উৎসব

শীতে খেজুরের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা

 শীতে খেজুরের রসের উপকারিতা

শীতে খেজুরের রসের উপকারিতা! বন্ধুরা শীত চলে এসেছে। আর এই শীতে আমরা নানান রকম সুস্বাদু খাবার গুলো তৈরি করে থাকি এবং বিভিন্ন ধরনের আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত দিয়ে এসব খাবার গুলো খাওয়ানোর চেষ্টা করি।

এছাড়াও আমরাও মাঝেমধ্যে অন্যনের বাসায় গিয়ে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের খাবারগুলো খেয়ে থাকি। এটিই হচ্ছে গ্রাম বাংলার একটি চিরচেনা রূপ।

প্রতিবার শীত এলেই আমরা যেরকম বিভিন্ন ধরনের রংবেরঙের খাবার গুলো খেয়ে থাকি ঠিক একইভাবে অনেকেই রয়েছে খুব ভোরে খেজুরের গাছ থেকে নামানো খেজুরের রস খাওয়া খুবই পছন্দ করে। কেননা শুধুমাত্র শীতকালীন সময়েই খেজুরের রস পাওয়া যায়।

আর এই রস খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। আমরা গ্রামবাংলায় দেখে থাকি গাছিরা শীতকালে খুব সকালে তাদের কলসগুলো গাছ থেকে নামিয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করে এবং রসগুলো বিভিন্ন ধরনের বাজারে বা দোকানে বিক্রি করে। এমনকি অনেকে আবার এই খেজুর রস দিয়ে খেজুরের গুড় তৈরি করে যা খেতে আরো সুস্বাদু হয়ে থাকে। তবে শহরে এই চিরচেনা রূপগুলো খুব কম দেখা যায়।

আজকে আমরা এরকমই খেজুরের রসের উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো যা আপনাদের জন্য জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। তাহলে চলুন জেনে নেই খেজুর রসের উপকারিতা।

খেজুর রসের উপকারিতা

আমাদের গ্রাম বাংলার এবং শহরের ছেলে মেয়েদের খেজুর রসের কথা বললে কৈশোরের কথা মনে পড়ে যায়। কেননা সেই সময়টাতে খেজুর রস অনেক বেশি পরিমাণে খাওয়ার কারণে অনেকেই মাদকাসক্ত এর মত আচরণ করেছে যা অত্যন্ত হাস্যকর ছিল। কেননা খেজুর রস বেশি খেলে মাথা ঘোরা সহ মাদকাসক্তের বিভিন্ন ধরনের প্রভাব গুলো দেখা যায়।

তবে এটি কিন্তু খারাপ দিক নয়। আপনি চাইলেই অনেক বেশি পরিমাণে খেজুর রস খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার মাদকাসক্ত হলেও কোন খারাপ দিক প্রকাশ পাবে না। কেননা খেজুরের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এনার্জি, হিমোগ্লোবিন সহ আরো অন্যান্য উপাদান।

যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এর বাইরেও শীতকালীন সময়ে নিয়মিত খেজুর রস খেলে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যায়, শরীরের ক্লান্তি থাকলে তাও দূর হতে সহায়তা করে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এমনকি হজম শক্তি বাড়াতেও খেজুরের রস অত্যন্ত উপকারী।

খেজুরের রস কখন খেতে হয়

শীতকালীন সময়ে খেজুরের রস ছাড়া শীত যেন কোনভাবেই জমে না। গ্রামবাংলায় সকলেই কমবেশি খুব সকালে খেজুরের রস গাছীদের কাছ থেকে খেয়ে থাকে। কিন্তু শহরে এই ঘটনাটি বিরল।

তবে বর্তমান সময়ে ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জে চাইলেই আপনি গিয়ে খেজুরের রস খেতে পারেন। এজন্য আপনাকে খুব সকালে রওনা দিতে হবে। আমরা আজকে আপনাদেরকে জানাবো কখন খেজুরের রস খেতে হয় আর এই সঠিক সময়ে খেজুর রস খেলেই আপনি খেজুর রসের উপকারিতা গুলো পাবেন।

১/ আপনি যদি খেজুরের রস খাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন তাহলে অবশ্যই খুব ভোরবেলা খেজুরের রস খাবেন। তাহলে আপনি খেজুরের রসের পর্যাপ্ত উপকারিতা পাবেন।

২/ সকালে বা দিনের সময়ে খেজুরের রস খাওয়া ভালো নয়। কেননা তখন খেজুরের রসের মধ্যে গাজন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এমনকি রসের মধ্যে অম্লত্বের পরিমাণ বাড়তে থাকে।

৩/ সময়মতো খেজুরের রস না খেলে পেটের মধ্যে পেট ব্যথা এবং বমি বমি ভাব হওয়ার মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

৪/ আর এজন্য খুব ভোরবেলা খেজুরের রস খাওয়াই উত্তম। তবে এক্ষেত্রে গাছিদেরকে মনে রাখতে হবে কোনভাবেই যেন খেজুরের কলসে কোনো পাখি বা বাদুর মুখ না দেয়। এই বিষয়ে সকলেরই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

খেজুর রসের দারা তৈরিকৃত খাবার

 শীতে খেজুরের রসের উপকারিতা- খেজুরের রসকে প্রাকৃতিক ড্রিংকস বলা হয়। এছাড়া খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরি করা হয় যা অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর হয়ে থাকে। আর শীতকালীন সময়ে আমরা সকলেই জানি বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি গ্রামবাংলায় এবং শহরের বিভিন্ন বাসাগুলোতে তৈরি করা হয়।

আর এসব পিঠাপুলি খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি করলে তা আরো সুস্বাদু হয়ে ওঠে। আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাবো খেজুরের রস দিয়ে তৈরি শীতকালীন কিছু খাবার সম্পর্কে যা আপনি খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি করতে পারেন।

  • চালকুমড়ার মিঠাই
  • রস চিতই
  • রসের পায়েস
  • টইটম্বুর রসে চুটকি
  • বিবিখানা পিঠা
  • খেজুরের রসের ক্ষীর পায়েস

লেখকের শেষ কথা

বন্ধুরা আমরা ইতোমধ্যেই খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে গেছি। আসুন আমরা শীতকালে সকলেই খেজুরের রস খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শারীরিক দুর্বলতা সহ অন্যান্য রোগগুলো থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করি। কেননা আমরা ইতিমধ্যেই জেনে গেছি যে, খেজুরের রসে রয়েছে হিমোগ্লোবিন এবং এনার্জি।

বন্ধুরা আজকের এই পোস্টটি যদি বিন্দুমাত্র ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করুন এবং তাদেরকে খেজুরের রসের উপকারিতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।