Uncategorized

খালি পেটে নিমপাতা খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে নিমপাতা খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে নিমপাতা খাওয়ার উপকারিতা! বন্ধুরা নিম পাতা আমাদের শরীরের জন্য কতটুকু উপকারি হয়তো আমরা সকলেই জানি। নিমপাতা নিয়মিত সকালে খালি পেটে খেলে শরীর থেকে নানান ধরনের রোগ বালাই দূর হয়ে যায়। কিন্তু এই জন্য আপনাকে সঠিক নিয়মে নিম পাতা খেতে হবে।

কেননা নিমপাতা একটি প্রাকৃতিক ঔষধি গাছ বা ঔষধি পাতা যেটা সঠিক নিয়মে না খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এজন্যই আমরা আজকে আপনাদেরকে এই পোস্টটের মাধ্যমে জানাবো নিম পাতা কিভাবে খেলে আপনার উপকারে আসবে এবং এর উপকারিতা গুণ গুলো কি কি সেই সম্পর্কে। তাহলে চলুন শুরু করি আজকের পোস্টটি,

আপনি যদি কোনরকম নিয়ম ছাড়া নিমপাতা একটানা সাত দিনের অধিক ব্যবহার করেন তাহলে  আপনার শরীর ভয়ংকর ভাবে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। নিমপাতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে থাকে।

যাদের শরীরের রক্ত অপরিষ্কার হয়ে যায় তাদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয় প্রতিদিন সকালে নিমপাতার রস বা নিম পাতা খাওয়া জন্য। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদেরকেও বলা হয় প্রতিদিন নিম পাতা সেবন করার জন্য। কিন্তু একটি বিষয় কেউই বলতে চায় না যে, এই নিম পাতা কতদিন খেলে এ সকল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

ধরুন আপনি প্রতিদিন সকালে নিম খাচ্ছেন। কিন্তু এই নিম পাতা যদি আপনি একটানা সাত দিনের অধিক ব্যবহার করেন তাহলে ধীরে ধীরে আপনার চোখের জ্যোতি কমতে থাকবে। এভাবে আপনি যদি এক থেকে টানা তিন মাস সেবন করে থাকেন তাহলে আপনি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। আসলে এটি আপনাকে ভয় দেখানোর জন্য বলা হচ্ছে না।

যেটি পরীক্ষাগারে পাওয়া গেছে সেই তথ্যই আমি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি। কেননা আয়ুর্বেদ বইয়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে কেউ যেন কখনোই নিম পাতা একটানা সাত দিনের অধিক ব্যবহার না করে। যদি তা করে তাহলে ভয়ংকর অসুখের মুখে পড়তে পারে।

নিম পাতা খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নিম পাতাকে ঈশ্বর প্রদত্ত ঔষধ বলা হয়ে থাকে। কিন্তু এই ঔষধকে অবশ্যই সঠিক নিয়মে সেবন করতে হবে। আর এর জন্য সঠিক নিয়ম জানাটা আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। তাহলে চলুন জেনে নেই নিম পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং এটি কোন কোন রোগের জন্য উপকারী।

১/ চর্মরোগ নিরাময়

যদি আপনার শরীরের স্কিনে কোন ধরনের চর্মরোগ থাকে বা কোন ব্রণ বা পিম্পল থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে যে আপনার রক্ত অপরিষ্কার। এজন্য আপনাকে টানা এক সপ্তাহ নিম পাতা খেতে হবে। কেননা নিম পাতা রক্ত শুদ্ধিকরণের কাজ করে থাকে। এজন্য আপনাকে প্রতিদিন সকালে নিম গাছের কচি পাতা সংগ্রহ করতে হবে।

কেননা নিমের কচি পাতায় অনেক বেশি পরিমাণে রক্ত পরিষ্কার করার উপাদান থাকে। এই পাতা সংগ্রহ করার পর প্রতিদিন সকালে আপনাকে এক থেকে দুইটি পাতা খেতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন অবশ্যই একদিন গ্যাপ দিয়ে দিয়ে খেতে হবে। ধরুন যদি আপনি শনিবারে খান তাহলে অবশ্যই রবিবারে গ্যাপ দিয়ে সোমবারে খেতে হবে। এভাবে আপনি সাত দিন নিম গাছের কচি পাতা খাবেন।

২/ পেটের যাবতীয় সমস্যা দুর করে

যদি কারো পেটের মধ্যে কৃমি থাকে, কফের সমস্যা হয়, হজম হয় না, সকালে পেট পরিষ্কার হয় না তাহলে তারা সপ্তাহে একদিন এই নিম গাছের পাতা সেবন করবেন। এভাবেই টানা কয়েক সপ্তাহ এই নিম গাছের পাতা সেবন করলে আপনার যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে। এজন্য অবশ্যই মনে রাখবেন সদ্য গোঁজানো নিমপাতা খেজান।

৩/ দাউদ থেকে মুক্তি

আপনার যদি অনেক পুরনো দাউদ থেকে থাকে আর সে দাউদ যদি ঔষধেও নাসারে। তাহলে আপনি এই চর্মরোগকে চিরতরে বিদায় করার জন্য ১০ থেকে ১৫ টি নিম পাতা নিয়ে শিলপাটায় পিষে পেস্ট তৈরি করে নেবেন।

এরপরে উক্ত স্থানে ভালোভাবে লাগিয়ে দিয়ে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর পুনরায় পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অবশ্যই মনে রাখবেন কখনোই সাবান ব্যবহার করা যাবে না। এভাবে আপনি কয়েকদিন ব্যবহার করলেই এর উপকারিতা সম্পর্কে স্পষ্ট জানতে পারবেন।

৪/ এন্টিবডি তৈরিতে সহায়তা

এছাড়া যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম তারা চাইলেই প্রতিদিন সকালে দুটি করে নিম পাতা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের মধ্যে এন্টিবডি তৈরি করতে পারেন। কেননা প্রতিদিন সকালে দুটি করে নিম পাতা খাওয়ার ফলে মানব শরীরে খুব শক্তিশালী এন্টি বডি তৈরি হয়। ফলে অন্যান্য সংক্রমণ বা ছোঁয়াচে রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।

৫/ মাথার খুশকি দুর করে

নিম পাতা চুল পড়া বন্ধে অত্যন্ত কার্যকরী একটি প্রাকৃতিক উপাদান। যাদের চুল কম বয়সে পড়ে যাচ্ছে অথবা চুলের মধ্যে খুশকি হয়েছে, অনেক ধরনের ঔষধ ব্যবহার বা শ্যাম্পু ব্যবহার করেও যা দূর করা যাচ্ছে না। তাদের জন্য নিম পাতা হতে পারে একটি অত্যন্ত উপকারী উপাদান।

এজন্য আপনাকে সবার প্রথমে নিতে হবে টক দই এবং নিম পাতার পেস্ট। টক দই এর মধ্যে ২ চা চামচ বা পরিমাণ মত নিম পাতার পেস্ট নিয়ে ভালো করে মিকচার করতে হবে। এরপর এটাকে গোসল করার অন্তত আধাঘন্টা থেকে এক ঘন্টা আগে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করে দিতে হবে।

এরপর যেকোনো আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু দিয়ে চুলগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে দুই থেকে তিন দিন টানা ব্যবহার করলে চুল থেকে খুশকি একদম চলে যাবে এবং পাশাপাশি চুল পড়া অনেক অংশে কমে যাবে।

বন্ধুরা নিম পাতার  উপরোক্ত এসব ব্যবহার জেনে আপনার কি রকম লাগলো তা আমাদের কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানিয়ে দিন এবং এরকম প্রাকৃতিক ঔষধি গাছ সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের সাইটটি ফলো করে সঙ্গেই থাকুন ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।