উৎসব

তারাবির নামাজ কত রাকাত ও তারাবির নামাজ কিভাবে পরতে হয়

তারাবির নামাজ পরার নিয়ম

তারাবির নামাজ পরার নিয়ম: আল্লাহতালা তার মুমিন বান্দাদের জন্য প্রতিবছরই একটি মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে তাকে স্মরণ করার উত্তম উপায় হিসেবে দেখে থাকেন। সারা বছর মুসলমানরা নামাজের মাধ্যমে আল্লাহতালার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

কিন্তু একটি মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করা এক অনন্য সওয়াবের কাজ। আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে ব্যক্তি আল্লাহকে রাজি ও সন্তুষ্টি করার উদ্দেশ্যে একটি মাস সিয়াম সাধনা করলো সে আল্লাহর নিকট্য লাভ করলো এবং হাশরের ময়দানে আল্লাহতালা সেই বান্দার জন্য একটি বিশেষ দরজা খুলে দিবে।

যেই বান্দা আল্লাহকে খুশি করার জন্য একটি মাস রোজা রেখেছিল। আর সেই দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদার ব্যক্তিরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানবো এক মাস রোজা রাখার পাশাপাশি কিভাবে তারাবির নামাজ আদায় করতে হয় সেই সম্পর্কে।

কারণ রোজা রাখলে একজন মুমিন বান্দাকে অবশ্যই তারাবির নামাজ আদায় করতে হবে। আর তারাবি অর্থ হলো বিশ্রাম নেওয়া। অর্থাৎ দুই রাকাত অথবা চার রাকাত পর পর মুমিন ব্যক্তিরা খানিক বিশ্রাম নিয়ে পুনরায় আল্লাহকে রাজি সন্তুষ্টি করার জন্য ইবাদত করবে।

তারাবির নামাজ কত রাকাত

রমজান মাস আসলেই একটি কমন প্রশ্ন সকল মুসলমানদের মনে বাসা বাধে, আর তা হলো তারাবির নামাজ কত রাকাত। মুসলিম বিশ্বে মুসলমানরা দুই ভাগে বিভক্ত একটি হানিফী অপরটি হলো মোহাম্মদী ।

হানিফী সকল মুসলিম মুমিন ব্যক্তিরা মনে করেন তারাবির নামাজ ২০ রাকাত। আর মহানবীর আমলে তারাবির নামাজ ২০ রাকাত পড়া হতো এমন অনেক দলিল হানিফী ওলামায়ে কেরামগণ দিয়ে থাকে। এছাড়াও অনেক সাহাবী বলেছেন নবী সাঃ এর আমলে তারাবির নামাজ ২০ রাকাত করে পড়া হতো।

আর এই ২০ রাকাতের মধ্যে ২ রাকাত পর পর বৈঠক দেওয়া হত। যেখানে দশটি সালাম দিয়ে তারাবির নামাজ শেষ করতে হয়। তবে মোহাম্মদিরা বেশিরভাগই আট রাকাতের বেশি তারাবির নামাজ আদায় করেনা।

তারাবির নামাজের নিয়ত

তারাবির নামাজ এশার নামাজের পর পড়তে হয়। এক্ষেত্রে বেতের নামাজের আগে তারাবির নামাজ শেষ করতে হয়। নিচে রমজান মাসের তারাবির নামাজের নিয়ত দেওয়া হল।

নিয়ত نويت أن أصلي لله تعالى ركعتي صلوة التراويح سنة رسول الله متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر

তারাবির নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ

নাওইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকয়াতাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা কা‌বাতিস শারীফাহ।

বাংলা নিয়ত

আপনি যদি তারাবির নামাজের আরবি নিয়ত করতে না পারেন তাহলে বাংলা নিয়ত করলেই হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে বলতে হবে, যদি আপনি ইমামের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন তাহলে বাংলা নিয়তি হবে, আমি তারাবির নামাজের দুই রাকাত সুন্নত এই ইমামের পিছনে আল্লাহর উদ্দেশ্যে আদায় করিতেছি আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধতে হবে।

তারাবির নামাজের দোয়া

আমরা যে চার রাকাত পর পর সালাম ফিরিয়ে তারাবির নামাজে বৈঠক দিয়ে থাকি। এ বৈঠকে নিম্নের দোয়াটি পড়তে হয়।

দোয়া,

سبحان ذي الملك والملاكوت سبحان العزت والعظمت الهيبة والقدرة و الكبرياء والجبروت سبحان الملك القدوس الحي الذي لا ينام ولا يموت سبوح قدوس ربنا ورب الملائكه والروح

তারাবির নামাজের দোয়া বাংলা উচ্চারণ তারাবির নামাজ পরার নিয়ম

সুবহানা যিল মুলকি, ওয়াল মালাকুতি। সুবহানাল ইজ্জত ওয়াল আজমাতি ওয়াল হাই বাতি, ওয়াল কুদরতি, ওয়াল কিবরিয়াই, ওয়াল জাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল কুদ্দুসিল হাইয়িল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু, ছুব্বুহুন কুদ্দুসুন রব্বুনা, ওয়া রব্বুল মালাইকাতি ওয়াল রুহ।

তারাবির নামাজের ফজিলত

তারাবির নামাজ সম্পর্কে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহকে রাজি ও সন্তুষ্টি করার উদ্দেশ্যে রমজান মাসের রোজা রেখে, তারাবির নামাজ আদায় করে এবং লাইলাতুল কদরের রাত্রি জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করার চেষ্টা করে সেই ব্যক্তির পূর্বের সকল গুনাহ আল্লাহতালা মাফ করে দেন।

বন্ধুরা আমরা এতক্ষণ তারাবির নামাজ পড়ার নিয়ত ও তারাবির নামাজের ফজিলত সম্পর্কে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি পোস্টটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। আপনারা যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে আমরা আশা করব রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখার পাশাপাশি আপনি সকল ভাল কাজে লিপ্ত থাকবে ধন্যবাদ।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।