ধূমপান ছাড়ার উপায়! ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর- এ কথা সবার জানা আছে । কিন্তু তারপরও এই ধূমপান মানুষ ছাড়তে পারতেছে না।ধূমপানের ফলে ক্যান্সার, হৃদরোগের আশঙ্কাসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এসব কথা জেনেও অনেকে ধূমপান ত্যাগ করতে ব্যর্থ হন। গবেষণায় বলা হয়,তীব্র মানসিক ইচ্ছা এবং জীবনযাপনের কিছুটা পরিবর্তন আপনাকে ধূমপান ত্যাগ করতে সাহায্য করবে। ধূমপান ছাড়ার ১৪ কৌশল নিয়ে আজকের এই পোস্ট। চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক,,,,
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব ধূমপায়ীদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে
এমন সমস্যায় উপযুক্ত সমাধান হলো ধূমপান ছেড়ে দেওয়া।যাঁরা ধূমপানে আসক্ত, তাঁদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, তার চেয়েও কঠিন হলো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা। তবে ধূমপায়ীরা যদি ধূমপান ছাড়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অটল থাকেন, তাহলে নিচের টিপসগুলো আপনার জন্য।
১. পরিকল্পনা তৈরি করুন: প্রথমত, ধূমপান ত্যাগের জন্য স্বচ্ছ পরিকল্পনা থাকা চাই। নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করে একটি নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করুন। মনে রাখবেন, এই তারিখ কোনোভাবেই আর পেছানো যাবে না। তারিখ বাছাইয়ের সময় এমনভাবে নিজেকে বোঝাবেন, যেন এটিই ধূমপান ছাড়ার উপায় জন্য শেষ তারিখ। ওই তারিখের পর ধূমপায়ী বন্ধুদের কোনো পার্টি থাকলেও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
২. তালিকা করুন: কেন ধূমপান ছাড়বেন, সেই তালিকা তৈরি করুন। অসংখ্য কারণ পাবেন ধূমপান ছাড়ার। চিন্তা করে নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে একটি শক্ত তালিকা তৈরি করুন।
তালিকায় আপনার স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি, পরোক্ষ ধূমপানের কারণে আপনার আশপাশের মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর ধূমপানের প্রভাব, আর্থিক অপচয় ইত্যাদি থাকা আবশ্যক। এরপর যখন ধূমপানের ইচ্ছা জাগবে, তখনই এসব কারণ ভাবতে শুরু করবেন। এতে আপনার ধূমপানের প্রতি আগ্রহ কমতে থাকবে।
৩. ইতিবাচক থাকুন: হয়তো এর আগেও আপনি ধূমপান ছাড়ার পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এবারের পরিকল্পনাও যে সেগুলোর মতো সফলতার মুখ দেখবে না, এমন ভাবা যাবে না। বরং আপনার এবারের প্রচেষ্টা সফল হবেই—এমন আত্মবিশ্বাস রাখুন। আগেরবারের ভুলগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেদিকে সাবধান থাকতে হবে।
৪. খাবারের ধরন পরিবর্তন: দুপুর কিংবা রাতের আহারের পর অনেকেই ধূমপান করতে ভালোবাসেন। আমেরিকান একটি গবেষণা বলছে, অনেকের কাছে মাংসজাতীয় খাবার খাওয়ার পর ধূমপান উপভোগ্য হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ফল কিংবা সবজিজাতীয় খাবারের পর ধূমপান কিছুটা স্বাদ হারায়।
তাই ধূমপান ছেড়ে দিতে চাইলে কিছুদিন মাংস এড়িয়ে খাবারের তালিকায় শাকসবজি ও ফলমূল রেখে দেখতে পারেন। আর খাওয়া শেষ করেই এমন স্থান বা কক্ষে চলে যান, যেখানে ধূমপানের সুযোগ নেই।
৫. বদলে ফেলুন পানীয়: গবেষকেরা বলছেন, অ্যাকোহলমিশ্রিত পানীয়, কোমলপানীয়, চা, কফি ইত্যাদি পানের সময় অনেকে মনে করেন যোগ্য সংগত সিগারেট। যা পানীয়র স্বাদ আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই এ ধরনের পানীয়র অভ্যাস প্রচুর ছেড়ে ফলের রস আর পানি পান করুন। এখন বাজার নানা রকম রসাল ফলে ভরপুর। সেসব ফলের জুস করে খেতে পারেন।
৬. ব্যস্ততা বাড়ান: দিনের কোন সময়গুলোতে আপনার ধূমপানের ইচ্ছা বেশি জাগে, সেটি শনাক্ত করুন। এরপর ওই সময়গুলোতে নিজেকে কোনো কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখুন। কোনো কাজ খুঁজে না পেলে হাঁটাহাঁটি করুন। ব্যায়াম করে বা পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আড্ডা দিয়েও নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন। ব্যস্ততা বাড়লে ধূমপানের কথা ভুলে থাকা সহজ হবে।
৭. অধূমপায়ী বন্ধু বাড়ান: ধূমপান ত্যাগের ক্ষেত্রে আপনার আশপাশের মানুষের ভূমিকা অপরিসীম। তাই যতটা সম্ভব ধূমপায়ী বন্ধুদের আড্ডা এড়িয়ে চলুন। অন্তত ধূমপান ছাড়ার পর প্রথম কয়েক দিন ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি আড্ডা থেকে বিরত থাকুন। একই সঙ্গে অধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।
৮. মুখ খালি রাখবেন না: মুখ খালি থাকলেই ধূমপানের আগ্রহ জাগবে। তাই ধূমপান বাদ দিতে চাইলে মুখ খালি রাখা যাবে না। এ সময় মুখে চকলেট, লজেন্স বা চুইংগাম রাখুন। পকেট থেকে সিগারেট, ম্যাচের বাক্স ফেলে দিয়ে লজেন্স কিংবা চুইংগাম রাখুন।
৯. বড়দের পরামর্শ নিন: ধূমপান ছেড়েছেন, এমন কাউকে চেনা থাকলে তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিন। তাঁর অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগান। ফেসবুকে একাধিক গ্রুপ রয়েছে, যেখানে ধূমপান ছাড়ার ব্যাপারে পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হয়। এসব গ্রুপে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ইতিবাচক ফল পাওয়া যেতে পারে।
১০. প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: কোনো কিছুতেই আসক্তি কমাতে না পারলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া নিয়ে সংকোচ বা হীনম্মন্যতায় ভোগার কোনো কারণ নেই। বরং আপনার এই পদক্ষেপের মাধ্যমেই আপনি নিজেকে ধূমপানের আসক্তি থেকে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসতে পারবেন।
আরো কিছু বিশেষ টিপ যেগুলো আপনি প্রতিদিন অনুসরণ করলে আপনি ধূমপান থেকে একেবারেই মুক্তি পেয়ে যাবেন, ১০০% গ্যারান্টি সাথে এ কথাটি বলা হচ্ছে।
পরিপূরক ওষুধ গ্রহণ:যদি আপনি মানসিক চাপ দূর করতে সিগারেটকে অবলম্বন ভেবে থাকেন তবে ভিন্ন চিন্তা করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিগারেটের বদলে মানসিক রোগের ওষুধ সেবন করতে পারেন। আশপাশের মানুষের সহায়তা নিন
আপনি ধূমপান বন্ধ করতে চাইছেন বিষয়টি বন্ধুবান্ধব,পরিবারের সদস্য এবং অফিসের সহকর্মীদের জানান
তাদের বলুন আপনাকে উৎসাহিত করতে। হয়তো কোনো পার্টিতে গিয়ে একটি সিগরেট ধরিয়েই ফেললেন তখন আশপাশের লোকজন নিষেধ করলে বিষয়টি কাজে লাগতে পারে। গবেষণায় বলা হয়, আমাদের বিভিন্ন বাজে অভ্যাস বর্জনে মিলিত আচরণগত চিকিৎসা বেশ কাজে আসে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন:অনেকে মানসিক চাপের ফলে ধূমপান করেন। তাই মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ দূর করতে নিয়মিত ম্যাসাজ করান, মনকে হালকা করতে গান শুনুন। যোগ ব্যয়ামও করতে পারেন। এগুলো আপনাকে চাপমুক্ত করে ধূমপান নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
এলকোহল বাদ দিন:ধূমপানের মতোই এলকোহলও আরেক ধরনের ক্ষতিকর বস্তু। তাই এলকোহল পান করাও বাদ দিতে হবে। এলকোহলের নেশা চাপলে দাঁত ব্রাশ করুন বা চুইঙ্গাম চাবান।
বাড়ি পরিষ্কার করুন:ঘর পরিষ্কার করুন। শুনতে বেশ মজার মনে হচ্ছে? চেষ্টা করে দেখুন, নিজের হাতে ঘর পরিষ্কার করুন দেখবেন সিগারেট পানের নেশা অতটা চাপছে না। কাপড় ধোয়া,কার্পেট পরিষ্কার ইত্যাদি ঘরের কাজ করুন। এরপর ঘরে সুন্দর গন্ধের এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করুন। এই গন্ধ আপনাকে সিগারেটের ধোঁয়ার কথা ভুলে যেতে সাহায্য করবে।
চেষ্টা করুন বারবার:ধূমপান ত্যাগের জন্য বারবার চেষ্টা করার কোনো বিকল্প নেই। নিজেকে সময় বেঁধে দিন কত সময়ের মধ্যে আপনি ধূমপান ত্যাগ করতে চান। একটু একটু করে সেই পথে আগান।
শারীরিক পরিশ্রম করুন
শারীরিক কাজ আপনাকে ধূমপান ত্যাগ করতে সাহায্য করবে। যখন ধূমপান করতে ইচ্ছা করবে হাঁটা শুরু করুন বা জগিং করতে পারেন। শারীরিক পরিশ্রমের ফলে আপনার ধূমপান করার ইচ্ছা চলে যেতে পারে। এর ফলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরিও দূর হবে।
বন্ধুরা আপনারা যদি এই পোস্টটি যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আপনি যদি সেটি সঠিকভাবে পালন করতে পারেন তাহলে ১০০% গ্যারানির সাথে আমরা বলতে পারি যে আপনি ধূমপান ছাড়ার উপায় পেতে পাবেন।