শিক্ষা

পাগলা মসজিদের কোটি কোটি টাকা দিয়ে কি করা হয়

পাগলা মসজিদে মোট কত টাকা রয়েছে

পাগলা মসজিদে মোট কত টাকা রয়েছে! পাগলা মসজিদের সিন্দুক গুলো খুললেই চক্ষু চরক গাছ হওয়ার উপক্রম। বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহৎ ধর্মী প্রতিষ্ঠান এই পাগলা মসজিদ। তাই এই মসজিদকে ঘিরে রয়েছে নানান গুঞ্জন ও আলোচনা। প্রতি তিন মাস পর পর খোলা হয় পাগলা মসজিদে রাখা আটটি সিন্দুক।

এসব সিন্দুকে মিলে বস্তা বস্তা টাকা। এসব টাকা গণনা শেষে কখনো তিন কোটি আবার কখনো চার কোটি এমন কি কখনো বা ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে। কি করা হয় এই কোটি কোটি টাকা দিয়ে। এমন প্রশ্ন সবার মনে। বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের যথাযথ ব্যবহার সুষ্ঠু তদারকের জন্য রয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ৩১ সদস্যের একটি কমিটি।

পাগলা মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের কার্যালয় সহ সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে সিন্দুক থেকে পাওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মানব কল্যাণের জন্য ব্যয় করা হয়। এছাড়া জেলার বিভিন্ন মসজিদ এবং মাদ্রাসার উন্নয়নেও ব্যয় করা হয়ে থাকে।

প্রতিবছর পাগলা মসজিদ থেকে অসহায়দের আর্থিক অনুদান প্রদান

পাগলা মসজিদের টাকায় মসজিদ কমপ্লেক্সে প্রতিষ্ঠিত নুরুল কুরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১৩০ জন অসহায় এতিম শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। প্রতিমাসে এক থেকে দেড় লাখ টাকা শুধু শিক্ষার্থীদের খাবারের পেছনে ব্যয় করা হয়। শিক্ষার্থীদের যাবতীয় ভরণ পোষণের ব্যয়ও বহন করা হয় এই দানের অর্থ থেকেই।

প্রতিবছর এই মসজিদের অর্থায়নে নতুন জামা কাপড় দেওয়া হয় তাদের। ২০২১ অর্থবছরে ১২৪ জন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসার জন্য এবং দরিদ্র ও দুস্থ মেধাবী ছাত্রদের পড়ার খরচ বাবদ ১৭ লাখ ৬৩ হাজার  টাকা পাগলা মসজিদ থেকে অনুদান দেওয়া হয়।

এছাড়া করোনা কালীন ছহীদ শহীদ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দেওয়া হয় ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর প্রতিমাসে পাগলা মসজিদের স্টাফ খরচ বাবদ ব্যয় করা হয় ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

এছাড়া পাগলা মসজিদে একসঙ্গে ৩০ হাজার মুসল্লী নামাজ পড়ার জন্য একটি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। যেখানে আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা।

পাগলা মসজিদে সর্বোচ্চ দানকৃত টাকার পরিমান

২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সিন্ধুক গুলো খুলে পাওয়া গেছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা। এরপর ১৯ জুন পাওয়া যায় ২ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৪৯৩ টাকা। একই বছরের ৬ নভেম্বর পাওয়া যায় রেকর্ড পরিমাণ ৩ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার ৫৮৫ টাকা। ২০২২ সালের ১৩ই মার্চ পাওয়া গিয়েছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা।

৩ জুলাই পাওয়া গিয়েছিল তিন কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা। একই বছরের দুই অক্টোবর পাওয়া গিয়েছিল তিন কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা। ২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারি মাসে পাওয়া গিয়েছিল ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। ৬ মে পাওয়া যায় ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ৬৮৯ টাকা। সব শেষ ১৯ আগস্ট অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে পাওয়া গিয়েছে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৩২৫ টাকা।

বন্ধুরা আমরা হয়তো অনেকেই এতদিন পাগলা মসজিদের এত বিপুল পরিমাণ অর্থ কিভাবে বন্টন করা হয় সে বিষয়ে জানতাম না বা অনেকেই ভ্রান্ত ধারণা রেখেছিল যে এই টাকাগুলো হয়তো এখানকার কমিটির সদস্যরা আত্মসাৎ করে থাকে।

কিন্তু আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে স্পষ্ট ভাবে জানতে পারলাম পাগলা মসজিদে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ কোন কোন খাতে ব্যয় করা হয়। আশা করি পোস্টটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। পাগলা মসজিদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের পরবর্তী পোস্টগুলো ফলো করুন এবং সঙ্গেই থাকুন ধন্যবাদ।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।