ব্যবসায় উদ্যোগ

বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম একজোড়া ৫ লাখ টাকা

বিশ্বের সবচেয়ে দামি আমের নাম তাইয়ানো তামাগো বাংলা ভাষায় যার অর্থ সূর্যের ডিম। বিশ্বব্যাপী এই আম রেট ম্যাংগো নামেও পরিচিত। জাপানের মিয়াজাকিতে উৎপন্ন হওয়ায় অনেকে একে মিয়াজাকি ম্যাংগো নামেও চিনে। বন্ধুরা আজকে আমরা জানবো পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম মিয়াজাকি ম্যাংগো সম্পর্কে। তাহলে চলুন কথা না বারিয়ে শুরু করি আজকের পোস্টটি।

বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম

জাপানের কিউসি দ্বিপের মিয়াজাকিতে উৎপন্ন হয় তাইয়ানো তামাগো আম। আর টক টককে লাল রঙ্গের কারনে বিশেষ জাতের এই আমের নাম রাখা হয়েছে সূর্যের ডিম। এটি শুধু পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আমেই নয় সূর্যের ডিম হিসেবে খ্যাত এই আম সবচেয়ে দুর্লভ ফল হিসেবেও পরিচিত। এক একটি আমের ওজন গড়ে ৭০০ গ্রামের মত এবং একটি আমের দাম ৬ -১০ হাজার টাকা প্রযন্ত হয়ে থেকে । শুধু তাই নয় প্রতি বছর মিয়াজাকি আমের নিলামে সবচেয়ে সেরা আমটি লাখ টাকারও বেশি দামে বিক্রি হয়। অত্যন্ত যত্ন সহকারে শৈল্পিক পরিচর্যায় এই আম উৎপাদন করা হয় বলে এই আমের এত দাম।

মিয়াজাকির প্রাকৃতিক পরিবেশ আম চাষের জন্য উপযোগী নয়। সে কারণে গ্রীনহাউজ পদ্ধতিতে এই অঞ্চলে আম চাষ করা হয়। গ্রীনহাউসের ভিতরে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় বেড়ে ওঠে সূর্যের ডিম। রেড ম্যাংগো গাছ আকৃতিতে বেশ ছোট। দশ পনের বছর বয়সী গাছও সর্বোচ্চ ৬ ফুটের বেশি লম্বা হয় না। প্রাপ্তবয়স্ক একটি কাজ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টি আম উৎপাদন করা হয়। প্রাকৃতিক ভাবে বড় এবং সেরা আকৃতির আম পাওয়ার জন্য চাষিরা প্রায় ৮০ শতাংশ আমের মুকুল ছাটাই করে ফেলেন। এরপর প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত আমগুলোকে ক্লিপের সাহায্যে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

তিন মাসের মধ্যে আমগুলো বড় হয়ে ওঠে। এরপর মূল্যবান সম্পদের মত যত্ন সহকারে আমগুলো গাছ থেকে সংগ্রহ করে বাজার জাত করা হয়।

প্রতি বছর এপ্রিলে মিয়াজাকির পাইকারি বাজারে সূর্যডিম আমের নিলাম হয়। স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা আমের আকার-আকৃতি, সাদ ও মিষ্টতা ইত্যাদি দেখে সেরা সূর্যের ডিম নির্বাচন করেন। প্রতি বছর মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ টি আম উৎকৃষ্ট আমের খেতাব পাওয়ার গৌরব অর্জন করে। সবচেয়ে সেরা একজোড়া আমের দাম ৫ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য ৪ লক্ষ টাকা। মিয়াজাকি আমের এই আকাশচুম্বী দামের কারণ যতটা না এর সাদ তার চেয়ে অনেক বেশী এর দুষ্প্রাপ্যতা।

সমগ্র জাপান থেকে অনেকে আসে এই বিশেষ আমের নিলাম উপভোগ করতে। উপস্থিত দর্শনার্থীদের জন্য বিনামূল্যে আমের  কিছু নমুনা চেখে দেখারও ব্যবস্থা থাকে।এই আমের ক্রেতা হল জাপানের বড় বড় ব্যবসায়ীরা। তারা পরবর্তীতে এই আমগুলো তাদের সুপারশপে বেশি দামে বিক্রি করে থাকে।

উপহার আদান-প্রদান জাপানের সংস্কৃতিতে একটি বহুল চর্চিত বিষয়। কিছু ক্ষেত্রে উপহার না দেওয়াটা অসৌজন্যমূলক আচরণ বলে বিবেচিত হয়। জাপানি কাউকে ফল উপহার দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মান বলে বিবেচিত হয়। ফলের মধ্যে আবার সূর্যের ডিম উপহার দেওয়াটা অধিক মর্যাদার। তাই রেট ম্যাংগো মানুষ যতটা না নিজে খাওয়ার জন্য কিনে তার চেয়ে অনেক বেশি উপহার হিসেবে বিক্রি হয়। মজার ব্যাপার হলো বর্তমান বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল সহ বেশ কিছু এলাকায় এই মিয়াজাকি আমের চাষ হচ্ছে।

আমের অতুলনীয় স্বাদ ও গন্ধের সাথে অন্য কোন ফলের তুলনা চলে না। সেই সাথে আমে রয়েছে অসাধারণ সব পুষ্টি উপাদান। সেজন্যই আম কে বলা হয় ফলের রাজা। আমে এত এত ভিটামিন আছে যে একটি আম খেলেই শরীরে প্রতিদিনের পুষ্টি চাহিদা মিটানো যায়।

বন্ধুরা আপনারা সকলেই জানলেন পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম মিয়াজাকি সম্পর্কে। আমরা হয়তো অনেকেই জানতাম না যে, মিয়াজাকি এক জোড়া আমের দাম বাংলাদেশি টাকায় ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। মিয়াজাকির মত এরকম বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও সুস্বাদু ফল সম্পর্কে জানতে আমাদের পেজের সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।