মহাশূন্যে ব্যবহৃত স্পেস স্যুটের দাম কত! বন্ধুরা মহাবিশ্ব নিয়ে আমাদের জানার আগ্রহ অনেক আগে থেকেই। মানুষের এই জানার আগ্রহ থেকেই মানুষ মহাকাশ নিয়ে গবেষণা শুরু করে এবং মহাকাশে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করে চলছে।
একবারও কি ভেবে দেখেছেন যখন এই মহাকাশে একজন নভোচারী পদার্পণ করে তখন টিকে থাকার জন্য তাদেরকে যেসব কর্মকাণ্ড করতে হয় সেই কাজকর্মগুলো কতটুকু জটিল এবং তারা যে পোশাকটি পড়ে থাকে এটির মূলত কাজ কি। কেনই বা তারা এই পোশাকটি সব সময় মহাশূন্যে পড়ে থাকে।
আজকে আমরা মহাশূন্যে নবচারীদের বিশেষ এক ধরনের পোশাক পরিধান করার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। যারা মহাশূন্য নিয়ে জানতে আগ্রহী তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। আশা করি পোস্টটি স্ক্রিপ্ট না করে পুরোটি পড়বেন।
১৯৬১ সালে ইউরি আলেখসি গ্যাবরিন এর মাধ্যমে মহাশূন্যে প্রথম মানুষের পদচারণা ঘটে। মহাকাশে যেতে নবচারীদের বিশেষ এক ধরনের পোশাক পড়তে হয়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে মহাকাশের চারদিকে ঘুরে বেড়াতে সাহায্য করে তাদের শরীরের বিশেষ এই পোশাকটি যা স্পেস স্যুট নামে পরিচিত। কখনো কি ভেবে দেখেছেন এই বিশেষ পোশাকটি কি দিয়ে তৈরি করা হয়।
ব্যবহারিক ভাষায় বিশেষ এই পোশাকটিকে স্পেস স্যুট নামে ডাকা হলেও এটি শুধুমাত্র একটি পোশাক বা একগুচ্ছ পোশাকের সমষ্টি নয় বরং এটি হচ্ছে স্বয়ং একটি মহাকাশ যান। যা কেবল একজনই ব্যবহার করতে পারবে।
স্পেস স্যুট মহাকাশচারীকে যেসব কাজে সাহায্য করে
স্পেস স্যুটের দাপ্তরিক নাম এক্সট্রা ট্রাবেকুলার মবিলিটি ইউনিট বা ই এম ইউ। স্পেস স্যুটটি একজন মহাকাশচারীকে মহাকাশে ভেসে থাকতে সাহায্য করে। এই আউটফিটের সাহায্যে ব্যক্তি শূন্যে ভেসে ভেসে স্টেশনের বাইরে সকল ধরনের সমস্যা সমাধানের কাজও করতে পারে।
চাঁদে অবতরণের ক্ষেত্রেও এই স্পেস স্যুটটির দরকার পড়ে। মহাকাশে পৃথিবীর মত কোন বায়ুমণ্ডল নেই। তাই সেখানে কোন অক্সিজেনের সরবরাহ নেই। এমন প্রতিকূল পরিবেশে অক্সিজেনের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ, নভোচারীর শরীরে বাহ্যিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, নভোচারীদের পারস্পরিক এবং পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা, মহাকাশের ভয়াবহ রেডিয়েশন প্রতিহত করা সহ নানান রকম কাজে সাহায্য করে তাদের শরীরে থাকা এই বিশেষ পোশাকটি।
স্পেস স্যুটের দাম
মহাশূন্যে ব্যবহৃত স্পেস স্যুটের দাম কত এত সব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নির্মিত স্পেস স্যুটির মূল্য স্বভাবতই খুব বেশি। গড়ে একটি স্পেস স্যুটের দাম প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার বা ১২০ কোটি টাকার বেশি। এই বিশেষ ধরনের পোশাকগুলো নির্মাণ করাও বেশ কঠিন এবং জটিল। এর মধ্যে কাপড়ের ১০ টি স্তর থাকে। যা প্রতিকূল আবহাওয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। নভোচারীদের এই স্পেস স্যুট তৈরিতে ব্যবহার করা হয় নাইলন, নিউপ্রিন, রাবারসহ বিভিন্ন পদার্থের কাপড়ের স্তর।
প্রযুক্তি উন্নত হওয়ার সাথে সাথে স্পেস স্যুটের ডিজাইনও অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এছাড়া নতুন ধরনের ম্যাট্রিয়াল এবং পদ্ধতি অবলম্বন করে আরামদায়ক এবং দক্ষ স্পেস স্যুট তৈরি করা হচ্ছে।
বন্ধুরা মহাশূন্যে আগে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা একক আধিপত্য বিস্তার করেছিল। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে মহাকাশ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে মহাকাশ নিয়ে ব্যাপক গবেষণার ফলে মানুষ প্রতিনিয়ত মহাকাশে সকল অজানা বিষয় জানতে সক্ষম হচ্ছে। আপনারা যদি মহাকাশ নিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য পেতে চান তাহলে আমাদের পরবর্তী পোস্টটি ফলো করে সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।