উৎসব

কোরবানি ঈদের দিনের আমল ও সকল ফজিলত

কোরবানি ঈদের আমল! কোরবানি ঈদে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পশু কোরবানি করতে হয়।  এবং এর পাশাপাশি এই ঈদে কিছু আমল ও ফজিলত রয়েছে যেগুলো প্রত্যেকটি মুসলমানের জন্য পালন করা আবশ্যক।

কোরবানি ঈদের আমল

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এই সকল আমল পালন করতেন। বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করব ঈদুল আযহার কিছু আমল ও ফজিলত নিয়ে আশা করি পোস্টটি স্কিপ না করে পুরোটি পড়বেন।

ঈদুল আযহা কোরবানির ফজিলত

কোরবানি হলো একটি ওয়াজিব আমল। এটি অন্যান্য আমলের মতই স্বতন্ত্র। পূর্বের অনেক নবী ও রাসূল কুরবানী দিয়েছেন কিন্তু হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম ও তার পুত্র হযরত ইসমাইল আঃ এর ঘটনার  পর থেকে প্রত্যেক মুসলিম উম্মার উপর এই আমলটি আল্লাহতালা ওয়াজিব করে দিয়েছেন।

যে সকল মুমিন ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ সম্পদ। অর্থাৎ সাড়ে ৭ তলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তলা রুপা অথবা এর সমপরিমাণ অর্থ এক বছর পারিবারিক খরচ করার পরও উচ্ছিষ্ট থাকে তবে ওই মুমিন মুসলমান ব্যক্তিকে অবশ্যই আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি দিতে হবে। প্রতিবছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করার পর কোরবানি করতে হয়।

কোরবানি ঈদের ফজিলত সম্পর্কে অনেক মুসলমানেরই তেমন কোনো ধারনা নেই। কিন্তু এই দিনটিকে আলেমদের মতে সর্বোত্তম দিন বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এমনকি এই দিনটি তাদের চোখে আরাফাতের দিনের চেয়েও উত্তম বলে তারা মনে করে।

আবু দাউদ বর্ণিত একটি হাদিসে রয়েছে যে, আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম দিন হলো কোরবানির দিন  অতঃপর স্থিতিশীলতার দিন। কোরবানির দিন হল জিলহজ মাসের ১০ তারিখ আর ১১ তারিখ হল স্থিতিশীলতার দিন। কেননা এই দিন হাজীরা স্থিরতার সাথে মক্কায় অবস্থান করে।

কোরবানি ঈদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল

কোরবানি ঈদে প্রত্যেক মুসলমানের উপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। যে সকল আমল করলে ক্ষতি হবে না। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এ সকল আমল করতেন। নিচে কোরবানি ঈদের আমল গুলো দেওয়া হবে।

১/ গোসল করা ও পবিত্রতা অর্জন

ঈদের দিন গোসল করা ও মিসওয়াক করা সুন্নত। এক হাদীসে এসেছে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ঈদুল আযহার দিন গোসল করতেন এবং মেসওয়াক করতেন।

২/ সুন্দর পোশাক পড়া

মুসলমানের দুটি ঈদ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযাহা। এদিনে সুন্দর ও উত্তম পোশাক পরা সুন্নত। এক হাদীসে এসেছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)ঈদের দিন ও জুমার দিনে এক বিশেষ ধরনের পোশাক পরতেন যা তিনি শুধুমাত্র এই উৎসবের দিনগুলোতেই পড়তেন।

৩/ ঈদের সালাত আদায়

ঈদের সালাত আদায় করা ওয়াজিব। তাই প্রতি ঈদে আমাদের প্রত্যেকের উচিত জমায়েত ভাবে নামাজ আদায় করা। আর বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে সকলে মিলে যেন উন্মুক্ত বা খোলা স্থানে নামাজ আদায় করে বা করতে পারে। কেননা উন্মুক্ত বা খোলা স্থানে নামাজ আদায় করা সুন্নত। নবীজির আমলে সকলের জমায়েত হয়ে উন্মুক্ত স্থানে নামাজ আদায় করতেন।

৪/ না খেয়ে ঈদগায়ে যাওয়া

ঈদুল আযহার দিন না খেয়ে নামাজ পড়া সুন্নত। কেননা এই দিনে মহানবী (সাঃ) না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন এবং নামাজ শেষ করে খেতেন। কিন্তু খেয়ে নামাজে গেলেও কোন সমস্যা নেই।

৫/ ঈদের দিনের তাকবির পাঠ করা

ঈদের দিনে একটি বিশেষ আমল হল তাকবির পাঠ করা। জিলহজ মাসের ৯ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত এ তাকবীর পাঠ করা সুন্নত। পুরুষরা জোরে জোরে তাকবীর পাঠ করবে এবং মহিলারা নীরবে।

৬/ ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া

কোন ধরনের অপারগতা না থাকলে ঈদগাহের পায়ে হেঁটে যাওয়া সুন্নত। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ঈদের দিন পায়ে হেঁটেই ঈদগাহে যেতেন।  আর যদি কোন অসুস্থ ব্যক্তি পায়ে হেঁটে যেতে না পারে তাহলে অন্য কোন বাহনে করে ঈদগাহে যেতে পারে এতে কোন অসুবিধা নেই।

৭/ ঈদগাহে যাওয়া আসার রাস্তা পরিবর্তন

ঈদের দিন ঈদগাহের মাঠে এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া এবং আসার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে আসা সুন্নত।  হাদীসে বলা হয়েছে মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ঈদের দিন ঈদগাহে যেতেন এক রাস্তা দিয়ে এবং আসতেন অন্য রাস্তা দিয়ে।

৮/ শুভেচ্ছা বিনিময়

ঈদের দিন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হল শুভেচ্ছা বিনিময়। এর মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজন পাড়া প্রতিবেশী সকলের খোঁজখবর নেওয়া হয়। নবী করিম (সাঃ) তিনিও  প্রতি ঈদের নামাজ শেষে নিকট আত্মীয় এবং দূরের আত্মীয়দের ও অজানা ব্যক্তিদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করতেন এবং অন্যের খোঁজ খবর নিতেন।

মহান আল্লাহতালা আমাদের সকলকে কুরবানী ঈদের ফজিলত বুঝে ঈদের দিন ও কুরবানীর দিন আমল করার তৌফিক দান করুক আমিন।

বন্ধুরা এই ছিল ঈদুল আযহার আমল ও ফজিলত সম্পর্কে আমাদের এই পোস্টটি। আশা করি পোস্টটি অনেক ভালো লেগেছে। ইসলাম সম্পর্কে আরো এরকম নিত্য নতুন বিষয় জানতে চাইলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন ধন্যবাদ।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।