রাজনীতি

রাশিয়া যে মিসাইল দিয়ে পরমাণু হামলা করবে ইউক্রেনে

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ সর্বশেষ! রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে এবার উঠে আসলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। পশ্চিমারা বলছে এবার ইউক্রেনে পরমাণু হামলা চালাতে পারে রাশিয়া যার বেশ কিছু প্রমাণ তারা ইতিমধ্যে হাতে পেয়েছে।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ সর্বশেষ

যদি রাশিয়া  ইউক্রেনে পরমাণু হামলা চালায়। তাহলে কোন অস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালাতে পারে। সেই সম্পর্কেই আজকে জানবো এই পোস্টটিতে। তাহলে বন্ধুরা চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আজকের পোস্টটি। যারা ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী আজকের পোস্টটি তাদের জন্য খুবই স্পেশাল।

ইউক্রেনে রাশিয়া কি পরমাণু বোমা ব্যবহার করবে? যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রশ্ন বারবার ঘুরে ফিরে সামনে এসেছে। রাশিয়া যদি পরমাণু হামলা করেই বসে সেটা কিভাবে করবে। এর সম্ভাব্য উপায় জানিয়েছে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং নিরাপত্তা কাউন্সিলের সহকারী প্রধান দ্বিমিত্রি মেদ্ভেদেব। আর তা হল পরমাণু হামলা চালাতে সবচেয়ে গতি সম্পন্ন হাইপারসনিক মিসাইল ব্যবহার করবেন তারা। যার নাম অ্যাভেনগার্ড। রাশিয়ার হাইপারসনিক মিসাইল এর বহর বেশ বড়। এরই মধ্যে এই ধরনের অস্ত্র তারা ব্যবহার করেছে। সে হিসেবে হাইপারসনিক অস্ত্র ব্যবহার করা প্রথম দেশও রাশিয়া। কিয়েভে মোতায়েন করা আমেরিকার অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি করেছে রাশিয়া। যেটি পেট্রিয়েট  কিংঝাল মিসাইল ব্যবহার করে করা হয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে অ্যাভেন গার্ড হাইপারসনিক গ্লাইট ভেরিকল সজ্জিত একটি রেজিমেন্ট রুশ সামরিক বাহিনীতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হলেও কোন শত্রুর বিরুদ্ধে এখনো তা ব্যবহার হয়নি।

হাইপারসনিক মিসাইল কি

শব্দের চেয়ে ৫ গুন বা তার চেয়ে বেশি গতিসম্পন্ন মিসাইলকে বলা হয় হাইপারসনিক মিসাইল। এরই মধ্যে রাশিয়া এবং চীনের পর এই ধরনের অস্ত্র অর্জনের দাবি করেছে ইরান। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, উত্তর, কোরিয়া এবং ভারতের মতো কয়েকটি দেশ এই হাইপারসনিক অস্ত্র নিয়ে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত যতগুলো হাইপারসনিক মিসাইল এসেছে তার মধ্যে সবচেয়ে গতি সম্পন্ন মিসাইল হলো অ্যাভেন গার্ড।

রুশ কর্মকর্তাদের দাবি এই মিশাইল মার্ক 27 বা শব্দের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে। অর্থাৎ ঘন্টায় প্রায় ৩৩ হাজার কিলোমিটার গতি অর্জন করতে পারে অ্যাভেন গার্ড। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাসের দাবি এর সর্বোচ্চ পাল্লা ৬০০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ মাত্র ১১ মিনিটেরও কম সময়ে সর্বোচ্চ দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে এই মিসাইল। ২ হাজার কেজি ওজনের অ্যাভেন গার্ড দুই ম্যেগাটন ওজনের ওয়াড় হেড বহন করতে পারে। যা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় পরমাণু অস্ত্রের চেয়ে দ্বিগুণ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোসীমায় যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছিল তার চেয়ে ১৩০ গুণ বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন।

অ্যাভেন গাট মিসাইল প্রকল্প

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক থিঙ্ক টেং সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ সিএসআইএস এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। ১৯৮০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে অ্যাভেন গাট মিসাইল প্রকল্প প্রথম হাতে নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৯০ দশকে এসে রাশিয়ান সমরাস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এন পি ও প্রজেক্ট ফর টু জিরো টু নামে একটি প্রকল্প পুনরায় শুরু করে। ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের এন্ট্রি ব্যালেন্সটিক মিসাইল প্রজেক্ট স্বাক্ষরিত হয়।

এর মাধ্যমে দুই দেশ ব্যালিস্টিক মিসাইল বিরোধী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সীমিত রাখার বিষয়ে একমত হয়। এর লক্ষ্য ছিল পরস্পরকে দমিয়ে রাখার জন্য যাতে পরমাণু অস্ত্র উৎপাদন এবং মজুদ বাড়ানোর প্রয়োজন না পড়ে। কিন্তু ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে থাকে। অপরদিকে রাশিয়া জোর দেয় এমন মিসাইল অর্জনের যা যুক্তরাষ্ট্রের মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমকে পরাস্ত করে পরমাণু বোমা হামলা চালাতে পারে। প্রেসিডেন্ট পুতিন  বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে কৌশলগত মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করছে তা ভবিষ্যতে আমাদের পরমাণু অস্ত্রের সক্ষমতাকে অসাড় করে দিতে পারে। এই কারণেই আমরা এই ধরনের অস্ত্র তৈরি করেছি।

অ্যাভেন গার্ডের বহন ক্ষমতা

কৌশলগত পরমাণু এবং প্রচলিত এই দুই ধরনের পেলট বহন করতে পারে অ্যাভেন গার্ড। ভূমি থেকে আলাদা একটি ব্যালিস্টিক মিসাইলের সাহায্যে অ্যাভেন গার্ড উৎক্ষেপণ করা হয়। প্রায় ১০০ কিলোমিটার যাওয়ার পর এটি রকেট থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং লক্ষ্যের দিকে হাইপারসনিক গতিতে ছুটে চলে। এই অবস্থায় গতিপথ পরিবর্তনের বিশেষ ক্ষমতা আছে এই মিথাইলের। ফলে যে কোন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে এটি কে আটকানো অত্যন্ত কঠিন।

২০১৮ সালে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেন এই ক্ষেপণাস্ত্র বর্তমান বিশ্বের যে কোন মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমকে পরাস্ত করতে সক্ষম।

বন্ধুরা পুতিন কি আদৌ ইউক্রেনে পারমাণবিক হামলা চালাবে? আপনার কি মনে হয়? অবশ্যই আপনার বক্তব্য আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের আপডেট জানার জন্য আমাদের সাইটটি ফলো করুন ধন্যবাদ।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।