
- স্বাধীনতা তুমি
- কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো
- মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-
- স্বাধীনতা তুমি
- শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা
- স্বাধীনতা তুমি
- পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।
- স্বাধীনতা তুমি
- ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি।
- স্বাধীনতা তুমি
- রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।
- স্বাধীনতা তুমি
- মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশী।
- স্বাধীনতা তুমি
- অন্ধকারের খাঁ খাঁ সীমান্তে মুক্তিসেনার চোখের ঝিলিক।
- স্বাধীনতা তুমি
- বটের ছায়ায় তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর
- শানিত কথার ঝলসানি-লাগা সতেজ ভাষণ।
- স্বাধীনতা তুমি
- চা-খানায় আর মাঠে-ময়দানে ঝোড়ো সংলাপ।
- স্বাধীনতা তুমি
- কালবোশেখীর দিগন্তজোড়া মত্ত ঝাপটা।
- স্বাধীনতা তুমি
- শ্রাবণে অকূল মেঘনার বুক
- স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।
- স্বাধীনতা তুমি
- উঠানে ছড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপন।
- স্বাধীনতা তুমি
- বোনের হাতের নম্র পাতায় মেহেদীর রঙ।
- স্বাধীনতা তুমি বন্ধুর হাতে তারার মতন জ্বলজ্বলে এক রাঙা পোস্টার।
- স্বাধীনতা তুমি
- গৃহিণীর ঘন খোলা কালো চুল,
- হাওয়ায় হাওয়ায় বুনো উদ্দাম।
- স্বাধীনতা তুমি
- খোকার গায়ের রঙিন কোর্তা,
- খুকীর অমন তুলতুলে গালে
- রৌদ্রের খেলা।
- স্বাধীনতা তুমি
- বাগানের ঘর, কোকিলের গান,
- বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা,
- যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।
তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা– শামসুর রাহমান তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,
- তোমাকে পাওয়ার জন্যে
- আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?
- আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ?
- তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
- সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,
- সিঁথির সিঁদুর গেল হরিদাসীর।
- তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
- শহরের বুকে জলপাইয়ের রঙের ট্যাঙ্ক এলো
- দানবের মত চিত্কার করতে করতে
- তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
- ছাত্রাবাস বস্তি উজাড় হলো। রিকয়েললেস রাইফেল
- আর মেশিনগান খই ফোটালো যত্রতত্র।
- তুমি আসবে ব’লে, ছাই হলো গ্রামের পর গ্রাম।
- তুমি আসবে ব’লে, বিধ্বস্ত পাড়ায় প্রভূর বাস্তুভিটার
- ভগ্নস্তূপে দাঁড়িয়ে একটানা আর্তনাদ করলো একটা কুকুর।
- তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
- অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিলো পিতামাতার লাশের উপর।
- তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা, তোমাকে পাওয়ার জন্যে
- আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?
- আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ?
- স্বাধীনতা, তোমার জন্যে এক থুত্থুরে বুড়ো
- উদাস দাওয়ায় ব’সে আছেন – তাঁর চোখের নিচে অপরাহ্ণের
- দুর্বল আলোর ঝিলিক, বাতাসে নড়ছে চুল।
- স্বাধীনতা, তোমার জন্যে
- মোল্লাবাড়ির এক বিধবা দাঁড়িয়ে আছে
- নড়বড়ে খুঁটি ধ’রে দগ্ধ ঘরের।
- স্বাধীনতা, তোমার জন্যে
- হাড্ডিসার এক অনাথ কিশোরী শূন্য থালা হাতে
- বসে আছে পথের ধারে।
- তোমার জন্যে,
- সগীর আলী, শাহবাজপুরের সেই জোয়ান কৃষক,
- কেষ্ট দাস, জেলেপাড়ার সবচেয়ে সাহসী লোকটা,
- মতলব মিয়া, মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি,
- গাজী গাজী ব’লে নৌকা চালায় উদ্দান ঝড়ে
- রুস্তম শেখ, ঢাকার রিকশাওয়ালা, যার ফুসফুস
- এখন পোকার দখলে
- আর রাইফেল কাঁধে বনে জঙ্গলে ঘুড়ে বেড়ানো
- সেই তেজী তরুণ যার পদভারে
- একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হ’তে চলেছে –
- সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জন্যে, হে স্বাধীনতা।
- পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জলন্ত
- ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে,
- মতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক
- এই বাংলায়
- তোমাকেই আসতে হবে, হে স্বাধীনতা।