উৎসব

আমরা কি দিয়ে সুন্নতি ইফতার করব

সুন্নতি ইফতার কোনটি

সুন্নতি ইফতার কোনটি: মুসলিম জাহানের জন্য আল্লাহতালা প্রতিবছর একটি মাস রোজা মাধ্যমে তার মুমিন বান্দাদের পরীক্ষা করে থাকেন। আর আল্লাহতালা এসব দিক নির্দেশনা তার নবী রাসূলগণের মাধ্যমে প্রেরণ করেছেন।

বর্তমান সময়ে আমরা সকল মুসলিম মুমিন ব্যক্তিরা আল্লাহকে রাজি ও সন্তুষ্টি করার জন্য রোজা ও অন্যান্য ইবাদাত বন্দি করে থেকি। আর এসব ইবাদত বন্দেগীতে আমরা সব সময় নবী ও রাসূলগণদের স্মরণ করি। বিশেষ করে ইসলামের শেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকনির্দেশনা মত আমরা আল্লাহকে রাজি ও সন্তুষ্টি করার জন্য সকল কাজগুলো করার চেস্টা করি।

আর আল্লাহতালা বলেছেন তোমরা যখন তোমাদের নেতাকে স্মরণ করো তখন আমি ঐ সমস্ত কাজে অনেক বেশি সওয়াব দিয়ে থাকি। তাই আমরা নবীজির দেখানো পথে চলার পাশাপাশি তার কাজগুলোকে অনুসরণ করি। আর রমজান মাসে এই কাজটি অনেক বেশি হয়ে থাকে।

আমরা অনেকেই জানতে চাই আমাদের প্রিয় নবী রমজান মাসে কি দিয়ে ইফতার করতেন। কারণ ঐ সমস্ত উপকরণ দিয়ে ইফতার করলে সেই ইফতারকে সুন্নতি ইফতার বলা হয়। আর এতে করে আল্লাহতালা অনেক বেশি খুশি হয়ে অনেক বেশি সওয়াব দিয়ে থাকেন ।আজকে আমরা জানবো সুন্নতি ইফতারে কি কি থাকা দরকার সে সম্পর্কে।

সুন্নতি ইফতার কি

সবার প্রথমে আমাদের জানা দরকার সুন্নত বিষয়টা আসলে কি। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সকল কাজকে অনুসরণ করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাকে সুন্নত বলা হয়।

আর এর মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রিয় নবীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি। তাই প্রতিবছরের পাশাপাশি রমজান মাসে আমরা বেশি নবীজির কাজগুলোকে অনুসরণ করার চেষ্টা করি। কারণ এই সময়টিতে আল্লাহতালা অনেক বেশি সওয়াব ও পাপী ব্যক্তিদের ক্ষমা করে থাকেন। আর আমাদের প্রিয় নবী রমজান মাসে যে খাদ্য দিয়ে ইফতার করতেন সে খাদ্য দিয়ে ইফতার করার বিষয়কে সুন্নতি ইফতার বলা হয়।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কি দিয়ে ইফতার করতেন

সুন্নতি ইফতার কোনটি আমাদের প্রিয় নবী যদিও সমগ্র বিশ্বের নেতা ছিলেন, এরপরও তিনি যত সামান্য উপকরণ দিয়ে ইফতার করতেন। তিনি সবসময় ইফতারের আগে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন এবং সর্বদা একটি বা দুটি খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি খেজুর না থাকতো তাহলে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ইফতার শুরু করতেন।

এছাড়াও কোন কোন হাদিসে এসেছে নবীজি দুধের সঙ্গে পানি মিশিয়ে ইফতার করেছেন। আমরা ইফতার শুরু করার আগে অবশ্যই খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করার চেষ্টা করব। সেটি সম্ভব না হলে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ইফতার করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।

এবার চলুন রমজান মাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক

আমরা সকলেই সারাদিন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য রোজা ও ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকি। আর এসব এবাদত কবুল করার একটি সময় হল ইফতারের আগের মুহূর্ত। চলুন জেনে নেই ইফতারের আগের মুহূর্তে আমাদের করণীয় সম্পর্কে।

ইফতারের সময় শুকরিয়া আদায় করা

প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইফতার করার পরপরই শুকরিয়া আদায় করতেন। এক্ষেত্রে তিনি যে খাবার দিয়ে ইফতার করুক না কেন। সব সময় তিনি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতেন। ঠিক এই বিষয়টি আমাদের অনুসরণ করা উচিত।

ইফতারের সুন্নত

ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা সুন্নত। এক্ষেত্রে অযথা সময় নষ্ট করা অপছন্দনীয়।

ইফতার করার আগ মুহূর্তে করণীয়

ইফতার করার সময় হলে ইফতার নিয়ে বসে তাওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ, জিকির, তাসবিহ তাহলীল ও দোয়া দরুদ পড়া উত্তম। এ সময় বেশি বেশি করে   ‘আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম এই দোয়াটি করা অনেক বেশি উত্তম।

আজান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা

মাগরিবের আযান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার শুরু করা। এক্ষেত্রে আজান শেষ হওয়ার অপেক্ষা করা ঠিক নয়। আল্লাহ বলেন আমি সব সময় আমার বান্দাদের জন্য সকল বিষয়কে সহজ করে দিয়েছি।

ইফতারে বেশি সময় না দেওয়া সুন্নতি ইফতার কোনটি

আযান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার শুরু করা যেমন সুন্নত। তেমনি ইফতারের বেশি সময় না দেওয়া সুন্নত। অর্থাৎ আযান দেওয়ার পরপরই যেন ইফতার শেষ হয়ে যায় এবং জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। এক হাদীসে রয়েছে মহানবী সাঃ জোৎসামান্য ইফতার করেই মসজিদের পথে রওনা দিতেন যেন নামাজ কাজা না হয়।

ইফতার নষ্ট না করা

একটি বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। আমরা যে খাবারগুলো নিয়ে ইফতার করি সেগুলো যেন কোনোভাবেই অপচয় না হয়। এতে করে সুন্নত পালন হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেছেন তোমরা খাও ও পান কর কিন্তু অপচয় করোনা।

মুমিন ব্যক্তিদের জন্য উপরের দিকনির্দেশনা গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এগুলো সব আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর দিকনির্দেশনা। আমরা যদি রমজান মাসে আমাদের প্রিয় নবীকে অনুসরণ করতে চাই তাহলে অবশ্যই উপর দিক নির্দেশনাগুলো মেনে চলব ইনশাল্লাহ।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।