ব্যবসায় উদ্যোগ

এমটিএফই এর প্রতারণায় হাজার কোটি টাকা গায়েব

এমটিএফই কিভাবে প্রতারণা করলো

এমটিএফই কিভাবে প্রতারণা করলো! ঘুরে ফিরে আবারো আলোচনায় এম এল এম ব্যবসা। গ্রাহকদের অধিক লাভ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সর্বস্ব লুট করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পালিয়ে যাওয়ার চিত্র বহু পুরনো। এতে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।

তবুও অনিয়ন্ত্রিত এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা বন্ধে কোন স্থায়ী সমাধান নিতে দেখা যায়নি প্রশাসনকে। সর্বশেষ গ্রাহকদের ১১ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা হয়েছে এমটিএফই নামে একটি প্রতিষ্ঠান। গেল বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় এম এল এম ব্যবসার ফাত অবৈধ অনলাইন গেমিং ক্রিপ্টো ট্রেনিং করা দুবাই ভিত্তিক কোম্পানি এমটিএফই। ধারণা করা হচ্ছে এই কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।

 তবে এই কোম্পানিটি প্রথম নয় এর আগেও একই পন্থায় সাধারণ মানুষের টাকা লুট করে পালিয়ে গেছে বহু প্রতিষ্ঠান। অনেক বেশি মুনাফার ফাঁদে ফেলে গ্রাহকদের টাকা লুটের সবচেয়ে বড় দুটি উদাহরণ ডেসটিনি ও যুবক।

এই দুটি প্রতিষ্ঠান সাধারণ গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৭ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ৪,১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্তসাদ ও পাচারের অভিযোগে বিচার চলছে ডেসটিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহ ২২ জনের বিরুদ্ধে। এই প্রতারণার তালিকায় আছে যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি বা যুবক এর নামও।

২০০৮-২১ বিভিন্ন কোম্পানির প্রতারণা

১৯৯৬ সালে যুবকের নিবন্ধন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলো নিবন্ধকের কার্যালয়। বেশি মুনাফার লোফ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয় সংস্থাটি।

এছাড়া ১০ মাসে টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় কথিত মাল্টিলেভেল কোম্পানি Unipay2u। ২০১১ সালে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আর্থসাথ ও পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এছাড়া গ্রাহকদের ১৭ হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় এহসান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ নামের একটি কোম্পানি। পরে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এহসান ও তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করে র‍্যাপ।

এর আগে ২০২১ সালে মার্চ মাসে অন্তত দশটি অনলাইন এম এল এম কোম্পানি গ্রাহকের কয়েকশো কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এর মধ্যে রয়েছে ইনসাফ 7, 2 like, gold rash, gold লাইনের মত আরও অনেক কোম্পানি। এছাড়া ২০০৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২৬৬ টি সমবায় সমিতি প্রায় ৪১০০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। এসব অর্থের অধিকাংশ অর্থই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে বলে অনেকের ধারণা।

ভারত থেকেও কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে এমটিএফই

এমটিএফই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকেই নয় ভারত থেকেও কোটি কোটি রুপি আর্তসাথ করেছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ছত্রিশগড়, মহারাষ্ট্র ও আসাম রাজ্য সহ বহু রাজ্যে প্রতারণার জাল পেতেছিল প্রতিষ্ঠানটি রোববার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাতের আরিফ বাড়ি এলাকার বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করেন।

তাদের দাবি শুধু বারাসাত এলাকায় প্রায় দেড় হাজার বিনিয়োগকারী থেকে প্রায় পঞ্চাশ কোটি রুপীর বেশি আত্মসাৎ করেছে প্রতিষ্ঠানের দুই সিইও প্রণয়দেব ও জহুরুল ইসলাম। বারাসাত এলাকায় একাধিক হোটেল ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে তাদের। এছাড়া কলকাতার নিউটাউনে আবাসন খাতে বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য পাওয়া গেছে।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।