উৎসব

কাশ্মীরি ভাপা পিঠা ও ধুপি পিঠা দিয়ে শুরু করুন শীতের সকাল

শীতের ভাপা পিঠা তৈরির নিয়ম

শীতের ভাপা পিঠা তৈরির নিয়ম! শীত মানেই বাঙ্গালীদের একটি উৎসবের ঋতু। যদিও এই সময়টাতে শীতের প্রকোপ অনেক বেশি থাকার কারণে বিভিন্ন কাজকর্মে যেতে সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটে থাকলেও এই সময়টায় বাঙালির জন জীবনে একটি উৎসবের আমেজ বয়ে যায়।

কারণ এই সময়টাতে গ্রাম বাংলায় নতুন আতপ চালের পিঠা, পায়েস, ক্ষীর সহ অন্যান্য লোভনীয় খাদ্য তৈরি করা হয়। বিশেষ করে শীতের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় খাদ্য হচ্ছে পিঠা। আর এই পিঠার মধ্যে অবশ্যই ভাপা পিঠা অন্যতম। কেননা বাঙালির যেকোনো শীতকালীন উৎসবের সঙ্গে ভাবা পিঠা নিবিড়ভাবে জড়িত।

এমনও দেখা গেছে গ্রাম বাংলার মায়েরা সারারাত ঢেঁকিতে চাল কুটে শীতের খুব সকালে ভাপা পিঠা তৈরি করে বাড়ির সকলকে খাইয়ে থাকেন। পাশাপাশি তাদের নিকটস্থ আত্মীয় স্বজনদের বিতরণ করেন এবং দূর-দূরান্তের আপনজনদের দাওয়াত দিয়ে ভাপা পিঠা খাইয়ে থাকেন।

ভাপা পিঠার প্রস্তুত প্রণালী

বর্তমান সময়ে মানুষ অত্যন্ত ব্যস্ত থাকার কারণে আমরা দেখে থাকি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাদ্যগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। এমনকি শীতকালীন সময়ে আমাদের সকলের অত্যান্ত জনপ্রিয় ভাপা পিঠা তৈরির সময়টিও মানুষ এখন খুব একটা পায় না।

তাই তারা বাজার থেকে বা বিভিন্ন রাস্তা ঘাটের ভ্রাম্যমান দোকানগুলো থেকে বাহারি স্বাদের ভাপা পিঠা খেয়ে থাকে। আর এই পিঠা গুলোর মধ্যে কাশ্মীরি ভাপা পিঠা এবং ধুপি উঠা ভাপা পিঠা অত্যন্ত জনপ্রিয়। আজকে আমরা এই দুটি ভাপা পিঠা তৈরি প্রস্তুত প্রাণী সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো।

কাশ্মীরি ভাপা পিঠা

শীতকালীন সময়ে এটি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পিঠা। এমনকি শীতকালীন বিভিন্ন দোকানগুলোতে এই পিঠাটি অত্যান্ত সুপরিচিত এবং অত্যন্ত সুস্বাদু। বাসায় অনেকেই এই পিঠাটি তৈরি করতে চায়না। এর মূল কারণ কাশ্মীরি ভাপা পিঠা তৈরি করতে একের অধিক অনেকগুলো উপকরণ প্রয়োজন হয়।

যার কারণে অনেকেই এই পিঠাটি তৈরি না করে বাজার থেকেই কিনে খেয়ে থাকে। কিন্তু আপনি চাইলেই আপনার বাসার সকলকে খাওয়ানোর জন্য অল্প সংখ্যক কিছু উপকরণের মাধ্যমে কাশ্মীরি ভাপা পিঠা তৈরি করতে পারেন। এই পিঠাটি তৈরি করতে যেসব উপকরণ লাগবে,

  • আতপ চালের গুঁড়া: ২ কাপ
  • পোলাওর চালের গুঁড়া: ১ কাপ
  • তরল দুধ: ১ কাপ
  • খেজুরের গুড়: ১ কাপ
  • মাওয়া: ৩ টেবিল চামচ
  • পেস্তাবাদাম: ২ টেবিল চামচ
  • কাজুবাদাম: ২ টেবিল চামচ
  • কিশমিশ: ৩ টেবিল চামচ
  • কাঠবাদাম: ২ টেবিল চামচ
  • লবণ: সামান্য

প্রস্তুত প্রণালী

কাশ্মীরি ভাপা পিঠা তৈরি করার জন্য প্রথমে চালের গুঁড়ার সঙ্গে পরিমাণ মতো লবণ এবং দুধ নিয়ে মেখে এক থেকে দেড় ঘন্টার বেশি সময় রেখে দিতে হবে। এরপর চালুনি দিয়ে খুব সুন্দর করে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে।

নেওয়ার পর হাঁড়িতে গরম পানি উত্তপ্ত করতে হবে। গরম পানি উত্তপ্ত হয়ে গেলে একটি বাটিতে তৈরি কৃত ঝুরঝুরে চালের গুড়া অর্ধেক পরিমাণ নিয়ে সেখানে উপরে উল্লেখিত উপকরণগুলো অল্প অল্প করে নিয়ে বসিয়ে দিন এবং মাটির বাকি অর্ধেকে ঝুরঝুরে চালের গুড়া পুনরায় দিয়ে উত্তপ্ত গরম পানিতে বসিয়ে এক থেকে দুই মিনিট রাখলেই কাশ্মীরি ভাপা পিঠা তৈরি হয়ে যাবে এবং মনে রাখবেন অবশ্যই এই পিঠাটি গরম গরম পরিবেশন করবেন। (শীতের ভাপা পিঠা তৈরির নিয়ম)

ধুপি বা ভাপা পিঠা

আমরা গ্রাম বাংলার সচরাচর সকল গাড়িগুলোতে দেখে থাকি এই পিঠাটি সকলেই খেয়ে থাকে। কেননা এই পিঠাটি তৈরি করতে খুব অল্প পরিমাণ উপকরণের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও অনেকে আবার ধুপি পিঠা খেতে পছন্দ করে। এই পিঠাটি তৈরি করতে যেসব উপকরণ লাগবে তা হল,

  • সুগন্ধী আতপ চালের গুঁড়ো: ৪ কাপ
  • নারিকেল কোরা: ২ কাপ
  • খেজুর গুড়: ৬০০ গ্রাম
  • ঘন দুধ: ২ কাপ
  • সন্দেশ: ২ কাপ
  • লবণ: পরিমাণমতো

প্রস্তুত প্রণালী

এই পিঠাটি তৈরি করতে প্রথমে চালের গুঁড়ো, লবণ এবং হালকা গরম পানি ও দুধ নিয়ে মিকচার করতে হবে। যাতে করে চালের গুঁড়ো ঝুরঝুরে হয়। এরপর একটি স্টিলের বাটিতে করে কিছু পরিমাণ চালের গুঁড়ো নিয়ে মাঝখানে নারীকেল, খেজুরের গুড়, সন্দেশ দিয়ে বাকি অর্ধেক চালের গুঁড়ো দিয়ে পূরণ করে উত্তপ্ত হাঁড়িতে বসিয়ে দিলেই কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভাপা পিঠা তৈরি হয়ে যাবে এবং এই পিঠাটি অবশ্যই গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।